দেশের উন্নয়নের ন্যায্য হিস্যা পায়নি শ্রমিকরা: দেবপ্রিয় ভট্টচার্য
অর্থনীতির শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টচার্য বলেছেন, গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের উন্নয়নের ন্যায্য হিস্যা পায়নি শ্রমিকরা। যার কারণ হিসেবে শ্রমিকনেতারা জানিয়েছেন, শ্রমিকদের মজুরি যথোপযুক্ত নয়। সেই সঙ্গে শ্রমিকদের স্বার্থ সুরক্ষায় বাসস্থান, মাতৃত্বকালীন সুবিধাসহ যেসব ব্যবস্থা থাকার কথা, সেগুলোও যথেষ্ট নয়।
আজ সোমবার রাজধানীতে শ্রমিক নেতাদের সাথে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সঙ্গে এই বৈঠক করেন তারা।
দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থা তুলে ধরতে গত ২৮ আগস্ট অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি গঠন করা হয়। সামষ্টিক অর্থনীতির পাশাপাশি খাতওয়ারি পরিস্থিতিও পর্যালোচনা করছে কমিটি।
দেবপ্রিয় বলেন, শ্রমিকনেতাদের অভিযোগ, শ্রমিকদের কল্যাণে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেই।
শ্রমিকদের কল্যাণে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেই বলেও অভিযোগ করেছেন শ্রমিকনেতারা। যেমন ভবিষ্য তহবিলসহ সামাজিক সুরক্ষার অন্য যেসব উপকরণ, সেগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা হয়নি। আইনে শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার থাকলেও তাঁরা নির্বিঘ্নে তা করতে পারছেন না। সেই সঙ্গে যেসব শিল্পকারখানা বন্ধ হয়ে গেছে, সেগুলো চালুর যথাযথ উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। অনেক ক্ষেত্রে সরকারি নিয়ম-নীতির ব্যত্যয় ঘটছে; বড় বড় কায়েমি স্বার্থের প্রভাবে তা হচ্ছে।
বিশিষ্ট এই অর্থনীতিবিদ জানান, শ্রমিকনেতারা আরো অভিযোগ করেছেন যে, আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে দেশের শ্রম আইনের সামঞ্জস্য না হওয়ায় শ্রমিকদের অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। বাংলাদেশে এখন শিল্পক্ষেত্রে আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে শ্রমিকদের অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে।
বৈঠকে শ্রমিকনেতারা নিজেদের আশা-আকাঙ্ক্ষার কথা বলেছেন। দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, শ্রমিকদের এসব আশা-আকাঙ্ক্ষার বিষয় আমলে নেওয়া হবে।
তিনি জানান, 'সরকারি পরিসংখ্যানের যথার্থতা যাচাইয়ে তথ্য ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এখন উদ্যোক্তা, শ্রমিক প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন সামাজিক গোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে। এরপরে বিদেশি বিনিয়োগকারী ও সাহায্যদাতাদের সঙ্গেও আলোচনা হবে। আমরা ঢাকার বাইরেও যাব। চট্টগাম, রাজশাহী ও সিলেটে টাউন হলে বৈঠক হবে। এ সবকিছু সংশ্লেষ করে আমরা খসড়া তৈরি করব। তিন মাসের যে সূচি আমাদের দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে এসব করা হবে।'