বাংলাদেশের জনগণ ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দৃঢ় সমর্থন জানিয়ে ১৯৮ বিশ্বনেতার বিবৃতি
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দৃঢ় সমর্থন জানিয়ে ১৯৮ জন বিশ্বনেতা 'বাংলাদেশের জনগণ ও সারা বিশ্বের শুভবুদ্ধির নাগরিকদের জন্য একটি বার্তা'-শিরোনামের একটি বিবৃতি দিয়েছেন। তাদের মধ্যে ৯২ জন নোবেল বিজয়ী রয়েছেন।
গতকাল বুধবার দেওয়া ওই বিবৃতিতে তারা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের নতুন সরকারের প্রতি দৃঢ় সমর্থনের ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, 'একটি নতুন ও উন্নত সভ্যতা বিনির্মাণে বিশ্বকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রচেষ্টাকে সমর্থন দিতে আমরা যেকোনো উপায়ে সাহায্য করতে প্রস্তুত। কারণ অধ্যাপক ইউনূস এ বিষয়ে বারবার আমাদের আহ্বান জানিয়েছেন।'
বিবৃতিতে তারা বলেন, 'আমরা নিম্নস্বাক্ষরকারী ব্যক্তিরা বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রকাশ্যে আমাদের অভিনন্দন ও আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাতে পেরে আনন্দিত। বাংলাদেশের অন্যদের মতো অধ্যাপক ইউনূসও স্বৈরাচারের একজন ভুক্তভোগী।'
বিশ্বনেতারা বলেন, 'বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন ফিরিয়ে আনার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিশ্রুতি ও গণতন্ত্রের বিকাশ ঘটতে দেওয়ার অঙ্গীকারকে আমরা সাধুবাদ জানাই।'
এতে তারা বলেন, 'আমরা বছরের পর বছর ধরে অধ্যাপক ইউনূসকে সমর্থন দিতে পেরে গর্বিত। এটি বাংলাদেশের জন্য একটি আনন্দময় নতুন ভোরের সূচনা। আমরা আগামী মাস ও বছরগুলোতে তার এবং বাংলাদেশের জনগণের শান্তি ও সাফল্য কামনা করি।'
তারা আরও বলেন, 'আমরা অধ্যাপক ইউনূসকে শেষ পর্যন্ত সারা দেশের, বিশেষ করে দেশের সবচেয়ে প্রান্তিক মানুষের উন্নয়নে কাজ করতে দেখে উচ্ছ্বসিত। এই কাজ তিনি ছয় দশক ধরে অত্যন্ত সফলভাবে ও উৎসাহের সঙ্গে করে আসছেন।'
এতে বিশ্বনেতারা বলেন, 'দেশের তরুণেরা যেমন ড. ইউনূসকে অনুপ্রাণিত করেছে, আমরা জানি তেমনি তিনিও তাদেরকে বাংলাদেশের নতুন এক উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে নেতৃত্ব গঠনকে অনুপ্রাণিত করবেন।'
অধ্যাপক ইউনূস ও অন্যান্যরা এই জয়কে বাংলাদেশের 'দ্বিতীয় স্বাধীনতা' হিসেবে আখ্যায়িত করা প্রসঙ্গে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, ব্যবসায়ী রিচার্ড ব্র্যানসন এবং অ্যাক্টিভিস্ট জেন গুডালসহ অন্যান্য নেতারা লিখেছেন, 'আমরা এ ব্যাপারেও আত্মবিশ্বাসী যে নোবেলজয়ী ড. ইউনূস প্রবাসী বাংলাদেশিসহ সারা বিশ্বের লাখ লাখ তরুণকে সমাজের উন্নতির জন্য অনুপ্রাণিত করবেন।'
শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান।
এরপর ছাত্রনেতারা মুহাম্মদ ইউনূসকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্ব দিতে বলেন। গত ৮ আগস্ট ড. ইউনূসসহ তার উপদেষ্টারা শপথ নেন।