ঋণখেলাপির মামলায় নূরজাহান গ্রুপের এমডি রতন গ্রেপ্তার
প্রায় ২ হাজার ৬০০ কোটি টাকার ঋণখেলাপি ও চট্টগ্রামভিত্তিক নূরজাহান গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) জহির আহমেদ রতনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) ঢাকার একটি বাসা থেকে চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানা পুলিশের একটি টিম তাকে গ্রেপ্তার করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতোয়ালী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম ওবায়েদুল হক বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকার একটি বাসা থেকে রতনকে গ্রেপ্তার করা হয়। 'তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে,' বলেন তিনি।
অর্থঋণ আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম টিবিএসকে জানান, নূরজাহান গ্রুপের কর্ণধার রতনকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি তারাও জেনেছেন।
'তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতে খেলাপি মামলা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন আদালতে এনআই অ্যাক্ট মামলাসহ কমপক্ষে ৩০টি মামলা চলমান রয়েছে। এর মধ্যে কমপক্ষে ২১টি মামলায় তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্টসহ দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে আদালতের,' রেজাউল বলেন।
২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর একটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর থেকে পলাতক ছিলেন জহির আহমদ রতন।
পরবর্তীতে ওই একই মাসে রতনকে পাসপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলে তা-ও প্রতিপালন করেননি তিনি। ২৬৮ কোটি টাকা পাওনার বিপরীতে ২০২০ সালে সাউথ ইস্ট ব্যাংকের দায়ের করা মামলায় এসব আদেশ দেন আদালত।
এক সময়ের চট্টগ্রামের ভোগপণ্যের বনেদি ব্যবসায়ীদের মধ্যে নূরজাহান গ্রুপ অন্যতম। ভোগ্যপণ্য ব্যবসায় বড় অঙ্কের লোকসান, ঋণের টাকায় জমি কেনা ও কর্ণধারদের ভোগবিলাসের কারণে গ্রুপটির কাছে বিভিন্ন ব্যাংকের বড় অঙ্কের টাকা আটকে যায়।
মামলার ফার্স্ট ইনফরমেশন রিপোর্টের (এফআইআর) অনুসারে, এ পর্যন্ত গ্রুপটির কাছে বিভিন্ন ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।
নূরজাহান গ্রুপের তিনটি অঙ্গপ্রতিষ্ঠানের কাছে অগ্রণী ব্যাংকের ৯৩৬ কোটি টাকা, রূপালী ব্যাংকের ৫৪৪ কোটি টাকা, ন্যাশনাল ব্যাংকের ৫০০ কোটি টাকা, জনতা ব্যাংকের ৩২৬ কোটি টাকা, সোনালী ব্যাংকের ১০৬ কোটি টাকা ছাড়াও বিভিন্ন ব্যাংকের বড় অঙ্কের পাওনা রয়েছে।
জানা যায়, মাররিন ভেজিটেবল অয়েলস লিমিটেড, নূরজাহান সুপার অয়েল লিমিটেড, জাসমির ভেজিটেবল অয়েল লিমিটেডসহ গ্রুপটির কমপক্ষে ২০টি অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ছিল। কিন্তু ব্যবসায়িক লোকসানে পড়ে বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে খেলাপি হয়ে গত পাঁচ-সাত বছরে গ্রুপটির বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে গ্রুপটির পরিচালক ও রতনের ভাই টিপু সুলতানকে রাজধানীর গুলশান থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম কারাগারে রয়েছে।