বিএনপি ক্ষমতায় গেলে প্রতিষ্ঠান, স্থাপনাগুলোর নামকরণ শহীদদের নামে করা হবে: তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, জনগণের সমর্থন নিয়ে বিএনপি আবারো ক্ষমতায় এলে– শহীদদের নামে বিভিন্ন এলাকার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর নামকরণ করা হবে।
তিনি বলেন, 'ভবিষ্যতে ইনশাআল্লাহ জনগণের সমর্থন নিয়ে বিএনপি সরকার গঠনে সক্ষম হবে। যারা শহীদ হয়েছেন, যারা স্বৈরাচারদের বিদায় করার জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন– এরকম প্রতিটি মানুষের নামে বিভিন্ন এলাকায় রাষ্ট্রের যে প্রতিষ্ঠান, স্থাপনাগুলো তৈরি হবে, এই মানুষগুলো যাতে হারিয়ে না যায় – তাই এই শহীদদের নামে নামকরণ করার প্রস্তাব করা হবে।'
আজ সোমবার (১৮ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে 'আমরা বিএনপি পরিবার' আয়োজিত চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে পঙ্গুত্ববরণকারী ছাত্র-জনতা ও দুস্থদের মাঝে হুইলচেয়ার বিতরণ অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি দেওয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেছেন, "আমরা সকলে যদি সকলের সহযোগিতায় এগিয়ে আসি— তাহলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আজ নাহলে কাল, কাল না হলে পরশু –- আমরা যেরকম একটি বাংলাদেশ নিজেদের মনে কল্পনা করি, সেরকম স্বপ্নের একটা বাংলাদেশের সূচনা দেখতে সক্ষম হব।"
আন্দোলন বাদেও সামাজিকভাবে বহু মানুষ আছেন — যাদের বিভিন্নভাবে জন্মগত কারণেই হোক বা অসুখেই হোক পঙ্গুত্ববরণ করতে হয়েছে। তাঁদের কথা উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশের সামাজিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে যদি পরিবারের কোন মানুষ পঙ্গু হয়ে থাকে, সে ব্যক্তি পরিবারের কাছে একটি বোঝার মতো হয়ে থাকে। সেই পরিবারের কষ্ট অনেক বেড়ে যায়। জনগণের সমর্থনে বিএনপি ইনশাআল্লাহ আগামীতে সরকার গঠনে সক্ষম হলে– সরকারের পক্ষ থেকে আলাদাভাবে আমাদের একটা উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য থাকবে। সমগ্র বাংলাদেশে, সে যে পরিবারের সদস্য হোক, স্বচ্ছল বা অস্বচ্ছ্ল হোক, আমাদের পক্ষ থেকে চেষ্টা করব– যেসকল পরিবারে এরকম সদস্য আছে, তাদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে। যাতে করে সে পঙ্গু মানুষগুলো নিজেরা যতটুকু সম্ভব স্বাবলম্বী হতে পারে।
নেতাকর্মীসহ দেশবাসীকে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের সকল মানুষকে আমি বলতে চাই, কারো মাধ্যমে যাবার দরকার নাই; আপনি নিজে যদি মনে করেন, আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী একজন হোক, দুইজন হোক, পাঁচজনকে হোক — আপনি কিছুটা হলেও সাহায্য করতে পারবেন – সে মানুষটাকে চলাফেরায় হোক বা অন্যভাবে হোক স্বাবলম্বী করে দেয়ার, দয়া করে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিবেন। কোন সংগঠনের সাথে জড়িত হবার দরকার নেই। আপনি নিজ উদ্যোগে, নিজ অবস্থান থেকেও করতে পারেন। আমরা সকলে যদি সকলের সহযোগিতায় এগিয়ে আসি তাহলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। আজ নাহলে কাল, কাল নাহলে পরশু আমরা যেরকম একটি বাংলাদেশ নিজেদের মনে কল্পনা করি— সেরকম একটা বাংলাদেশের সূচনা দেখতে সক্ষম হব।
তারেক রহমান বলেন, এই মুহুর্তে দেশ যে স্বৈরাচারমুক্ত বা এটি অর্জন করার জন্য সমগ্র বাংলাদেশে দলমত নির্বিশেষে অনেক মানুষ, অনেক ক্ষেত্রে রাজনৈতিক কর্মী অনেক ক্ষেত্রে অরাজনৈতিক কর্মী বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সকল মানুষকে কতটুকু সাহায্য করা সম্ভব ব্যক্তিগতভাবে আমি জানি না। আমরা হয়তো কেউই জানি না। কিন্তু যে মানুষগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, যারা শহীদ হয়েছেন- যারা শহীদ হয়েছেন তারা তো চলেই গেছেন, তাদের পরিবারের মানুষরা রয়ে গেছেন; যারা বিভিন্নভাবে আহত হয়েছেন, পঙ্গুত্ববরণ করেছেন তাদের পাশে কতটুকু দাঁড়াতে পারব— আমি বলতে পারবো না। কিন্তু, আমি মনে করি তারা দেশের জন্য, আমাদের জন্য আত্মত্যাগ করেছেন; আমাদের দ্বায়িত্ব আমাদের কর্তব্য যতটুকু সম্ভব তাদের পাশে দাঁড়ানো।
অনুষ্ঠানে 'আমরা বিএনপি পরিবার' সংগঠনের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও বিএনপি পরিবারের প্রধান পৃষ্ঠপোষক এডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, বিএনপির কোষাধ্যক্ষ ও বিএনপি পরিবারের উপদেষ্টা এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত প্রমুখ।