বকেয়া বেতনের দাবিতে গাজীপুরে বেক্সিমকোর শ্রমিকদের চন্দ্রা–নবীনগর মহাসড়ক অবরোধ
গাজীপুর মহানগরীর কাশিমপুর এলাকায় বকেয়া বেতনের দাবিতে চন্দ্রা–নবীনগর মহাসড়ক অবরোধ করে দিনভর বিক্ষোভ করেছেন বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত শ্রমিকদের অবরোধ অব্যাহত ছিল। এতে সড়কের উভয় পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে সড়কে চলাচলকারী মানুষজন চরম দুর্ভোগে পড়েন।
অন্যদিকে, বকেয়া বেতনের দাবিতে তিন দিন ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বেতন আদায়ের পর শনিবার কাজে যোগ দিয়েছেন মহানগরীর মোগড়খাল এলাকার টিএনজেড কারখানার শ্রমিকেরা।
শনিবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকেরা এক মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে চন্দ্রা–নবীনগর মহাসড়কে অবস্থান নেন। এতে চরম যানজটের সৃষ্টি হয়।
খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরানোর চেষ্টা করেন। শিল্প পুলিশ ও আন্দোলনকারী শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানায়, বেক্সিমকো পার্কে স্টাফসহ ৪১ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। প্রতি মাসে তাদের বেতনের পরিমাণ ৮০ থেকে ৮২ কোটি টাকা।
প্রতিমাসের সাত থেকে ১০ তারিখের মধ্যে বেতন দেওয়া হতো। কিন্তু মালিকপক্ষের কেউ না থাকায় এখন বেতন ঠিকমতো দেওয়া হচ্ছে না।
তাই শ্রমিকেরা গত বৃহস্পতিবার থেকে আন্দোলন শুরু করেন। গতকাল শুক্রবার থাকায় আন্দোলন স্থগিত ছিল। শনিবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে তারা চন্দ্রা–নবীনগর সড়ক অবরোধ করেন।
সূত্র জানায়, গাজীপুর মহানগরীর কাশেমপুর থানাধীন সারোবো এলাকায় বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের ভেতরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শিল্প উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের মালিকানাধীন কয়েকটি শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর থেকে শ্রমিকেরা প্রতি মাসের বেতনসহ অন্যান্য দাবি আদায়ের জন্য আন্দোলন করে আসছেন।
চলতি মাসেও আশপাশের প্রায় সব কারখানার বেতন পরিশোধ করা হয়েছে। কিন্তু মাসের ১৬ তারিখ পেরিয়ে গেলেও বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকেরা বেতন পাননি।
বেতন না পাওয়ায় শনিবার সকাল থেকে কয়েক হাজার শ্রমিক কারখানার ফটকে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে কারখানার সামনে থেকে চন্দ্রা–নবীনগর সড়কে অবস্থান নেন। এতে সড়কের দু'পাশে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত যানজটের সৃষ্টি হয়।
সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। অনেককে ছোট যানবাহনে চলাচল করতে দেখা যায়।
গাজীপুর শিল্পাঞ্চলের পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার আলম বলেন, 'এক মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধের জন্য কারখানা কর্তৃপক্ষ আগামীকাল রোববার তারিখ দিয়েছিল। কিন্তু শ্রমিকেরা সেই তারিখ মেনে না নিয়েই মহাসড়ক অবরোধ করেছেন।'
'পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শিল্প পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা কাজ করছেন। তারা শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। আশা করা যায় খুব শীঘ্রই সমস্যার সমাধান হবে,' বলেন তিনি।