অ্যামনেস্টি, টিআইবি, সুজন সরকারের প্রতি শত্রুতাপূর্ণ: ড. ইউনূসের রায়ের প্রতিক্রিয়ায় কাদের
শ্রম আইন লঙ্ঘন মামলায় গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাজা নিয়ে দেওয়া আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের বিবৃতির সমালোচনা করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, 'অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, টিআইবি ও সুজন একই সূত্রে গাঁথা। এই সরকারের প্রতি তাদের মনোভাব শত্রুতাপূর্ণ।'
আজ বুধবার (৩ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগের সভাপতির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'আমরা জানি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালে কর্মরত আছে তারেক রহমানের আত্মীয় তারীন খান, যিনি আগে ডেইলি স্টারে কাজ করেছেন। এখন তাদের মন্তব্য কেমন হবে সেটা অনুমান করা যায়। এই সরকারের প্রতি তাদের একটা বৈরী মনোভাব রয়েছে। বাংলাদেশের টিআইবি, সুজনের ভূমিকাও একই সূত্রে গাঁথা।'
শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের করা মামলায় গত সোমবার (১ জানুয়ারি) গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. ইউনূসসহ চারজনকে ছয় মাস করে কারাদণ্ড দেন ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালত। একইসঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
সাজার পরদিন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বিবৃতিতে দিয়ে বলেছে, 'নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. ইউনূস ও তার সহকর্মীদের দোষী সাব্যস্ত করা বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির অবরুদ্ধ দশার প্রতীক। বাংলাদেশে কর্তৃপক্ষ স্বাধীনতাকে খর্ব করেছে, সমালোচকদের দমিয়েছে।'
ওবায়দুল কাদের বলেন, 'গাজায় ইসরায়েল গণহত্যা চালাচ্ছে। আমরা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের কাছে জানতে চাই, আমাদের দেশে শ্রমিকদের অধিকার বিষয়ে মামলার যে রায় স্বাধীন আদালত দিয়েছেন, সেটা নিয়ে এত মাথাব্যথা, গাজায় গণহত্যা নিয়ে তাদের কী ভূমিকা?'
তিনি বলেন, 'গাজায় ৯৪ জন সাংবাদিক তাদের প্রাণ হারিয়েছে। অ্যামনেস্টি কি এ ব্যাপারে কিছু বলেছে? এই একজন ব্যক্তির জন্য শ্রমিক অধিকারের রায়কে তারা কটাক্ষ করছে। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তো একটা কথাও বলেনি।'
বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলন প্রসঙ্গে সেতুমন্ত্রী বলেন, 'বিএনপি-জামায়াত আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে লিফলেট বিতরণ করছে। তার মানে এই দলটি ব্যর্থতার চোরাবালিতে আটকে গেছে। এখান থেকে তারা বের হতে পারছে না। তাদের নাশকতার কর্মসূচি জনগণ অগ্রাহ্য করছে। হরতাল অবরোধ দিলে রাস্তায় যানজট লেগে যাচ্ছে। দূরবর্তী যানবাহনও চলছে।'
আরেক প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, 'বিএনপির মনোভাবের মধ্যে যে পরিবর্তন সেটা তাদের আসল কথা নাও হতে পারে। তারা বলে একটা, করে আরেকটা। কাজেই তারা সত্য বলছে এটা ভাবার সুযোগ নেই। তারা ৪ তারিখ পর্যন্ত লিফলেট বিতরণ করবে। এরপর তাদের কর্মসূচি কী, তা আমরা লক্ষ্য করব। সেটাকে লক্ষ্য করেই আমরা সতর্ক অবস্থায় আছি। প্রশাসন সতর্ক অবস্থায় আছে। আমরা দলগতভাবেও সতর্ক অবস্থায় আছি।'
এ সময় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দফতর সম্পাদক সায়েম খান উপস্থিত ছিলেন।