সরবরাহ বাড়ায় কমেছে সবজি ও মুরগির দাম, শিক্ষার্থীদের বাজার মনিটরিং
সরবরাহ বাড়ায় রাজধানীর বাজারগুলোতে সব ধরনের সবজি ও মুরগির দাম কমেছে। আজ (শুক্রবার) বেলা ১১ টার দিকে কারওয়ান বাজারে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের বাজার মনিটরিং করতে দেখা যায়।
কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, গত ৩ দিনের তুলনায় সবজির দাম কেজিতে সর্বনিম্ন ১৫ টাকা কমেছে। আর মুরগির দাম কমেছে ২০ টাকা।
বিক্রেতা তালেমুল ইসলাম বলেন, "বাজারে সবজির সরবরাহ দ্বিগুণ। এতদিন আন্দোলন চলার কারনে সবজির ট্রাক কম আসতো। তার উপর রাস্তায় চাঁদাবাজ নেই। তাই দাম কমেছে।"
তিনি আরও বলেন, "যেই মানের বেগুন ৩ দিন আগে বিক্রি করেছি ১২০ টাকা সেটার কেজি এখন ৮০ টাকা। পটল ছিল ৬০ টাকা এখন ৪০ টাকা। প্রতি কেজি সবজিতে সর্বনিম্ন ১৫ টাকা কমেছে।"
কারওয়ান বাজারের মুরগির দোকান গুলোতে দেখা গেছে, গত ৩ দিনের তুলনায় মুরগির দাম কমেছে। ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ১৯০ টাকা যা এখন কমে দাঁড়িয়েছে ১৭০ টাকায়।
কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটে দেখা যায় প্রায় ২৫ জনের শিক্ষার্থীদের একটি দল। বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে ব্যবসায়ীদের বাড়তি দামে পণ্য বিক্রি না করতে অনুরোধ করেন।
এক শিক্ষার্থী আরিয়ান বলেন, "আমরা সকাল ৯টা থেকে বাজার মনিটরিং করছি। ব্যবসায়ীদের আমরা দৃশ্যমান স্থানে মূল্যতালিকা টানাতে বলছি। তারা কী দামে পণ্য কিনেছেন সেটাও দেখছি। অতিরিক্ত দাম জেন না রাখে সেটাও নজর রাখছি।"
কারওয়ান বাজারের শ্রীপুর ব্রয়লার হাউজের বিক্রেতা মোহাম্মদ সেলিম মিয়া বলেন, "৩ দিনের ব্যবধানে মুরগি কেজিতে ২০ টাকা কমেছে। আমরা ব্রয়লার মুরগি ১৭০ টাকা বিক্রি করছি। এখন বাজারে সরবরাহ ভালো। শিক্ষার্থীদের বাজার মনিটরিংকে আমরা সাধুবাদ জানাই।"
বাজার করতে এসেছেন রেজাউল করিম নামের একজন। তিনি বলেন, "২ দিন আগে মুরগি কিনেছি ১৯০ টাকায়। আজকে কিনলাম ১৭০ টাকা। শিক্ষার্থীদের অনেক সুন্দরভাবে বাজার মনিটরিং করতে দেখলাম। তাদের অভিজ্ঞতা নেই এ কাজে তার পরও তারা ভালো করছে। সরকারের উচিত তাদের নিয়মিতভাবে মনিটরিং করতে দেয়া।"
কারওয়ান বাজারের পাইকারি ডিম বিক্রেতা মোহম্মদ লিটন বলেন, "১০০ ডিমে দাম কমেছে ২০০ টাকা। ৩ দিন আগে ছিল ১৩৫০ টাকা। আজকে ১০০ ডিম বিক্রি হচ্ছে ১১৫০ টাকায়।
কারওয়ান বাজারে ১৫ জনের একটি টিমের নেতৃত্ব দিচ্ছেন শিক্ষার্থী শাখাওয়াত হোসেন। তিনি টিবিএসকে বলেন, 'রাজধানীর বাজারে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন রঙিন লাইট ব্যবহার করে ক্রেতাদের প্রতিনিয়ত ধোঁকা দিচ্ছেন। এসব রঙিন লাইটের আলোর ঝলকানিতে পণ্য দেখে তাজা ও ভালো মনে হয়। তবে ক্রেতা বাসায় গিয়ে দেখেন, বাজারে যেমন দেখেছেন, ঠিক তেমন নয়। তাই আমরা এমন লাইট খুলে স্বাভাবিক লাইট জ্বালাতে বলেছি।'
শাখাওয়াত বলেন, 'সবজির বাজারে সবুজ, আর পিঁয়াজের বাজারে লাল লাইট দেখেছি।'
কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা রুবেল খন্দকার তার দোকানের সবুজ লাইট খুলে স্বাভাবিক সাদা আলোর লাইট লাগিয়েছেন। তিনি বলেন, 'সবুজ আলোতে পচা সবজিও তাজা দেখায়, চকচকে লাগে । তবে নিয়মিত মনিটরিং না করলে আবারও সবুজ লাইট লাগাবে ব্যবসায়ীরা। সবাই সবুজ আলো দিলে আমিও তো তখন সাদা লাইট খুলে সবুজ লাইটই জ্বালাব।'