শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের পদত্যাগ
ধর্ষণ ও নিপীড়ন বিরোধী চলমান আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান।
আজ সোমবার (১৮ মার্চ) লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। একইসঙ্গে পরিসংখ্যান ও উপাত্ত বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আলমগীর কবীরকে নতুন প্রক্টরের সাময়িক দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
জাবি রেজিস্ট্রার আবু হাসানের সই করা এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়েছে৷
অফিস আদেশে বলা হয়, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এবং সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আ স ম ফিরোজ-উল-হাসানের লিখিত অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে তাকে প্রক্টরের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো। একইসঙ্গে পরিসংখ্যান ও উপাত্ত বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আলমগীর কবীরকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সাময়িকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর হিসেবে নিয়োগ করা হলো।
গত ৩ ফেব্রুয়ারি স্বামীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসের একটি কক্ষে আটকে রেখে মীর মশাররফ হোসেন হলসংলগ্ন জঙ্গলে এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে।
গত ৪ ফেব্রুয়ারি আশুলিয়া থানায় দায়ের করা মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমানসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় 'নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চ'-এর ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ধর্ষক ও তাদের মদতদাতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
ফিরোজ-উল-হাসান প্রক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালনে অবহেলা করে এই অভিযোগ জানিয়ে তারা তার পদত্যাগ দাবি করেন।
গত ১১ মার্চ থেকে ৫ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য নতুন প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করে 'নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চ'।
দাবিগুলো ছিল-বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এবং মীর মশাররফ হোসেন হল প্রভোস্টের বিরুদ্ধের অপরাধে সহায়তার অভিযোগ তদন্ত এবং সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাদের প্রশাসনিক পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান।
টানা তিনদিন অবরোধ পালন করার পর ১৩ মার্চ উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলম আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। সেসময় উপাচার্য দাবিগুলো আমলে নিয়ে ১৮ মার্চের মধ্যে সেগুলো সমাধানের মৌখিক আশ্বাস দেন। এতে চাপের মুখে পরেন প্রক্টর ফিরোজ-উল-হাসান।
অবশেষে চাপের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।তিনি।
প্রক্টরের পদত্যাগে স্বস্তি প্রকাশ করে জাবি ছাত্র সংসদের একাংশের সভাপতি আলিফ মাহমুদ বলেন, প্রক্টরের পদত্যাগ প্রমাণ করলো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো ধর্ষকের সহায়তাকারীর স্থান নেই।
এদিকে নবনিযুক্ত প্রক্টর অধ্যাপক মোহাম্মদ আলমগীর কবীর বলেন, আমার এ পথ চলায় দলমত নির্বিশেষে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে চাই। এক্ষেত্রে সকলের সহযোগিতা ও দোয়া কামনা করছি।