রামচন্দ্রপুর খালের ওপর ১০ তলা ভবন ভেঙে দিল ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বছিলা এলাকার লাউতলা রামচন্দ্রপুর খালের অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও ময়লা পরিষ্কার কার্যক্রম পরিচালনা করেছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)। এসময় খালের ওপর নির্মাণাধীন ১০ তলা একটি ভবন ভেঙে ফেলা হয়।
গতকাল (শুক্রবার) সকালে রামচন্দ্রপুর ও লাউতলা খালের পাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে ঢাকা উত্তরের অভিযান শুরু হয়। প্রথমে খালের মোহনার জায়গা দখল করে বানানো একটি আধপাকা ও একটি পাকা স্থাপনা গুড়িয়ে দেওয়া হয়।
এরপর শুরু হয় খালের পাড়ে নির্মাণাধীন ১০ তলা ভবন ভাঙার কাজ। মেয়রের উপস্থিতিতে এই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন ডিএনসিসি অঞ্চল-৫ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতাকাব্বীর আহমেদ, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুব হাসান এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসান।
ঢাকা উত্তরের সম্পত্তি বিভাগের কর্মকর্তারা খালের সীমানা মেপে দেখেন নির্মাণাধীন ভবনটির ৭০ ভাগই খালের জায়গার ওপর বানানো হয়েছে। এ কারণে নির্মাণাধীন ভবনটির অবৈধ অংশ ভেঙে ফেলার উদ্যোগ নিয়েছে।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ছয়টি বিশেষ বুলডোজার ও এক্সেভেটরসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে অবৈধ ভবন ভাঙার কাজ করা হয়। সকাল ১০টায় খাল পরিষ্কার কার্যক্রম শুরু হয় এবং বিকাল ৫.৪৫ মিনিটে পুরো তিন কিলোমিটার দীর্ঘ রামচন্দ্রপুর খালের ময়লা পরিষ্কার করা সম্পন্ন হয়।
বিডি ক্লিনের স্বেচ্ছাসেবীরা এ কাজে সহায়তা করেন। দুপুর পর্যন্ত মেয়র আতিকুল ইসলাম স্বেচ্ছাসেবীদের সঙ্গে পরিষ্কার অভিযানে ছিলেন।
খাল উদ্ধার ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, "ময়লা ও দখলমুক্ত করে রাজধানীর খালগুলোর আগের রূপে ফেরানো হবে। খাল পুনরুদ্ধারে আমরা এলাকাবাসীর সহযোগিতা চাই।"
মেয়র আরও বলেন, "এর আগে মিরপুর প্যারিস খাল, সূতিভোলা খালে অভিযান করেছি। গত দুইবছর আগে এই মোহাম্মদপুরেই লাউতলা খালে অবৈধভাবে গড়ে তোলা ট্রাক স্ট্যান্ড উচ্ছেদ করে আমরা গাছ লাগিয়ে দিয়েছি। সেখানে এখন সবুজায়ন হয়েছে৷ পাশেই বাউন্ডারি ওয়াল দিয়ে একটি মাঠ নির্মাণ করে দিয়েছি।"
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, "অবৈধ ভবন সরিয়ে নেয়ার জন্য আমরা কোন বৈধ নোটিশ দিব না। সবাই জানে কারা খালের সীমানায় ভবন বানিয়েছে।"
এক্ষেত্রে এলাকাবাসীকে মেয়র আতিকুল ইসলাম খালে ময়লা ফেলা বন্ধ করতে আহ্বান জানান। এক্ষেত্রে শুধু সিটি কর্পোরেশন না, জনগণকেও দায়িত্ব নেওয়ার কথা স্মরণ করিয়ে দেন তিনি।"
মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, "সবাই বলে জলাবদ্ধতা নিরসনে সিটি কর্পোরেশন কিছু করে না। এলাকাবাসীকে বলতে চাই, আপনারা যদি খালে ময়লা ফেলা বন্ধ করেন তাহলে জলাবদ্ধতা থাকবে না।"