পিটার হাসের বিরুদ্ধে করা রাশিয়ার অভিযোগ পুরোই প্রপাগান্ডা: যুক্তরাষ্ট্র
ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বিরুদ্ধে রাশিয়ার করা অভিযোগকে 'ক্লাসিক রাশিয়ান প্রপাগান্ডা' বলে অভিহিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
বুধবার (৬ ডিসেম্বর) ওয়াশিংটন ডিসির ফরেন প্রেস সেন্টারে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের (এনএসসি) কৌশলগত যোগাযোগ সমন্বয়ক জন কিরবি বলেন, "মার্কিন নৌবাহিনীতে থাকাকালে এ ধরনের অভিযোগের বিষয়ে আমরা দুই সিলেবলের একটি শব্দ বলতাম। তবে এখন সেটা বলবো না। এটা ক্লাসিক রাশিয়ান প্রপাগান্ডা।"
তিনি আরও বলেন, "এ অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা। রাশিয়ানরা জানে যে এটা মিথ্যা।"
জন কিরবি আরও বলেন, বাংলাদেশের জনগণ যা চায়, তারাও সেটাই চান। আর তা হলো অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন।
"এই লক্ষ্যে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ও তার দল কাজ করে যাচ্ছিল। তারা একই লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশের সুশীল সমাজ, বিরোধী দল, সরকারসহ এ দেশের সমাজের সব স্তরের মানুষের সঙ্গে কাজ করে যাবেন। বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে যাতে সম্মান করা হয়, তা নিশ্চিতে তারা কঠোর পরিশ্রম করে যাবেন। তারা বাংলাদেশে এই কাজই করে যাচ্ছেন," বলেন তিনি।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা গত ২২ নভেম্বর মস্কোতে এক নিয়মিত ব্রিফিংয়ে দাবি করেন, ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বাংলাদেশে সরকারবিরোধী আন্দোলনের পরিকল্পনার বিষয়ে বিরোধী দলের এক নেতার সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
রুশ মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা অভিযোগ করেন, অক্টোবরের শেষদিকে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ও বিরোধী দলের উচ্চপর্যায়ের এক প্রতিনিধির মধ্যে বৈঠকের বিষয়ে তথ্য জনসমক্ষে এসেছে।
ওই বৈঠকে তাদের মধ্যে দেশে ব্যাপক সরকারবিরোধী বিক্ষোভ সংগঠিত করার পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
রাশিয়ার দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত সে বৈঠকে এই 'প্রতিশ্রুতি' দিয়েছিলেন যে কর্তৃপক্ষ 'শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে' অংশগ্রহণকারীদের বিরুদ্ধে বল প্রয়োগ করলে তাদেরকে তথ্যসহায়তা দেওয়া হবে।
ঢাকায় রাশিয়ান দূতাবাসের শেয়ার করা একটি ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করা হয়েছে, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া এবং আরও কয়েকটি দেশের দূতাবাসের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্র ওই আশ্বাস দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র তার আগের অবস্থান থেকে পিছু হটছে কিনা জানতে চাইলে কিরবি বলেন, তারা বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে বিশ্বাসী, এবং এই লক্ষ্যে কাজ করে যাবেন।
"বিদেশি নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্র কারও পক্ষ নেয় না। বাংলাদেশের নির্বাচনের ক্ষেত্রেও যুক্তরাষ্ট্রের এই নীতিতে বদল আসেনি। আমরা একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনকে সমর্থন করি," বলেন তিনি।
অন্যদিকে, বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে ওয়াশিংটন-মস্কোর পাল্টাপাল্টি বক্তব্যকে 'অনভিপ্রেত' হিসেবে উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন।
তিনি বলেন, "দেখুন, এটা নিয়ে আমি মন্তব্য করতে চাই না। বাংলাদেশে কী হচ্ছে-না হচ্ছে, সেটা নিয়ে আমরা বলতে পারি। তৃতীয় বা চতুর্থ দেশ, তারা তাদের মধ্যে কী আলাপ-আলোচনা করছে… বিষয়টা অনভিপ্রেত বলা যায়। আমরা আলোচনা করতে চাই না।"
২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে ইতোমধ্যেই বিপুল সংখ্যক মনোনয়ন ফর্ম জমা হয়েছে।