নির্বাচন যত দেরিতে হবে, দেশের সমস্যা তত বাড়বে: তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, দেশের নির্বাচন যতই দেরিতে হবে, সমস্যাগুলোও ততই বাড়বে। ষড়যন্ত্রও বাড়বে। জনগণের অভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচারকে হটিয়ে দেওয়া হয়েছে। যার বিরুদ্ধে দেশের কোটি কোটি মানুষ এক যুগের বেশি সময় ধরে আন্দোলন করেছে, সেই স্বৈরাচার কিন্তু বসে নেই। সেই স্বৈরাচার তাদের দেশি-বিদেশি প্রভুদের সাথে মিলে ষড়যন্ত্র করেই যাচ্ছে।
তিনি বলেন, বিএনপি-সহ রাজনৈতিক দলগুলো আন্দোলন করেছিল স্বৈরাচার মুক্ত দেশ গড়তে। আন্দোলন হয়েছিল- মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য, কথা বলার অধিকারের জন্য, মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি প্রতিষ্ঠা করার জন্য। সেই লক্ষ্যকে বাস্তবায়নের জন্য নির্বাচন প্রয়োজন। দেশের মানুষের ক্ষমতা দেশের মানুষের কাছে ফিরিয়ে দিতে নির্বাচন প্রয়োজন।
তারেক রহমান বলেন, 'নির্বাচন যত দেরিতে হবে, এই দেশের মানুষের স্বাস্থ্যসুবিধা, এই দেশের ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষাব্যবস্থা, এই দেশের কৃষকদের সমস্যা, এই দেশের ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সমস্যা, এই দেশের বিচারব্যবস্থার সমস্যা, এই দেশের প্রশাসনের সমস্যা, যতগুলো সমস্যা এই স্বৈরাচার করে গিয়েছে, তা আরও বৃদ্ধি পাবে। একমাত্র একটি নির্বাচনের মাধ্যমেই সম্ভব ধীরে ধীরে দেশের সমস্যাগুলোর সমাধান করা।'
আজ শনিবার (২৩ নভেম্বর) চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসাবে ভার্চুয়ালি দেওয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেছেন তিনি। দুপুর আড়াইটার দিকে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্য এই বক্তব্য প্রদান করেন তারেক রহমান।
নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে তারেক রহমান বলেন, এ দেশের ২০ কোটি মানুষ আপনাদের দিকে তাকিয়ে আছে। আপনাদের কাঁধে কত বড় কত দায়িত্ব— তা অনুধাবন করতে হবে। দায়িত্ব, আচরণ কী করা উচিত, আর কি কারা উচিত নয়– এটি বুঝতে সক্ষম হলে, দেশের মানুষ আপনাদের সাদরে গ্রহণ করবে। দুই বছর আগে আমরা ৩১ দফা আমরা তুলে ধরেছিলাম, তা পূরণ করতে হবে। বাংলাদেশ আজ স্বৈরাচার মুক্ত হয়েছে। স্বৈরাচার মুক্ত হওয়ার হওয়ার পর অন্তবর্তীকালীন সরকার দেশ পরিচালনা করছে। সব রাজনৈতিক দল দেশ স্বৈরাচার মুক্ত করতে আন্দোলনে নেমেছিল। অধিকার আদায়ের জন্য এক যুগেরও বেশি সময় ধরে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে আন্দোলন পরিচালনা করছিল।
দীর্ঘ ১৪ বছর পর চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সম্মেলন শুরু হয়েছে। এর আগে আজ সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় সংগীত বাজিয়ে - জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। এসময় দলীয় সংগীত পরিবেশন করেন জেলা জাসাসের নেতা-কর্মীরা। চুয়াডাঙ্গা টাউন ফুটবল মাঠে জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির আয়োজনে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
দলীয় নেতা-কর্মীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে সম্মেলন স্থল। সম্মেলন ঘিরে বিএনপিসহ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের মাঝে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে।
সম্মেলনে জেলার নতুন নেতাদের নির্বাচিত করবেন ৮০৮ জন ভোটার। প্রতিনিধি প্রায় ১২ হাজার। সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত আছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, খুলনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বাবু জয়ন্ত কুমার কুন্ডু। সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা।
চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আহবায়ক মাহমুদ হাসান খান বাবু সম্মলেনে সভাপতিত্ব করছেন। সম্মেলন সঞ্চলনা করেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব শরীফুজ্জামান শরীফ।
২০১০ সালের ২ ডিসেম্বর চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতি হাজি মোজাম্মেল হক ও সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বিশ্বাস নির্বাচিত হন।