দেশ আর্থিক সংকটে নেই, তবে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জে রয়েছে: অর্থ উপদেষ্টা
দেশ আর্থিক সংকটে নেই; তবে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। একইসাথে বর্তমান সরকার সব সংস্কার করে যেতে না পারলেও পরের সরকারের জন্য সংস্কারের ফুটপ্রিন্ট রেখে যাবে বলে জানান তিনি।
ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ও ব্র্যাক বিজনেস স্কুল আয়োজিত 'ফাইন্যান্সিয়াল অ্যান্ড ইকোনোমিক রিফর্ম ইন বাংলাদেশ (এফএইআরবি)-২০২৪' শীর্ষ পলিসি ডায়লগ অনুষ্ঠানে অর্থ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। একইসাথে তিনি জানান, বর্তমান সরকার উন্নয়ন কৌশলে পরিবর্তন আনছে।
সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, "সুশাসন ও জবাবদিহিতার অভাবে বেশিরভাগ সরকারি প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। আমরা সুশাসন আনতে চেষ্টা করছি। যা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। কিন্তু আমি পরিস্থিতি নিয়ে খুব একটা হতাশ নই। কারণ বাংলাদেশিরা খুবই দক্ষ ও সৃজনশীল।"
অর্থ উপদেষ্টা জানান, গত পরশু অর্থসচিবসহ কয়েকজন সচিব বসে তথ্য উপাত্ত কীভাবে ঠিক করা যায় সেটি নিয়ে আলোচনা করেছেন। বিশেষকরে মূল্যষ্ফীতি, ঘাটতি, বকেয়া এগুলো ঠিক করার বিষয়ে সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা না থাকার কারণে এমন হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
সালেহউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, "উন্নয়নের সুফল যাতে সবার কাছে পৌঁছায় এবং একটি বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত গোষ্ঠীর মধ্যে যেন সীমাবদ্ধ না থাকে তা নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মানবসম্পদ উন্নয়ন, বিশেষ করে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।"
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, "সরকার আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করার মতো বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে মূল্যস্ফীতি কমাতে এবং বাজারে স্থিতিশীলতা তৈরিতে কাজ করছে। কিন্তু উৎপাদন থেকে সাপ্লাই চেইন পর্যন্ত বেশকিছু ফ্যাক্টর রয়েছে। ব্যবসায়ীদের চাঁদা দিতে হয়; যার ফলে দাম বৃদ্ধি পায়।" এগুলো বন্ধে রাজনৈতিক সমঝোতা জরুরি বলে মনে করেন তিনি।
আলোচনায় আওয়ামী লীগ সরকারের জিডিপির হিসাবে ভুল তথ্যের ব্যবহারের সমালোচনা করেন অর্থ উপদেষ্টা। এর পেছনে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর কোনো জবাবদিহিতা ছিল না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সালেহউদ্দিন আহেমদ বলেন, "পাচারকৃত অর্থ উদ্ধারে কর্মকর্তাদের বিদেশে পাঠানো হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশগুলোর সাথে আলোচনা চলছে। তবে এই অর্থ পুনরুদ্ধার করতে সময় লাগবে। যদিও ভবিষ্যতে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।"
অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেন, "অনেক প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, যার ফিজিবিলিটি স্টাডি হয়নি। অনেক জায়গায় কর অবকাশ দেওয়া হয়েছে। আদানির বিদ্যুতের বিলে কোনো কর ধরা হয়নি। অথচ এই কোম্পানি হাজার হাজার কোটি টাকা বিল নিচ্ছে।"
সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) সংস্কার আনা হবে। প্রতিষ্ঠানটির কর নীতি ও কর প্রশাসন আলাদা করে দেওয়া হবে।