দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার ১০ বছরের সাজা স্থগিত
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার ৫ বছরের সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
আজ (১১ নভেম্বর) ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
একইসঙ্গে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়াকে আপিল করার অনুমতিও দিয়েছেন আদালত। দুই সপ্তাহের মধ্যে মামলার সারসংক্ষেপ দাখিলেরও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারকরা।
এর আগে গতকাল (১০ নভেম্বর) দুর্নীতি দমন কমিশনের একজন আইনজীবী বলেন, জিয়া অরফানেজ থেকে কোনো অর্থ আত্মসাৎ করা হয়নি।
খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের করা দুটি লিভ-টু-আপিলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজকের রায় দেওয়া হলো। ওই আবেদনে তিনি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তার কারাদণ্ড বাড়িয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায়কে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় রায় দেন বিশেষ জজ আদালত-৫। রায়ে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে ৫ বছরের সাজা ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরই হাইকোর্টে আপিল করেন খালেদা জিয়া।
ওই আপিলের ওপর শুনানি শেষে ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর খালেদা জিয়ার সাজা বাড়িয়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর ২০১৯ সালে আপিল বিভাগে পৃথক দুটি লিভ টু আপিল করেন খালেদা জিয়া।
২০০৮ সালের জুলাইয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলা দায়ের করে। ওই মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে এতিমদের অনুদান হিসেবে পাওয়া ২.১০ কোটি টাকার বেশি অপব্যবহার করার অভিযোগ আনা হয়।
২০১১ সালের আগস্টে খালেদাসহ চারজনের বিরুদ্ধে অজ্ঞাত উৎস থেকে ট্রাস্টের তহবিল সংগ্রহ এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে তেজগাঁও থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা দায়ের করে দুদক।
৭৮ বছর বয়সি সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট, চোখের সমস্যা ও কোভিড-পরবর্তী জটিলতাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন।
করোনভাইরাস প্রাদুর্ভাব হলে সরকার ২০২০ সালের ২৫ মার্চ খালেদা জিয়াকে তার গুলশানের বাড়িতে থাকবেন এবং দেশ ছেড়ে যাবেন না, এই শর্তে নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে সাময়িকভাবে কারাগারমুক্তি দেয়।
এরপর থেকে পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তার মুক্তির মেয়াদ প্রতি ছয় মাস পরপর বাড়ানো হয়েছে।