বিমানবন্দর-কমলাপুর মেট্রোরেল নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে
দেশে প্রথমবারের মতো বিমানবন্দর-কমলাপুর রুটে ভূগর্ভস্থ মেট্রো রেলের নির্মাণ কাজ চলছে। ২০২৮ সালের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ইউটিলিটি পরিষেবাগুলো স্থানান্তর করা হচ্ছে।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবদুর রউফ আজ বাসস'কে বলেছেন, রাজধানীর যানজট নিরসনে এবং পরিবেশবান্ধব যাত্রীসেবা উন্নত করতে যথাসময়ে এমআরটি লাইন-১ চালু করা হয়েছে।'
তিনি বলেন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের মধ্যে ৩১.২৪১ কিলোমিটার দীর্ঘ এমআরটি লাইন-১-এর দুটি অংশ থাকবে। বিমানবন্দর এবং পূর্বাচল রুট।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরও বলেন, ডিএমটিসিএল প্রকল্পের বাস্তবায়নকারী সংস্থা হিসেবে কর্তৃপক্ষ এমআরটি লাইন-১ নির্মাণের জন্য বিভিন্ন ঠিকাদারদের নিয়োগ করেছে।
এমআরটি লাইন-১ প্রকল্পের বিবরণ অনুযায়ী, ১৯.৮৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ ভূগর্ভস্থ বিমানবন্দর রুটে ১২টি স্টেশন এবং ১১.৩৬৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড পূর্বাচল রুটে ১টি ভূগর্ভস্থ স্টেশনসহ ৯টি স্টেশন থাকবে।
বিমানবন্দর-কমলাপুর রুটের সঙ্গে সমন্বয়ের জন্য পূর্বাচল রুটের ৯টি স্টেশনের মধ্যে ৭টি এলিভেটেড এবং দু'টি (নোদ্দা ও নাতুন বাজার) ভূগর্ভস্থ স্টেশন থাকবে।
প্রকল্পের বিস্তারিত বিবরণে বলা হয়েছে, মেট্রোরেল লাইনের নির্মাণ কাজ ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি উদ্বোধন করা হয়েছিল। ২০১৬-২০১৮ সালে প্রকল্পের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করা হয়েছিল।
প্রকল্প পরিচালক মো. আবুল কাশেম ভূঁইয়া জানান, সম্পূর্ণ এমআরটি লাইন-১ প্রকল্পটি ১২টি প্যাকেজে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রকল্পে মোট ব্যয় হবে ৫৩ হাজার ৯৭৭ কোটি। এরমধ্যে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) প্রকল্প সহায়তা হিসেবে ৩৯ হাজার ৪৫০ কোটি এবং বাংলাদেশ সরকার দিচ্ছে ১৪ হাজার ৫২৭ কোটি টাকা।
প্রকল্পের বিশদ বিবরণে বলা হয়েছে, প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর মেট্রোরেল বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত প্রায় প্রতি ঘন্টায় ৭০ হাজার লোক যাতায়াত করতে পারবে।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এই মেট্রো রেল দিয়ে প্রতিদিন ১৩.৬৬ লক্ষ মানুষ চলাচল করতে পারে, যা বর্তমানে চলমান এমআরটি লাইন-৬ প্রকল্পের তুলনায় প্রায় ২.৮৩ গুণ বেশি।
সরকার যানজট নিরসনে ২০৩০ সালের মধ্যে ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকায় ১৪০ কিলোমিটার মেট্রোরেল নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার লক্ষ্যে মেগা পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে।
একবার যদি ৬ লাইনের সমন্বয়ে গঠিত পরিকল্পিত নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা যায়, তাহলে ৫০ লাখ মানুষ সুবিধাগুলো ভোগ করতে পারবে। শহরের ১২৯ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে প্রায় ৬৮ কিলোমিটার এলিভেটেড এবং একশ'টিরও বেশি স্টেশন থাকবে ৬১ কিলোমিটার ভূগর্ভে।