সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে ১০ মার্চ আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করবে বাংলাদেশ
অভ্যন্তরীণ জ্বালানি উৎপাদন বাড়াতে বঙ্গোপসাগরের ২৪টি ব্লকে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য আগামী ১০ মার্চ আন্তর্জাতিক দরপত্রের আহ্বান করবে বাংলাদেশ। রয়টার্সকে মঙ্গলবার (৫ মার্চ) এ তথ্য জানিয়েছেন রাষ্ট্রায়ত্ত পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার।
ইউক্রেন যুদ্ধের পর জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি এবং গ্যাসের মজুত দ্রুত কমে আসার কারণে বাংলাদেশ বর্তমানে জ্বালানি ঘাটতিতে ভুগছে।
'২৪টি অফশোর ব্লকের জন্য অফার জমা দেওয়ার শেষ সময় সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ। মূল্যায়নের পরে আমরা এ বছরের শেষ নাগাদ চুক্তি চূড়ান্ত করার আশা করছি,' বলেন জনেন্দ্র নাথ সরকার।
তিনি তার অফিসে রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, 'গ্যাস-চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং শিল্প কারখানা চালু রাখতে আমরা সরবরাহের ঘাটতি কমানোর পরিকল্পনা করছি।'
জনেন্দ্র নাথ বলেন, সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির বাইরে পেট্রোবাংলা গত বছরের চেয়ে ২৩টি বাড়িয়ে এ বছর স্পট মার্কেট থেকে ৪৮টি এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) কার্গো আমদানি করার পরিকল্পনা করেছে।
স্পট মার্কেট থেকে এপ্রিলে পাঁচটি কার্গো আমদানি করা হবে। এর আগে গত দুই মাসে সাতটি কার্গো আমদানি করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, 'অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়াতে আমরা ২০২৫ থেকে ২০২৮ সালের মধ্যে দেশে ১০০টি নতুন গ্যাস কূপ খননের উদ্যোগ নিয়েছি।'
যদি গ্যাসের নতুন কোনো বড় মজুত আবিষ্কার না হয়, তাহলে বাংলাদেশের গ্যাসের মজুত ২০৩৩ সালের মধ্যে সম্পূর্ণরূপে শেষ হয়ে যাবে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর থেকে রিজার্ভ কমে যাওয়ার কারণে বাংলাদেশ আমদানিকৃত তেল ও গ্যাসের বকেয়া পরিশোধে হিমশিম খেয়েছে। বাধ্য হয়ে গত বছর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের কাছ থেক ৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ নিয়েছে ঢাকা।
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান বলেন, 'সাম্প্রতিক ডলার সংকট একটি বৈশ্বিক সমস্যা। কিন্তু সরকার জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। তাই এ খাতে কোনো বাধা থাকবে না।'
সমুদ্রসীমা নিয়ে প্রতিবেশী মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে ঢাকার বিরোধ নিষ্পত্তি হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশের উপকূলের অনেকাংশ এখনো অনাবিষ্কৃত রয়ে গেছে।
ওএনজিসি ওভারসিজ লিমিটেড এবং অয়েল ইন্ডিয়া লিমিটেডের যৌথ উদ্যোগে দুটি অগভীর জলের ব্লক অনুসন্ধানের চুক্তির পর সম্প্রতি সেখানে খনন শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।