বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারির ৫৯ মামলায় অভিযোগপত্র, কিন্তু প্রধান অভিযুক্ত বাচ্চু কোথায়?
বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান পলাতক আবদুল হাই বাচ্চুর বিরুদ্ধে ৫৯টি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
তবে প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকার ঋণ কেলেঙ্কারির মূল হোতাকে এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাকে বিচারের আওতায় আনার জন্য কর্তৃপক্ষের তেমন কোনো তৎপরতা নেই।
দুদক জানিয়েছে, বাচ্চু দেশে অবস্থান করছে নাকি বিদেশে পালিয়েছে, সেই সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। এ অবস্থায় তার অনুপস্থিতিতেই বিচার হবে বলে জানান দুদকের আইনজীবী।
আব্দুল হাই বাচ্চুকে এবার প্রায় ৯৫ কোটি টাকা পাচারের দায়ে অভিযুক্ত করে গত সোমবার ৫৯ তম মামলায় অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করেছে দুদক।
দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান মঙ্গলবার টিবিএসকে জানিয়েছেন, অভিযোগপত্রে বাচ্চুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির জন্য আদালতের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, "এ পর্যায়ে আদালত অনুমতি দিলে তাকে গ্রেপ্তার করা যাবে।"
এর প্রায় ১১ মাস আগে অন্য ৫৮ মামলায় বাচ্চুকে অভিযুক্ত করে ঢাকার বিশেষ জজ আদালতে দুদক অভিযোপত্র দাখিল করে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়নি।
এ বিষয়ে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, অন্য ৫৮ মামলার সবগুলো এখন পর্যন্ত আমলে নেওয়ার বিষয়ে শুনানি হয়নি। পর্যায়ক্রমে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, "দুদক তাকে গ্রেপ্তারে তৎপর হলেও তার কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না।"
সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও গত বছরের জুন মাসে ৫৮টি মামলায় তাকে অভিযুক্ত করার পর বাচ্চুর আইনজীবী হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করলেও পরে তা প্রত্যাহার করে নেন। এরপর থেকে বাচ্চুর অবস্থান সম্পর্কে কিছু বলতে পারছে না দুদক।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান টিবিএসকে বলেন, বাচ্চুকে আসামি হিসেবে খুঁজে বের করা দুদকের দায়িত্ব। "তিনি বিদেশে পালিয়ে থাকলে দুদক আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও ইন্টারপোলের সাহায্য নিতে পারে।"
নতুন চার্জ শিট
দুদকের অনুসন্ধানে জানা গেছে, আবদুল হাই বাচ্চু ২০১২ সালে ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট বাজার এলাকায় ৩০ কাঠার মতো জমি কিনেছিলেন।
জমির প্রকৃত দাম ১১০ কোটি টাকা হলেও দলিল বা চুক্তি স্বাক্ষরের সময় বাচ্চু মাত্র ১৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা পরিশোধ করেন।
দুদক বলছে, বাচ্চু রেজিস্ট্রেশনে জমির অবমূল্যায়ন করে ৯৪.৭৫ কোটি টাকা দাম দেখিয়ে ৮.৫২ লাখ টাকার বেশি কর ফাঁকি দিয়েছেন।
অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বাচ্চুর বিরুদ্ধে এটিই প্রথম মামলা। ২০২৩ সালের ৩ অক্টোবর দুদকের ঢাকা জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক নুরুল হুদা মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন বাচ্চুর স্ত্রী শিরিন আক্তার, তার ভাই শেখ শাহরিয়ার পান্না, তার ছেলে শেখ রাফা হাই ও শেখ সাবিত হাই অনিক এবং হোটেল লা মেরিডিয়ানের মালিক আমিন আহমেদ।