সাভারে তেলবাহী লরি উল্টে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত বেড়ে ২, শিশুসহ আহত ৮
ঢাকার সাভারে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের জোরপুল এলাকায় তেলবাহী লরি উল্টে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দগ্ধ আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল দুইজনে। এ ঘটনায় শিশুসহ আহত হয়েছেন ৮ জন। তাদের শেখ হাসিনা ন্যাশনাল বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহতরা হলেন, যশোরের সদর থানা এলাকার আব্দুল আজীজের ছেলে ইকবাল হোসেন (৩৭) ও নজরুল ইসলাম। দুর্ঘটনার পর ইকবাল ঘটনাস্থলেই মারা যান। আর নজরুল ইসলামকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার পরপর ঘটনাস্থল থেকে নিহত একজনের লাশ উদ্ধার করে সাভার হাইওয়ে পুলিশ।
নিহতের নাম ইকবাল হোসেনের (৩৭), তিনি যশোর জেলার সদর থানা এলাকার আব্দুল আজীজের ছেলে।
সাভার হাইওয়ে থানার সাময়িক দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক বাবুল আক্তার দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, ইকবাল হোসেন ঘটনাস্থলেই দগ্ধ হয়ে মারা যান।
এদিকে ঘটনার পর দগ্ধ এক শিশুসহ মোট ৯ জনকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়। তাদের মধ্যে নজরুলকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। তার শরীরের ১০০ শতাংশই দগ্ধ ছিল।
শেখ হাসিনা ন্যাশনাল বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. তরিকুল ইসলাম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'অয়েল ট্যাংকারে আগুনের ঘটনায় মোট ৯ জনকে আমাদের এখানে আনা হয়, যাদের মধ্যে নজরুল ইসলাম নামে একজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। বারিা এখানে চিকিৎসাধীন।
মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) ভোরে তেলবাহী লরি উল্টে গিয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। তেলবাহী লরির আগুন ছড়িয়ে পড়ে মহাসড়কে থাকা আরও ৪টি গাড়িতে।
একটি কাভার্ড ভ্যান, একটি সিমেন্ট বোঝাই ট্রাক, একটি তরমুজ বোঝাই ট্রাক ও প্রাইভেট কারে আগুন ছড়িয়ে যায়। আগুনে প্রাইভেট কারে থাকা এক শিশু সামান্য অগ্নিদগ্ধ হয় বলে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের (জোন-৪) উপ-সহকারী পরিচালক মো. আলাউদ্দিন।
দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে মো. আলাউদ্দিন বলেন, 'ভোর ৫টা ৩৮ মিনিটে গাড়িতে আগুন লাগার খবর পেয়ে আমাদের মোট ৬টি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এসময় আমরা একজনকে স্পট ডেড অবস্থায় পাই, আহত পাই ৩ জনকে। আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য আমাদের অ্যাম্বুলেন্সে করে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে পাঠানো হয়েছে।'
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, 'তেলবাহী লরিটি ঢাকা থেকে মহসড়কের আরিচাগামী লেন দিয়ে নবীনগরের দিকে যাচ্ছিল। লরিটি হঠাৎ জোরপুল এলাকার সড়ক বিভাজকে ধাক্কা দিয়ে উলটে যায়, এতে লরির তেল রাস্তায় পড়ে তাৎক্ষণিক আগুন ধরে যায়। তেলের সাথে আগুনও ছড়িয়ে পড়ে কাছাকাছি থাকা একটি কাভার্ড ভ্যান, দুটি ট্রাক ও একটি প্রাইভেট কারে।'
'সবকটি গাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে', যোগ করেন তিনি।
মো. আলাউদ্দিন আরও বলেন, 'আগুনে প্রাইভেট কারের এক শিশু সামান্য অগ্নিদগ্ধ হয়েছে বলে জানা গেছে। ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা আসার আগেই প্রাইভেট কারে থাকা লোকজন শিশুটিকে নিয়ে চলে যায়।'
আহতদের মধ্যে রয়েছেন- আব্দুস সালাম (৩৫), মিলন মোল্লা (২০), আল-আমিন (৩০), নিরঞ্জন (৪৫), হেলাল (২১) ও মিম (১০)।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের উভয় পাশে যানচলাচল বন্ধ হয়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। আগুন নেভানোর পর ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সদস্যদের মহাসড়ক থেকে পুড়ে যাওয়া গাড়িগুলো সরিয়ে সড়কে যানচলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করতে দেখা গেছে।
সাভার হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা উপ-পরিদর্শক বাবুল আক্তার টিবিএসকে বলেন, 'আগুনের ঘটনায় মহাসড়কে প্রায় ১ ঘণ্টা যানচলাচল বন্ধ ছিল। যার কারণে সড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। আমরা যানচলাচল স্বাভাবিক করতে কাজ করছি।'