২,৬০০ কোটি টাকা ঋণখেলাপি মামলায় নূরজাহান গ্রুপের এমডি রতনের জামিন নামঞ্জুর
প্রায় দুই হাজার ৬০০ কোটি টাকার ঋণখেলাপি মামলায় চট্টগ্রামভিত্তিক নূরজাহান গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহির আহমেদ রতনের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতের যুগ্ম জেলা জজ মুজাহিদুর রহমান এ আদেশ দেন।
রতন তার বিরুদ্ধে থাকা ২০টিরও বেশি ঋণখেলাপি মামলার জন্য সব সাজা একসঙ্গে কার্যকর করার জন্য আদালতে আপিল করেছিলেন। আদালত তার এ আবেদন খারিজ করে দেন।
এর আগে গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর রতনকে ঋণখেলাপির অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়।
অর্থঋণ আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম বলেন, 'তার বিরুদ্ধে অন্তত ৩০টি মামলা রয়েছে এবং বিভিন্ন অভিযোগের মধ্যে ঋণখেলাপি রয়েছে। অন্তত ২১টি মামলায় তিনি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা এবং দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হয়েছেন।'
গত বছরের সেপ্টেম্বরে একটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর থেকে রতন পলাতক ছিলেন।
পরবর্তীসময়ে একই মাসে তার পাসপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও তিনি তা পালন করেননি। ২০২০ সালে সাউথ ইস্ট ব্যাংকের করা ২৬৮ কোটি টাকার ঋণ খেলাপি মামলায় আদালত এই আদেশ দেন।
ভোগ্যপণ্য ব্যবসার ক্ষেত্রে নূরজাহান গ্রুপ একসময় চট্টগ্রামের একটি শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান ছিল। ব্যবসায় উল্লেখযোগ্য ক্ষতি, ঋণের মাধ্যমে জমি ক্রয়, এবং প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী কর্মকর্তাদের বিলাসবহুল জীবনযাত্রার ফলে বিভিন্ন ব্যাংকে এটির উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ঋণ তৈরি হয়।
বিভিন্ন মামলার এফআইআর অনুযায়ী, একাধিক ব্যাংকে গ্রুপটির খেলাপি ঋণের পরিমাণ দুই হাজার ৬০০ কোটি টাকা।
এ গ্রুপের চট্টগ্রামভিত্তিক তিনটি প্রতিষ্ঠানের কাছে বিভিন্ন ব্যাংকের অর্থ পাওনা রয়েছে। এর মধ্যে অগ্রণী ব্যাংকের ৯৩৬ কোটি টাকা, রূপালী ব্যাংকের ৫৪৪ কোটি টাকা, ন্যাশনাল ব্যাংকের ৫০০ কোটি টাকা, জনতা ব্যাংকের ৩২৬ কোটি টাকা এবং সোনালী ব্যাংকের ১০৬ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে।
সূত্রমতে, মেরিন ভেজিটেবল অয়েল, নূরজাহান সুপার অয়েল এবং জাসমির ভেজিটেবল অয়েলসহ এই গ্রুপের কমপক্ষে ২০টি সহপ্রতিষ্ঠান ছিল। তবে গত পাঁচ থেকে সাত বছরে ব্যবসায়িক লোকসান ও বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে খেলাপির কারণে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে।
২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে পুলিশ রাজধানীর গুলশান থেকে গ্রুপের পরিচালক এবং রতনের ভাই টিপু সুলতানকে গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম কারাগারে রয়েছেন।