তৈরি পোশাক খাতে নতুন মজুরি কাঠামোর পরও ৭৯% ক্রেতা পণ্যের দাম বাড়ায়নি: বিজিএমইএর জরিপ
গত বছরের ডিসেম্বরে পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি বাড়ানোর পরও প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও ৭৯ শতাংশেরও বেশি বিদেশি ক্রেতা এখনও তৈরি পোশাকের জন্য বাড়তি দাম দিচ্ছেন না। তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর নতুন একটি জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে।
মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) রাজধানীর শাহবাগে একটি ক্লাবে ফোরাম আয়োজিত মতবিনিমিয় সভায় জরিপের এ তথ্য তুলে ধরা হয়। এতে আরও বলা হয়, মাত্র ৩ শতাংশ ক্রেতা পণ্যের দাম ৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়েছে। গত ডিসেম্বরে রপ্তানিমুখী গার্মেন্ট শিল্পের সঙ্গে জড়িত ৬৬ জন কারখানা মালিকের মতামতের ভিত্তিতে জরিপের ফল প্রকাশ করা হয়।
উল্লেখ্য, ফোরাম হলো বিজিএমইএর একটি অংশ, যারা আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এ লক্ষ্যে তারা গার্মেন্ট মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে শিল্পের সমস্যা ও প্রতিবন্ধকতাগুলো চিহ্নিত করছেন। এবার ফোরামের প্যানেল লিডারের দায়িত্বে রয়েছেন বর্তমান বিজিএমইএর পরিচালক ফয়সাল সামাদ।
ফয়সাল সামাদ বলেন, 'বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকটের কারণে আমাদের তৈরি পোশাকশিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পোশাক শিল্পের প্রকৃত অবস্থা তুলে আনতে এ ধরনের আরও জরিপ করা উচিত।'
তিনি বলেন, 'করোনার সময় অর্ডার বাতিলের তথ্য দিতে বিজিএমইএর ওয়েবসাইটে কারখানা মালিকদের অনুরোধ জানানো হয়। প্রথমে মালিকরা তথ্য দিতে সংকোচ বোধ করলেও পরবর্তী সময়ে সবাই তথ্য দেন। এসব তথ্যের ভিত্তিতে সরকার ও বিদেশি ক্রেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে অনেক সমস্যার সমাধান করা হয়। সরকারের তরফ থেকেই ১৪টি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়, যা তখন শিল্পের জন্য সহায়ক ভূমিকা রেখেছিল।'
জরিপের তথ্যমতে, ৪.৫ শতাংশ ক্রেতা পণ্যের দাম ১ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়েছে; ৬ শতাংশ ক্রেতা বাড়িয়েছে ২ শতাংশ পর্যন্ত; ৩ শতাংশ ক্রেতা বাড়িয়েছে ৩ শতাংশ পর্যন্ত এবং ৪.৫ শতাংশ ক্রেতা বাড়িয়েছে ৪ শতাংশ পর্যন্ত।
২০২৩ সালে ৩২.৮ শতাংশ তৈরি পোশাক মালিকরা বলেছিলেন, আগের বছরের চেয়ে এ বছর তাদের শুল্ক ও বন্ড ব্যয় বেড়েছে ২৬ থেকে ৫০ শতাংশ।
গত বছর অর্ডারের অভাবে তৈরি পোশাক কারখানাগুলো তাদের সক্ষমতার চেয়ে গড়ে ২৭.৫ শতাংশ পণ্য কম উৎপাদন করেছে।
তৈরি পোশাক মালিকরা আরও বলেছেন, পরবর্তী চার মাসের জন্য কারখানাগুলো সক্ষমতার ৬২.২১ শতাংশের সমান অর্ডার পেয়েছে।
এদিকে জরিপের প্রশ্নের জবাবে তৈরি পোশাক কারখানার মালিকরা বলেছেন, তাদের শুল্ক ও বন্ড সংক্রান্ত ব্যয় গত বছরের চেয়ে ৪৭.৮৫ শতাংশ বেড়েছে। অন্যদিকে ফ্রি অন বোর্ড (এফওবি) শিপিং খরচ গড়ে ৩.৯ শতাংশ কমেছে।