উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ২য় ধাপে ভোট পড়েছে ৩০ শতাংশের বেশি: সিইসি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, দেশের ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে ১৫৬টি উপজেলায় ৩০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে।
মঙ্গলবার (২১ মে) বিকেলে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সিইসি উল্লেখ করেন, ভোটার উপস্থিতি সন্তোষজনক ছিল না।
কাজী হাবিবুল আউয়াল আরও বলেন, আগামীকাল সঠিক ও নির্ভুল তথ্য পাওয়া যাবে।
দ্বিতীয় দফায় ভোট কম পড়ল কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, '...আমি ব্যক্তিগতভাবে ৩০ শতাংশ ভোটকে উৎসাহব্যঞ্জক মনে করি না। এর প্রধান কারণ হতে পারে দেশের অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল প্রকাশ্যে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে। মানুষকে ভোট দিতে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।'
ভোট নিয়ে কোনো সংকট নেই দাবি করে তিনি বলেন, 'সংকট হচ্ছে রাজনীতিতে। রাজনীতি যদি আরও সুস্থ ধারায় প্রবাহিত হয়, তাহলে আগামীতে হয়তো কম ভোটের সমস্যা কাটিয়ে উঠবে। যেকোনো গণতান্ত্রিক দেশে যারা ভোটার, তাদেরকে স্বশাসন বুঝতে হবে। স্বশাসন হচ্ছে নিজেই নিজেকে শাসন করা — তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে। এটাই হচ্ছে গণতন্ত্রের একটি শিক্ষা।'
দেশের রাজনীতিতে বিদ্যমান সংকট আগামীতে কেটে উঠবে বলে আশা প্রকাশ করে সিইসি বলেন 'ভোটারেরা উৎসাহিত হবেন। তারা আরও উৎসাহব্যাঞ্জক পরিবেশে ভোটকেন্দ্রে আসবেন।'
নির্বাচন কমিশন আজকের নির্বাচনের প্রথম চার ঘণ্টায় প্রায় ১৭ শতাংশ ভোটারের উপস্থিতির কথা জানিয়েছিল।
ইসি সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম টিবিএসকে বলেন, ১৫৬টি উপজেলার ১৩ হাজার ১৫৫ ভোটকেন্দ্রে সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। দুপুর ১২টা নাগাদ ১০ হাজার কেন্দ্র থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, প্রায় ১৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন।
ইসি সচিব বলেন, বড় ধরনের কোনো অঘটন ঘটেনি বলে ভোট প্রক্রিয়া অনেকাংশে শান্তিপূর্ণ হয়েছে।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, 'আমরা মাত্র ১৮টি ছোটখাটো ঘটনার তথ্য পেয়েছি। এর মধ্যে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় একজনকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে এবং তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তিনি এখন স্থিতিশীল অবস্থায় আছেন।'
'লাইনে দাঁড়ানো অবস্থায় একজন ভোটার স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। পরে তাকে হাসপাতালে মৃত ঘোষণা করা হয়। এছাড়া রাজশাহীতে একজন আনসার সদস্য স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে ভোটকেন্দ্রে মারা যান,' তিনি আরও বলেন।
নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, কোনো নির্বাচন গ্রহণযোগ্য বলে গণ্য হওয়ার জন্য জাতীয় বা স্থানীয় সরকার নির্বাচনে কত শতাংশ ভোট পড়া দরকার তা নিয়ে কোনো বিধি-নিষেধ, বিধি-বিধান বা প্রবিধান নেই।
তিনি বলেন, 'কমিশন এটা নিয়ে মাথা ঘামায় না। যেকোনো শতাংশ ভোট পেলেই নির্বাচন কমিশন সন্তুষ্ট হবে।'
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম দফায় ভোটার উপস্থিতি ছিল দেড় দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন। ৮ মে'র ওই নির্বাচনে ১৩৯টি উপজেলায় মাত্র ৩৬ দশমিক ১ শতাংশ ভোট পড়ে।
প্রথম ধাপে কম ভোটার উপস্থিতির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশনার আলমগীর ভোটারদের অংশগ্রহণ হ্রাসের কারণ হিসেবে ফসল কাটা, প্রতিকূল আবহাওয়া এবং প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দলের অনুপস্থিতির মতো বিভিন্ন কারণকে উল্লেখ করেছেন।
'এটি ইসির প্রতি আস্থা বা অবিশ্বাসের বিষয় নয়। পছন্দের প্রার্থী না পাওয়া এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ভোটারদের হার কমেছে। তবে কত শতাংশ ভোটার সন্তোষজনক হবে সে বিষয়ে ইসির কোনো বাধ্যবাধকতা নেই,' তিনি আরও বলেন।