বিপৎসীমা ছাড়িয়েছে সিলেটের অধিকাংশ নদ-নদীর পানি
ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে দুদিন ধরে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে সিলেটে। টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে সিলেটের প্রায় সবগুলো নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সিলেট জেলার অধিকাংশ নদীর পানি ইতোমধ্যে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এদিকে গত দুইদিনের টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এ উপজেলার সবচেয়ে বড় নদী সারীনদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। উপজেলার নিজপাট ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম পাহাড়ি ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিলেট কার্যালয়ের তথ্যমতে, প্রাক-বর্ষায় সুরমা নদীর কানাইঘাট এলাকার বিপৎসীমা ১০.৮০ সেন্টিমিটার। সেখানে বুধবার (২৯ মে) সকাল ৯টায় ছিল ১২.৪৫ সেন্টিমিটার পানি। সিলেটে সুরমার বিপৎসীমা ৮.৩০ সেন্টিমিটার হলেও এদিন সকালে তা ছিল ৯.৪০ সেন্টিমিটার।
একইভাবে বেড়েছে কুশিয়ারা ও সারি-গোয়াইন নদীর পানিও। কুশিয়ারার আমলশিদ ও শেওলা এলাকা এবং সারি-গোয়াইনের সারিঘাট ও গোয়াইনঘাট এলাকায় পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাস বলেন, 'আমাদের নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পায় মূলত উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে। ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে বৃষ্টিপাততো আমাদের দেশেও ছিল। তাছাড়া প্রাক-বর্ষাকালে বৃষ্টি হওয়া স্বাভাবিক।'
২৬ মে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আঘাত হানে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমাল। এটির প্রভাব থাকে সোমবার পর্যন্ত। এ দুদিন টানা ভারী বৃষ্টিপাতের সম্মুখীন হয় বিভিন্ন জেলা।
দীপক রঞ্জন দাস বলেন, শুষ্ক মৌসুমের হিসেবে সিলেটে নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে আছে। 'এ পানি আরেকটু বৃদ্ধি পাবে তারপর নেমে যাবে।'
তবে ভারতের মেঘালয় বা আসামে বৃষ্টি হলে পাহাড়ি ঢল নামবে বলে জানান এ প্রকৌশলী। 'এজন্য আমাদেরকে বন্যা মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে হবে,' তিনি বলেন।
সিলেট আবহাওয়া অফিস বলছে, বর্ষা মৌসুম শুরুর এ সময়ে এখন প্রায় প্রতিদিনই বৃষ্টি হতে পারে। গত ২৪ ঘণ্টায় সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সিলেটে ১৪৬.১ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।
আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মোহাম্মদ সজিব হোসেন বলেন, আগামী তিনদিন সিলেটে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।