পদত্যাগ করেছেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান পদত্যাগ করেছেন। আজ শনিবার দুপুরে তিনি এ সিদ্ধান্তের কথা জানান। এর আগে সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে কথা বলে আনুষ্ঠানিক পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন তিনি।
আজ শনিবার (১০ আগস্ট) দুপুরে তিনি টিবিএসকে বলেন, 'অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের সঙ্গে কথা বলে পদত্যাগের বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে কথা বলে আনুষ্ঠানিক পদক্ষেপ নেব। কিছু আনুষ্ঠানিকতা রয়েছে, সেগুলো সম্পন্ন করে সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেব।'
আজ প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগের বিচারপতিদের দুপুর ১টার মধ্যে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বেলা ১১টায় হাইকোর্ট চত্বরে সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ এ আল্টিমেটাম দেন। দাবি আদায়ে সুপ্রিম কোর্ট ঘেরাও করেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা পদত্যাগের আল্টিমেটাম দেওয়ার পর প্রধান বিচারপতি এই সিদ্ধান্ত নিলেন।
এর আগে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, 'দুপুর ১টার মধ্যে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ আপিল বিভাগের বিচারপতিরা পদত্যাগ না করলে তার পরিণতি হবে শেখ হাসিনার মতো। আমরা প্রধান বিচারপতিসহ দলবাজ বিচারপতিদের বাসভবন ঘেরাও করে পদত্যাগে বাধ্য করব। দলবাজ বিচারপতিদের সরিয়ে দেওয়ার মধ্যে দিয়ে ফ্যাসিবাদের মূল উৎপাটন করা হবে।'
ওবায়দুল হাসানসহ অন্যান্য বিচারপতির পদত্যাগের দাবিতে সুপ্রিম কোর্ট ঘেরাও করেন শিক্ষার্থীরা। বেলা ১১টা থেকে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে হাইকোর্টে আসা শুরু করেন।
আগে সকাল ১০টা ২০ মিনিটে সুপ্রিম কোর্ট বার ভবনের সামনে থেকে বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভে শতাধিক আইনজীবী অংশগ্রহণ নেন। বিক্ষোভ মিছিলটি সুপ্রিম কোর্টের মূল ভবনসহ আপিল বিভাগ এলাকা প্রদক্ষিণ করে।
মিছিলে নেতৃত্ব দেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, বাংলাদেশ লইয়ার্স কাউন্সিলের নেতা অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকার প্রমুখ।
এর আগে প্রধান বিচারপতিকে ফ্যাসিবাদের দোসর আখ্যা দিয়ে তার পদত্যাগ দাবি ও ফুলকোর্ট সভা বন্ধের আল্টিমেটাম দেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ।
আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে প্রধান বিচারপতির পদত্যাগের দাবির বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল আজ দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, 'পদত্যাগের দাবি ওঠার মানে প্রধান বিচারপতি নিশ্চয়ই বুঝতে পারেন।'
তিনি আরও বলেন, 'এত বড় একটা গণ-আন্দোলন, যেখানে ১৬-১৭ বছর ধরে থাকা একটা সরকার, যে সরকারের প্রধানকে পালিয়ে যেতে হয়েছে। ফলে ওই রকম (শিক্ষার্থীদের) জায়গা থেকে চাপ আসার পর প্রধান বিচারপতির কী করা উচিত, তা ওনার ওপরেই ছেড়ে দিলাম।'
আজ সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধান বিচারপতির নির্দেশনা অনুসারে, ভার্চ্যুয়ালি ফুল কোর্ট সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। সকাল সোয়া ১০টার দিকে ফুল কোর্ট সভা স্থগিত করা হয়েছে বলে জানানো হয়।
ফুল কোর্ট সভা নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে বিনা শর্তে প্রধান বিচারপতিকে পদত্যাগ করতে ও ফুল কোর্ট মিটিং বন্ধ করার দাবি জানান।