ঢাকার বেশিরভাগ বিশ্বের গ্রাফিতি রাজধানীতে পরিণত হয়েছে: ড. ইউনূস
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, 'ঢাকার বেশিরভাগই বিশ্বের দেয়ালচিত্রের রাজধানীতে পরিণত হয়েছে। ১২-১৩ বছর বয়সী শিক্ষার্থী ও শিশুরা ৪০০ বছরের পুরনো এই শহরের দেয়ালে নতুন গণতান্ত্রিক পরিবেশবান্ধব বাংলাদেশের চিত্র আঁকছে।'
তৃতীয় ভয়েস অব গ্লোবাল সাউথ সামিটের উদ্বোধনী অধিবেশনে ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় তিনি বিদেশি বন্ধুদের শিগগিরই ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ জানান।
শিক্ষার্থীদের গ্রাফিতির বিষয়ে নোবেলজয়ী এ অর্থনীতিবিদ আরও বলেন, 'এ বিষয়ে কোনো কেন্দ্রীয় পরিকল্পনা বা দিকনির্দেশনা নেই। তারা (শিক্ষার্থী) কারো কাছ থেকে অর্থ সহায়তাও পায়নি। এটি দ্বিতীয় বিপ্লবের উদ্দেশ্যগুলোর প্রতি তাদের আবেগ ও অঙ্গীকারের বহিঃপ্রকাশ মাত্র।'
ড. ইউনূস বলেন, 'তরুণ শিক্ষার্থী ও শিশুরা দোকান থেকে তাদের জন্য রং ও ব্রাশ কিনে নিয়ে আসে। তারা তাদের নিজস্ব বিষয় এবং নিজস্ব বার্তা ফুটিয়ে তোলে। তারা যেসব বার্তাসহ গ্রাফিতি আঁকছে, তা যে কাউকে শিহরিত করবে। তরুণরা স্বপ্ন দেখছে, তাদের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়া আমাদের দায়িত্ব।'
তিনি বলেন, '১৯৫২ সালে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা মাতৃভাষার জন্য তাদের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন এবং এটি সারা বিশ্বে মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকারের জন্য সংগ্রামকে অনুপ্রাণিত করেছিল। প্রায় সাত দশক পরে আমাদের ছাত্রদের নেতৃত্বে দ্বিতীয় বিপ্লব গণতন্ত্র, মানবাধিকার, মর্যাদা, সমতা ও অংশীদারিত্বমূলক সমৃদ্ধির জন্য তাদের কণ্ঠস্বর তুলে ধরতে গ্লোবাল সাউথ জুড়ে যুবকদের অনুপ্রাণিত করছে।'
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, "আমি সবচেয়ে বয়স্ক 'তরুণ' হিসেবে এই বিপ্লবে অংশ নিতে পেরে এবং তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে সহায়তা করতে পেরে সম্মানিত বোধ করছি। তাদের আপনাদের সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। তাদের সর্বাঙ্গীণ সাফল্য কামনা করি।"
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ড. ইউনূসকে সম্মেলনে যোগদানের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। উদ্বোধনী অধিবেশনে রাষ্ট্র বা সরকার প্রধান পর্যায়ের অতিথিরা ছিলেন।
অন্তবর্তীকালীন সরকার প্রধান হিসেবে শপথ নেওয়ার পর এটাই ছিল ইউনূসের প্রথম বহুপাক্ষিক বৈঠক।
এর আগে বাংলাদেশ ভ্রমণে ইচ্ছুক সাংবাদিকদের দ্রুত ভিসা অনুমোদনের জন্য বিদেশে তার সব মিশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে টেলিফোনে আলাপকালে ড. ইউনূস ভারতীয় সাংবাদিকদের বাংলাদেশে স্বাগত জানান, যাতে তারা মাঠ পর্যায় থেকে প্রতিবেদন করতে পারেন।