ব্যবসা, বিনিয়োগ নিয়ে সরকারের দীর্ঘমেয়াদী নীতি থাকা প্রয়োজন: ব্যবসায়ীরা
দেশের ব্যাবসা-বাণিজ্যে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য সরকারের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা ও নীতি থাকা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতারা।
সোমবার (১০ জুন) রাজধানীর একটি হোটেলে বাজেটোত্তর প্যানেল আলোচনায় ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই) এর সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, "ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ নিয়ে সরকারের একটি লং টার্ম পলিসি (দীর্ঘমেয়াদী নীতি) থাকা দরকার। এই পলিসি হতে হবে কমপক্ষে ৫ বছরের জন্য।"
তিনি আরও বলেন, "দীর্ঘমেয়াদী প্ল্যান (পরিকল্পনা) না থাকলে অনেক দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী নতুন বিনিয়োগে আগ্রহ পাবেন না। কারণ, লং টার্ম পলিসি না থাকলে একজন ব্যবসায়ী ঠিকমতো পরিকল্পনা করতে পারেন না। ফলে তাদের ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়।"
ব্যবসায়ীরা হ্যাসেল ফ্রি ট্যাক্স ও ভ্যাট দিতে চান মন্তব্য করে তিনি বলেন, "এই বাজেট বাস্তবায়নে বেসরকারি খাতকে এগিয়ে আসতে হবে। এছাড়া, ইনফরমাল সেক্টর অনেক বড় হয়ে গেছে। এই সেক্টরকে ফর্মাল সেক্টরে নিয়ে আসতে হবে।"
তিনি বলেন, "বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইনটা যেন ভালো হয়। অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান আছে, যেখানে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ না থাকলে সমস্যায় পড়তে হয়।"
এছাড়া, তিনি কর মুক্ত আয়সীমা ৪.৫ লাখ করা উচিত উল্লেখ করে বলেন, "আমাদের এখন এক্সপোর্ট ডাইভারসিটি (রপ্তানিতে বৈচিত্র্য) বাড়াতে হবে। লজিস্টিকস পলিসি আগামী কয়েকমাসের মধ্যে চালু করা গেলে দেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায় অনেক উপকৃত হবে।"
অনুষ্ঠানে মেট্রোপলিটন চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সাবেক সভাপতি নিহাদ কবির বলেন, "আপাতত বর্তমানে রাজস্ব সংগ্রহের উপায় এবং বাজেট বাস্তবায়ন অন্য যেকোনো বিষয়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের এখন বাজেট বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য ত্রুটি-বিচ্যুতি ও অদক্ষতাগুলো চিহ্নিত করে, তা সমাধান করতে হবে।"
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেন, "এবারের বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের ওপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে; এটিই দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের জন্য একটি উপযুক্ত সময়।"
আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশের নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সিটি ব্যাংক, এনএ বাংলাদেশের সিটি কান্ট্রি অফিসার মো. মইনুল হক এবং এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রিয়াজ ইসলাম প্যানেলিস্ট হিসাবে আলোচনায় অংশ নেন।
পলিসি এক্সচেঞ্জ অফ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. এম মাসরুর রিয়াজ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন এবং ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেন।
আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশ দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, রপ্তানি আয় বাড়ানোর বিকল্প উপায়, ট্যাক্স এবং ভ্যাট নীতি, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী, ইপিজেড এবং হাই-টেক পার্কের শুল্ক, সাপ্লাই চেইনে বিদ্যমান সমস্যাগুলো দূর করে নবায়নযোগ্য শক্তির মতো পরিবেশবান্ধব ও নিরাপদ প্রকল্পগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়ার সুপারিশ করে।