৪৭ দিন পর মুন্সীগঞ্জের শিল্প কারখানায় গ্যাস সরবরাহ ফিরিয়ে দিল তিতাস
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় এক ডজনেরও বেশি শিল্পকারখানা গ্যাস সরবরাহের অভাবে প্রায় ৪৭ দিন ধরে বন্ধ ছিল। দীর্ঘদিনের এই স্থবিরতা কাটিয়ে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির 'ক্রিটিক্যাল এনার্জি' হিসেবে দেওয়া গ্যাসে কারখানাগুলো ফের চালু হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানিটি গতকাল (বুধবার) রাতে শিল্পকারখানাগুলোতে গ্যাস সরবরাহ পুনরায় চালু করেছে। কারখানাগুলির কর্মকর্তারা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত ২৮ এপ্রিল তিতাস গজারিয়া থেকে দাউদকান্দি ব্রিজ পর্যন্ত এলাকায় অবৈধ গৃহস্থালি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার অভিযানের সময় কোনো পূর্ব নোটিশ ছাড়াই গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর গত সোমবার টিবিএসের পক্ষ থেকে 'তিতাস গ্যাসের ভুল পদক্ষেপে বন্ধ মুন্সিগঞ্জে শিল্পকারখানার উৎপাদন' শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করে।
তিতাস সূত্রের দাবি, কোম্পানিটি গজারিয়া এলাকায় অস্বাভাবিকভাবে উচ্চহারে সিস্টেম লস কমানোর প্রচেষ্টার অংশ হিসাবে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। যা প্রায় ৪০ শতাংশেরও বেশি। গত অর্থবছরও এই সিস্টেম লস গড়ে ছিল ৫.২৮ শতাংশ।
তিতসের এই পদক্ষেপে শতভাগ রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাকসহ কাগজ, সিমেন্ট, ফিড, ইলেকট্রনিক্স ও তার প্রস্তুতকারক কারখানাগুলির উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়।
এক্ষেত্রে টিবিএস-এ খবরটি প্রকাশের পর অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসনের সহায়তায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ। তিন দিন ধরে অভিযান চালিয়ে প্রথম দিনেই প্রায় আড়াই হাজার অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে তিতাস।
এরপর গতকাল (বুধবার) তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মোঃ হারুনুর রশিদ মোল্লা এলাকাটি পরিদর্শন করেন। এরপর অবৈধ সংযোগগুলো অপসারণের পর শিল্প কারখানায় গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক করা হয়।
আকিজ ভেঞ্চারসের অধীনে থাকা কোম্পানি আধুনিক পেপার মিলস রপ্তানিমুখী পণ্য প্যাকেজিংয়ের জন্য কার্টন তৈরি করে। যেখানে ৩০০ জনেরও বেশি কর্মী কাজ করে। গ্যাস সরবরাহের অভাবে গত ২৮ এপ্রিল থেকে কারখানাটি বন্ধ ছিল। গ্যাস সংযোগ পুনঃস্থাপনের পর গতকাল (বুধবার) থেকে আবার কারখানার কার্যক্রম শুরু হয়।
এই বিষয়ে কোম্পানির একজন কর্মকর্তা আল আমিন টিবিএসকে বলেন, "সংযোগ ফের চালু করার সাথে সাথে কারখানার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সমস্ত শ্রমিকরা কারখানায় কাজ করছে।"
এদিকে গত রবিবার প্যাসিফিক ডেনিমস নামের স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত শতভাগ রপ্তানিমুখী কোম্পানিটির গজারিয়া কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য উৎপাদন বন্ধ ঘোষণা করে।
কোম্পানি সেক্রেটারি মোঃ সোহরাব আলী টিবিএসকে বলেন, "তিতাসের প্রধান গ্যাস লাইনের সংযোগ আমরা এক মাস পর ফিরে পেয়েছি। আমরা ইদ উপলক্ষ্যে শ্রমিকদের ছুটি ঘোষণা করেছি; ছুটির পর কারখানাটি আবার চালু হবে।"
গজারিয়া শিল্প এলাকায় অবস্থিত কারখানার মধ্যে রয়েছে সুপার স্টার গ্রুপ লিমিটেড, মেনস ফি পেপার মিলস, মডার্ন পেপার মিলস, পাইওনিয়ার পেপার মিলস, হাসান রাবার লিমিটেড, প্যাসিফিক ডেনিম, এসএসজি পেপার মিলস, নিউ হোপ ফিড কোম্পানি, কাজী ফার্মস, আনোয়ার সিমেন্ট শিট, সুপার স্টার ক্যাবল, পলি ক্যাবল ও মেঘনা গার্মেন্টস।