শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ভূমিকা ছিল না: হোয়াইট হাউস
গণঅভ্যুত্থানের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ভূমিকা ছিল না বলে সোমবার জানিয়েছে হোয়াইট হাউস।
শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই কিছু মহল থেকে গুঞ্জন উঠেছে, এর পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের হাত ছিল। তবে হাসিনার উৎখাতের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের হাত থাকার এই অভিযোগকে 'ডাহা মিথ্যা' বলে উল্লেখ করেছে ওয়াশিংটন।
এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশে সরকার উৎখাতে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ করার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র কারিন জাঁ-পিয়েরে বলেন, 'আমাদের মোটেই কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। এসব ঘটনার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা ছিল বলে যদি কোনো প্রতিবেদনে বলা হয় বা গুজব ছড়ানো হয়, তাহলে তা ডাহা মিথ্যা।'
ভারতের সংবাদমাধ্যম ইকোনমিক টাইমস-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার অভিযোগ, তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের হাত আছে। সেন্টমার্টিন দ্বীপ যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে না দেওয়ায় দেশটি ষড়যন্ত্র করে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে। ইকোনমিক টাইমসের দাবি, হাসিনা তার ঘনিষ্ঠ ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের মাধ্যমে পত্রিকাটির কাছে এই বার্তা পৌঁছেছেন।
তবে শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে বলেছেন, হাসিনা ভারতে যাওয়ার আগে-পরে কখনোই এ ধরনের কোনো বক্তব্য দেননি।
এদিকে হোয়াইট হাউস আরও বলেছে, 'আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশি জনগণেরই বাংলাদেশের ভাগ্য নির্ধারণ করা উচিত—এবং এটাই আমাদের অবস্থান।'
শেখ হাসিনা গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ভারতে অবস্থান করছেন। তিনি ভারতে যাওয়ার পরে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর একটি সর্বদলীয় বৈঠক করেন এবং বিরোধী দলগুলোর নেতাদের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি এবং সরকারের পরিকল্পনা সম্পর্কে অবহিত করেন।
এদিকে হাসিনা সরকারের পতনের নোবেলজয়ী ড. মোহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নিয়েছে। নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে গত বৃহস্পতিবার শপথ গ্রহণ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের আন্দোলনে সরকারের চালানো দমন-পীড়নের ফলে অন্তত চার শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। একপর্যায়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন হয়ে ওঠে সরকারকে উৎখাতের ছাত্র-জনতার গণআন্দোলন। শেষপর্যন্ত আন্দোলনের মুখে টিকতে না পেরে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়তে বাধ্য হন শেখ হাসিনা।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে নির্বাচনে জিতে টানা চতুর্থ দফায় ক্ষমতায় বসেছিলেন শেখ হাসিনা। তবে বিরোধীদলের বর্জনের মধ্যে অনুষ্ঠিত ওই নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলেছিল, জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি।