জিরো পয়েন্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে বিএনপি-যুবদল
আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ মিছিল প্রতিহত করতে আজ (১০ নভেম্বর) সকাল থেকেই রাজধানীর গুলিস্তানের জিরো পয়েন্ট মোড়ে অবস্থান নিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। অপরদিকে গুলিস্তানের বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে অবস্থান নিয়েছেন বিএনপি-যুবদল-মহিলা দলসহ দলটির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
রোববার (১০ নভেম্বর) সকাল থেকেই গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট ও বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে ও স্লোগান দিতে দেখা যায় তাদের। তবে রাস্তায় যান চলাচল অনেকটাই স্বাভাবিক রয়েছে।
শহীদ নূর হোসেনের স্মরণে ও 'অগণতান্ত্রিক শক্তির অপসারণ এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার' দাবিতে আজ রোববার বিকাল ৩টায় জিরো পয়েন্টে বিক্ষোভ মিছিল করার ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। অপরদিকে আওয়ামী লীগের বিচারের দাবিতে দুপুর ১২টায় একই স্থানে গণজমায়েতের ঘোষণা দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল ৮টা থেকেই জিরো পয়েন্ট মোড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা অবস্থান করছেন। তারা আওয়ামী লীগবিরোধী বিভিন্ন মিছিল করছেন। পাশাপাশি গণজমায়াতের জন্য তাদেরকে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেইটের সামনে প্রধান সড়কের ওপর অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করতে দেখা গেছে। এজন্য গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট থেকে স্টেডিয়ামমুখী রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে অন্যান্য রাস্তায় যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
এদিকে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শনিবার (৯ নভেম্বর) রাত থেকেই অবস্থান নিয়েছেন বিএনপি ও তাদের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। রোববার সকালে সেখানে বিএনপি, যুবদল ও মহিলা দলের বিভিন্ন শাখা ও ইউনিটের নেতাকর্মীদের মিছিল ও অবস্থান করতে দেখা যায়। তাদেরও আওয়ামী লীগবিরোধী স্লোগান দিতে শোনা যায়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সদস্যদেরও সতর্ক অবস্থানে দেখা গেছে। গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট ও বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউত বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি জিরো পয়েন্টে একটি জলকামান এবং বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে একটি জলকামান ও রায়ট কার দেখা গেছে। বিজিবি সদস্যদের গাড়ি নিয়ে পুরো এলকা টহল দিতে দেখা গেছে।
অন্যদিকে শনিবার রাত ও রোববার সকালে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে আওয়ামী লীগের সমর্থক সন্দেহে কয়েকজনকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা।
পল্টন থানা সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাতে ৭ জন ও রোববার সকালে ১০ জনকে আটক করে থানায় আনা হয়েছে।
পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী নাছিরুল আমিন বলেন, কিছু লোক আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়েছিল। ছাত্র-জনতা তাদের ধরে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে।
এর আগে শনিবার রাতে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, 'কোনো নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন যদি সমাবেশ করার চেষ্টা করে, তাহলে আমরা সেটি কঠোরভাবে প্রতিহত করবো। নগরীর শৃঙ্খলা রক্ষা করার জন্য ডিএমপি বদ্ধপরিকর। সেরকম প্রস্তুতি আমাদের থাকবে।'
তিনি আরো বলেন, যেকোনো সমাবেশ করার জন্য ডিএমপি থেকে অনুমতি নেওয়ার ব্যাপার রয়েছে। অনুমতি ব্যাতীত কেউ সমাবেশ করার চেষ্টা করলে আমরা সেটা কঠোর হস্তে দমন করবো। এ নিয়ে আমাদের নিজস্ব পরিকল্পনা রয়েছে। ঢাকা শহরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে।