সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল অধ্যাদেশ অনুমোদন হতে পারে কাল
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রণয়ন করা 'বিতর্কিত' সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩ বাতিলে নতুন একটি অধ্যাদেশ অনুমোদন করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের সভায় সাইবার নিরাপত্তা আইন (রহিতকরণ) অধ্যাদেশ, ২০২৪' এর খসড়া নীতিগত অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ। বিষয়টি সভার এজেন্ডাভুক্ত করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
সভায় সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্ব করবেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ফেসবুকসহ অনলাইন প্ল্যাটফরমে সরকারবিরোধী কিংবা সরকারের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কিছু লিখলে কিংবা সংবাদ প্রকাশ করলে এ আইনে মামলা করা হতো। এ আইনে অনেক সাংবাদিকের নামে মামলা হয়েছে, অনেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন।
গত চারদলীয় জোট সরকারের সময় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ২০০৬ প্রণয়ন করা হয়। এ আইন সংশোধন করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ প্রণয়ন করে আওয়ামী লীগ সরকার। এ আইনের ৩২ ধারা অনুযায়ী অনলাইনে বিরুদ্ধ মত ও সংবাদ প্রকাশকারীদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা করা হতো।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৩২ ধারা বাতিলের জন্য সুপারিশ করে। পরে বিদেশিদের চাপের মুখে একপর্যায়ে আওয়ামী লীগ সরকার এ আইন বাতিল করে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট, ২০২৩ প্রণয়ন করে। এ আইনে কয়েকটি ধারায় কারাদণ্ডের পরিবর্তে শুধু জরিমানার বিধান করা হয়। অজামিনযোগ্য ধারা কমিয়ে নতুন আইনে জামিনযোগ্য ধারা বাড়ানো হয়।
গত ৩০ সেপ্টেম্বরের তথ্য অনুযায়ী, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এবং সাইবার নিরাপত্তা আইনের অধীনে গত আগস্ট পর্যন্ত দেশের আটটি সাইবার ট্রাইব্যুনালে এখনও পাঁচ হাজার ৮১৮টি মামলা চলমান। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর এসব মামলায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের জামিন দেওয়া শুরু হয় এবং আইনটি বাতিলের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
এর আগে গত সোমবার টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম বলেছিলেন, এক সপ্তাহের মধ্যে সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করা হবে।
তিনি বলেন, এ আইনের অধীনে যত মামলা হয়েছে, সব মামলাও প্রত্যাহার হবে। শুধু এ আইন নয়, মত প্রকাশে বাধা সৃষ্টি করে—এমন সব আইন পর্যালোচনা করা হচ্ছে বলেও জানান নাহিদ ইসলাম।
এছাড়া আগামীকাল উপদেষ্টা পরিষদের সভায় 'ধুমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৪' এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন হতে পারে। গত দুটি সভায় এ অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদনের জন্য এজেন্ডাভুক্ত হলেও তা অনুমোদন পায়নি।