আওয়ামী লীগ সরকারের জিডিপি প্রবৃদ্ধির তথ্যে মারাত্মক গলদ ছিল: দেবপ্রিয়
আওয়ামী লীগ সরকারের জিডিপি প্রবৃদ্ধির তথ্যে মারাত্মক গলদ ছিল বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির চিত্রের সমালোচনা করে তিনি বলেন, 'জিডিপির প্রবৃদ্ধির তথ্যে মারাত্মক গলদ ছিল। তথ্য-উপাত্তে রাজনীতিকরণ করা হয়েছে।'
শনিবার (১৬ নভেম্বর) ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ও ব্র্যাক বিজনেস স্কুল আয়োজিত 'ফাইন্যান্সিয়াল অ্যান্ড ইকোনমিক রিফর্ম ইন বাংলাদেশ (এফএইআরবি)-২০২৪'- শীর্ষক পলিসি ডায়ালগ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি বলেন, 'বিনিয়োগ ছাড়া জিডিপি হতে পারে না। কিন্তু বেসরকারি বিনিয়োগ দীর্ঘদিন ধরে জিডিপির ২৩% এ ছিল। প্রবৃদ্ধি হচ্ছে, কিন্তু রাজস্ব আয় বাড়ছে না।'
তাহলে অর্থ কোথায় গেছে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
তিনি বলেন, 'তাহলে বলতে হবে অর্থ পাচার হয়েছে। অথবা রাজস্ব আদায় হয়নি বা অলক্ষ্যে রয়েছে। মানবসম্পদ উন্নয়ন, স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় বিনিয়োগ হয়নি।
তিনি বলেন, 'দেশের মধ্যে দুর্নীতির পক্ষে এবং সংস্কারের বিপক্ষে অদ্ভুত এক ধরনের কোয়ালিশন হয়েছে। সেই কোয়ালিশনে রাজনীতিবিদ, আমলা ও ব্যবসায়ীরা আছে। এদের সমন্বিতভাবে অলিগার্ক তৈরি হয়েছিল।'
তিনি আরও বলেন, 'শ্বেতপত্র প্রণয়ন করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে অর্থনীতির প্রধান দুটো খাত- ব্যাংকিং খাতে ও এনার্জি খাতে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। এ দুটো খাত পুরো খেয়ে ফেলেছে অলিগার্করা।'
তিনি বলেন, 'অলিগার্করা মাসোহারা দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রতিনিধি রেখেছে। ব্যাংক খাতের কর্পোরেট গভর্নেন্স পুরো ভেঙে ফেলা হয়েছে। রাজনৈতিক বিবেচনায় অলিগার্কদের সুবিধার্থে ব্যাংকে পরিচালক নিয়োগ করা হয়েছে।'
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, 'এই মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা। অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা রক্ষা করতে না পারলে; অর্থাৎ এক্সচেঞ্জ রেট স্থিতিশীল রাখা, পণ্যমূল্য স্থিতিশীল রাখা না গেলে সংস্কারের জন্য মানুষের ধৈর্য থাকবে না। এজন্য স্থিতিশীলতা সৃষ্টিতে আরও জোর দিতে হবে। আর সংস্কার ঠিকমতো না হলে ডেমোক্রেটিক ট্রান্সফরমেশনও কঠিন হবে।'
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ব্র্যাক বিজনেস স্কুলের অ্যাসোসিয়েট ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মাদ মুজিবুল হক। তিনি ব্যাংক, পুঁজিবাজার, রাজস্বসহ বিভিন্ন খাতে সংস্কার প্রস্তাব করেন। উদ্বোধনী পর্বের পরে আরও কয়েকটি পর্বে এই পলিসি ডায়ালগ শেষ হয়।