‘রাজনৈতিক শূন্যতা’ পূরণে অবিলম্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের আহ্বান ড. দেবপ্রিয়র
বাংলাদেশে চলমান 'রাজনৈতিক শূন্যতা' পূরণে জরুরি ভিত্তিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
ইউএনবিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি দেশে গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠায় ত্যাগ স্বীকার করা শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণের আস্থা অর্জনের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, 'নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অবশ্যই ছাত্র ও সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করতে হবে।' এ সময় অস্থিরতা নিরসনে সংসদ ভেঙে দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরেন তিনি।
ড. দেবপ্রিয় বলেন, 'চলমান অগ্নিসংযোগ, প্রতিশোধমূলক হত্যাকাণ্ড ও সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা এবং সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস বন্ধে একটি পূর্ণ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অপরিহার্য। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির স্বাভাবিক করা এবং নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অগ্রাধিকার হওয়া উচিত।'
একটি অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতিসহ নতুন সরকারের ম্যান্ডেট ও কর্তব্য নির্ধারণের গুরুত্বের ওপরও জোর দেন তিনি। এজন্য একটি স্বাধীন ও দক্ষ নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠা করতে হবে বলেও উল্লেখ করেন এই অর্থনীতিবিদ।
অসংখ্য রাজনৈতিক মামলা পরিচালনার জন্য একটি স্বাধীন বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠা এবং স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সামাজিক সুরক্ষাসহ জনসেবার কার্যকর বিতরণ নিশ্চিত করার জন্য একটি অরাজনৈতিক জনপ্রশাসন গঠনের আহ্বান জানান ড. দেবপ্রিয়। মত প্রকাশের স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও নাগরিক সমাজের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি নিরীহ শিক্ষার্থী ও নাগরিকদের হত্যার জন্য দৃশ্যমান ও জরুরি শাস্তির প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দেন তিনি।
দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে নতুন সরকারকে অর্থনীতির অবস্থা সম্পর্কে একটি শ্বেতপত্র প্রণয়নের পরামর্শ দেন ড. দেবপ্রিয়।
এ বিষয়টির ব্যাখ্যা করে তিনি আরও বলেন, 'পরামর্শমূলক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রস্তুত এ জাতীয় নথি সাম্প্রতিক ধাক্কা কাটিয়ে উঠে অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে এবং কাঠামোগত সংস্কার করতে নতুন সরকারকে নির্দেশনা দিতে পারে।'
আসন্ন চ্যালেঞ্জের কথা স্বীকার করে ড. দেবপ্রিয় বলেন, 'বর্তমান বাস্তবতায় নতুন সরকার রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগ কতটুকু বাস্তবায়ন করতে পারে তা দেখার বিষয়। প্রতিষ্ঠিত শক্তিকে নিয়ন্ত্রণে রেখে সাম্প্রতিক পরিবর্তনগুলোর মাধ্যমে তরুণদের প্রত্যাশা পূরণ করা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।'