রাজশাহীতে চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক ঘটকের পৈত্রিক বাড়ি ভাঙচুর
রাজশাহীর মিয়াপাড়ায় প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক কুমার ঘটকের শৈশব ও কৈশোরের স্মৃতিবিজড়িত পৈত্রিক বাড়ি ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। এতে বাড়িটি যেন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এ ঘটনার জন্য রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজকে দায়ী করছেন অনেকেই।
আজ বুধবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, বাড়িটিতে যে কয়টি ঘর অবশিষ্ট ছিল, সেগুলোর প্রতিটি ঘর ভেঙে ইটগুলো বাড়ির আঙিনায় স্তূপ করে রেখে দেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন ঋত্বিক ঘটক ফিল্ম সোসাইটির সদস্যসহ ও রাজশাহীর সাংস্কৃতিক কর্মীরা। তারা জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
তারা বলেন, এর আগেও রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ জায়গাটি দখলের জন্য বাড়িটি ভেঙে ফেলার চেষ্টা করেছিল। এমনকি ভিটাটির এক পাশ দখল করেই কলেজটি গড়ে তোলা হয়েছে।
ঋত্বিক ঘটক ফিল্ম সোসাইটির সংগঠক অনাবা কবির প্রকৃতি বলেন, 'পাশেই হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ। সেখানে কোনো হামলা হলো না, অথচ ঋতিক ঘটকের বাড়ি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হলো, এটা কখনোই বিশ্বাসযোগ্য না।'
ওয়েব সিরিজ নির্মাতা তাওকীর শাইক বলেন, 'বাাড়িটি বাঁচানোর জন্য আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছি। সে কারণে ডিসি অফিস থেকে স্টে অর্ডার ছিল যে এটাতে কিছু করা যাবে না, ভাঙা যাবে না। আবার কলেজ অধ্যক্ষের কক্ষে সিসিটিভির মূল যন্ত্রপাতি থাকা সত্ত্বেও ৬ আগস্ট দুপুরের পর থেকে সিসিটিভির কোনো ফুটেজ নাই। কেন সিসিটিভি বন্ধ করা হলো?'
রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. আনিসুর রহমান বলেন, 'গত ৬ আগস্ট রাত ৮টার দিকে আমার কাছে খবর আসে সাত-আটজনের একটি দল ঋত্বিক ঘটকের বাড়ি ভাঙচুর করছে। খবর পেয়ে গিয়ে তাদের বাধা দিই ও সেখান থেকে তাড়িয়ে দিই। তারা ছাত্র ছিল না।'
তিনি আরো বলেন, 'পরের দিন সকালে কলেজে গিয়ে দেখি বাড়ির অবস্থা খুব খারাপ। তখন কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে ছবি তুলে পাঠালে তিনি ক্লিন করতে বলেন। তারপর ঠিকাদার ডেকে সেগুলো পরিষ্কার করতে গিয়ে আরও খারাপ পরিস্থিতি দাঁড়ায়। কারণ ভবনগুলো খুবই পুরাতন। কাদামাটির গাঁথুনি দিয়ে তৈরি। তারপর নির্মাণ সামগ্রী সরিয়ে আঙিনায় স্তূপাকারে রাখা হয়েছে।'
ঠিকাদার শামীম মিয়া বলেন, 'আমরা এসে দেখি বাড়িটির একপাশটা ভাঙা। সেগুলো সরাতে গিয়ে দুর্বল ভবন হওয়ায় ভেতরের কক্ষগুলোও ভেঙে পড়েছে।'
রাজশাহী জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ জানান, ঘটনাটি তদন্তে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মহিনুল হাসানকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সাত কার্যদিবসের মধ্যে তাদেরকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।