যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া অস্ত্র মামলায় হাইকোর্টে জামিন পেলেন বিতর্কিত ঠিকাদার জি কে শামীম
অস্ত্র আইনের মামলায় বিচারিক আদালতে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত বিতর্কিত ঠিকাদার এসএম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীমকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) বিচারপতি এস. এম. আবদুল মোবিন ও বিচারপতি মাহমুদ হোসেন তালুকদারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে জি কে শামীমের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ফিদা এম. কামাল। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সামিরা তারান্নুম রাবেয়া মিতি।
শুনানিতে ফিদা এম. কামাল বলেন, জি কে শামীমের অস্ত্রের লাইসেন্স ছিল, যা বিচারিক আদালত রায়েও উল্লেখ করেছেন। কিন্তু তারপরও তাকে সাজা দেওয়া হয়েছে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও ব্যবহার নীতিমালা, ২০১৬-এর ২৫ বিধির লঙ্ঘন দেখিয়ে। অস্ত্র আইন, ১৮৭৮-এর ১৯ (ই) ধারা মোতাবেক যা সম্পূর্ণ অবৈধ। কেননা নীতিমালার লঙ্ঘনের জন্য অপরাধ সংঘটিত হয় না, তথা সাজা দেওয়া যায় না।
পরে শুনানি শেষে তাকে জামিন দেন আদালত। আলোচিত এ ঠিকাদার বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর ঢাকার ৪ নম্বর বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক শেখ ছামিদুল ইসলাম জি কে শামীম এবং তার সাত দেহরক্ষীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দিয়েছিলেন।
২০১৯ সালে ঢাকায় ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু করে র্যাব। ঐ অভিযানে জি কে শামীমসহ যুবলীগের শীর্ষ কয়েকজন নেতা ক্যাসিনোকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হন।
সে বছরের ২০ সেপ্টেম্বর রাজধানীর নিকেতনের অফিস থেকে সাত দেহরক্ষী, বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা, এফডিআর ও স্বর্ণালঙ্কারসহ গ্রেপ্তার করা হয় যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির তৎকালীন সমবায় বিষয়ক সম্পাদক জি কে শামীমকে।
তার বিরুদ্ধে অস্ত্র, অর্থপাচার ও মাদক- তিনটি মামলা দায়ের হয়। পরে ওই বছরের ২৭ অক্টোবর অস্ত্র মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে র্যাব।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, জি কে শামীম একজন চিহ্নিত 'চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ, অবৈধ মাদক এবং জুয়ার ব্যবসায়ী' হিসেবে পরিচিত। তার অস্ত্রের লাইসেন্স থাকলেও তিনি শর্ত ভঙ্গ করে তা অবৈধ কাজে ব্যবহার করে আসছিলেন।
তার দেহরক্ষীদের উচ্চ বেতনভোগী 'দুষ্কর্মের সহযোগী' হিসেবে বর্ণনা করে অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, 'তারা অস্ত্রের লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করে প্রকাশ্যে অস্ত্রশস্ত্র বহন ও প্রদর্শন করেছেন। এর মাধ্যমে জনমনে ভীতি সৃষ্টি করে বিভিন্ন বড় বড় টেন্ডারবাজি, মাদক ব্যবসাসহ স্থানীয় বাস টার্মিনাল ও গরুর হাট-বাজারে চাঁদাবাজি করে আসছিলেন।'