শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হত্যা মামলার সেঞ্চুরি
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হত্যা মামলার সেঞ্চুরি পূর্ণ হলো। ছাত্র জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেয়ার পর গত ১৩ আগস্ট রাজধানীতে প্রথম একটি হত্যা মামলা দায়ের হয় শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের নেতাদের বিরুদ্ধে।
সর্বশেষ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় আজ বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) বিকেলে শেখ হাসিনাসহ ৫২ জনের নাম উল্লেখ করে গণহত্যার অভিযোগে মামলা হয়। এরমধ্যে গণহত্যায় উসকানি দেয়ায় ৩২ জন সিনিয়র সাংবাদিককে অভিযুক্ত করা হয়েছে। গত ৫ আগস্ট রাজধানীর শ্যামলী রিং রোডে পুলিশের গুলিতে নিহত রিহানের বাবা গোলাম রাজ্জাক এ মামলার আবেদন করেন।
একই দিন ঢাকা খিলগাঁওয়ে একটি হত্যা মামলা এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সড়ক পরিবহণ শ্রমিক দলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ও সাংবাদিক হাসান মাহমুদকে হত্যা ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
এ নিয়ে হাসিনার বিরুদ্ধে মোট একশটি হত্যা মামলা হলো।
গত ১৬ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ছাত্র-জনতা আন্দোলনে পুলিশ ও সরকার দলীয় লোকজনের হামলায় নিহতদের পরিবারের পক্ষে এসব মামলা করা হয়েছে। মামলাগুলোর মধ্যে গণহত্যার অভিযোগে ৮ টি মামলা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় দাখিল হয়েছে আর ৯২ টি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে দেশের বিভিন্ন থানায়। এর বাইরে ১টি মামলা রয়েছে অপহরণ করে গুম করার অভিযোগে।
হত্যা মামলাগুলোর মধ্যে ১৩ আগস্ট একটি, ১৪ আগস্ট একটি, ১৫ আগস্ট তিনটি, ১৬ আগস্ট ঢাকা ও বগুড়ায় পৃথক দুটি, ১৭ আগস্ট ঢাকা ও চট্টগ্রামে পৃথক তিনটি, ১৮ আগস্ট ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় আটটি, ১৯ আগস্ট ঢাকা ও চট্টগ্রামে চারটি, ২০ আগস্ট ঢাকা, বগুড়া, জয়পুরহাট, রংপুর, ময়মনসিংহ, নারায়ণগঞ্জে ১০টি, ২১ আগস্ট ঢাকায় পাঁচটিসহ গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ ও ফতুল্লা, আশুলিয়া ও চট্টগ্রামে ১০টি, ২২ আগস্ট ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ১০টি, ২৩ আগস্ট ঢাকাসহ সারাদেশে ১৪টি এবং ২৫ আগস্ট বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনাসহ দুটি ছাড়াও রাজধানীতে আরও ১০টি মামলা হয়।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে পড়ে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। ওইদিন শেখ হাসিনা সরকার প্রধানের পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান। এরপর থেকে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে খুন, গুম ও গণহত্যা নিয়ে একের পর এক অভিযোগ উঠতে থাকে।