নোয়াখালীতে নতুন গ্যাস কূপে খনন কাজ শুরু
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার অম্বরনগর গ্রামে সন্ধান পাওয়া নতুন গ্যাস কূপে খনন কাজ শুরু করেছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স).
বেগমগঞ্জ-৪ (ওয়েস্ট) মূল্যায়ন কাম উন্নয়ন কূপ খনন নামের এই প্রকল্পটিতে সোমবার (২২ এপ্রিল) সকাল থেকে দুই শতাধিক প্রকৌশলী ও শ্রমিক কাজ শুরু করেছেন। আগামী ১২০ দিন চলবে খননের কাজ।
বেগমগঞ্জ-৪ (ওয়েস্ট) মূল্যায়ন কাম উন্নয়ন কূপ খনন প্রকল্পের ইনচার্জ ও বাপেক্সের কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করে বলেন, "সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে কূপ খননের জন্য 'ড্রিলিং রিগ' স্থাপন করা হয়। প্রাথমিকভাবে কূপটি মাটির নিচে ৩ হাজার ২০০ মিটার খননের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।"
"এর ৪টি জোনে প্রাকৃতিক গ্যাস মিলতে পারে বলে আশা করা যাচ্ছে। খনন শেষে প্রতিটি জোনে প্রতিদিন ১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা যাবে। অর্থাৎ, ৪টি জোন মিলিয়ে ৪০ মিলিয়ন ঘনফুট, যা বাখরাবাদের মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডে সংযুক্ত করা হবে," বলেন তিনি।
ভারী যন্ত্রাংশের সমন্বয়ে গঠিত রিগ (খনন যন্ত্র)। এটির খণ্ড খণ্ড অংশ যানবাহনে করে কূপ খননের এলাকায় নিয়ে আসা হয়। এরপর এটি ক্রেন দিয়ে তুলে জোড়া লাগানো হয়। 'রিগ মাস্ট' অর্থ হচ্ছে রিগের সবচেয়ে ওপরের ভারী অংশ। এটি শোয়ানো অবস্থায় এনে পরে যেখানে কূপ খনন করা হবে, সেখানে সোজা করে দাঁড় করানো হয় বলে বাপেক্স সূত্র জানায়।
বাপেক্স সূত্রে জানা যায়, এটির আগে নোয়াখালীর এ অঞ্চল তথা বেগমগঞ্জে ১৯৭৬ সালে প্রথম গ্যাস কূপের সন্ধান মেলে, ১৯৭৮ সালে দ্বিতীয় কূপের সন্ধান মিললে সেগুলো খনন করা হয়। তবে পরবর্তীতে ওই দুটি কূপে কোনো গ্যাস পাওয়া যায়নি।
২০১৩ সালে তৃতীয় কূপের সন্ধান মিললে খনন থেকে গ্যাস উৎপাদনে যায় এবং ২০১৮ সালে একই কূপে ওয়ার্কওভার (আক্রমণাত্মক কৌশল) চালিয়ে এখন প্রতিদিন ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে।
পেট্রোবাংলা সূত্রে জানায়, 'দেশের অর্থনীতি ও শিল্পায়নকে আরও গতিশীল করতে আমাদের বাড়তি গ্যাস প্রয়োজন'– এই প্রতিপাদ্য নিয়ে মানুষের চাহিদা পূরণে দেশীয় জ্বালানি অনুসন্ধান ও উৎপাদনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে সরকার।
২০২৫ সালের মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে ৪৬টি নতুন অনুসন্ধান, উন্নয়ন ও ওয়ার্কওভার কূপ খনন করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।