প্যান্ডোরা পেপার্সে উঠে এসেছে যে ৮ বাংলাদেশির নাম
গত সোমবার রাতে প্যান্ডোরা পেপার্সের একটি নথিমালা প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে উঠে এসেছে ৮ বাংলাদেশির নাম। এরা সকলেই ব্রিটিশ ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জে বিভিন্ন কোম্পানির মালিক।
অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের একটি জোট- ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টস (আইসিআইজে) ধনী অভিজাতদের অফশোর সম্পদের রহস্য উন্মোচন করতে প্যান্ডোরা পেপার্স নামক নথিভাণ্ডার তৈরি করে।
তাদের প্রকাশিত নতুন তালিকায় উঠে এসেছে ৭ লাখ ৪০ হাজার ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম।
এ তালিকায় যেসব বাংলাদেশির নাম পাওয়া গেছে তারা বাংলাদেশ ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া ও আর্জেন্টিনাসহ বিভিন্ন দেশের ঠিকানা ব্যবহার করেছেন।
তবে প্যান্ডোরা পেপার্সে নাম উঠে আসা সকলেই অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন বা পাচার করেছেন এমন নয়। এটি ফাঁসকারী সাংবাদিকরাই খোদ একথা বলেছেন।
প্যান্ডোরা পেপার্সের দ্বিতীয় কিস্তিতে রয়েছে নিহাদ কবির নামে এক বাংলাদেশির নাম। রাজধানী ঢাকার ইন্দিরা রোডে তার বাড়ির ঠিকানা দেওয়া হয়েছে। তিনি মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্সের বর্তমান সভাপতি বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ব্রিটিশ ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জে ক্যাপিটাল ফেয়ার হোল্ডিং লিমিটেড নামে একটি কোম্পানি গঠন করেছেন নিহাদ কবির। ২০০৮ সালের আগস্টে কোম্পানিটি সেখানে নিবন্ধন নেয়।
প্যান্ডোরা পেপার্সে মঞ্জুরুল ইসলাম নামে আরেক বাংলাদেশির নাম রয়েছে। ব্রিটিশ ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জে তার মালিকানায় থাকা কোম্পানির নাম ওরিয়েন্টাল এগ্রিকালচারাল কেমিক্যাল কোম্পানি। কোম্পানি নিবন্ধনের সময় তিনি ঢাকার গুলশান এবং যুক্তরাজ্যের একটি ঠিকানা ব্যবহার করেছেন।
অন্যান্য যাদের নাম এসেছে তারা হলেন: সাইদুল হুদা চৌধুরী, অনিতা রানি ভৌমিক, সাকিনা মিরালি, মোহাম্মদ ভাই, ওয়াল্টার প্রহমাদ এবং ড্যানিয়েল আর্নেস্টো আয়ুবাত্তি।
এদের মধ্যে সাইদুল হুদা, সাকিনা ও মোহাম্মদ ভাই গুলশানের ঠিকানা ব্যবহার করেছেন। অনিতা রানি দিয়েছেন চকবাজারের ঠিকানা।
সাইদুলের মালিকানাধীন কোম্পানির নাম বেবেন ইন্টারন্যাশনাল। অনিতার মালিকানায় এন্টারপ্রাইজ হোল্ডিং লিমিটেড, সাকিনার মুন রেকার সার্ভিসেস কর্পোরেশন, মোহাম্মদ ভাইয়ের ১৯৩৬ হোল্ডিংস লিমিটেড, প্রহমাদের স্লিন্ট লিঙ্ক এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড এবং ড্যানিয়েলের মালিকানাধীন কুডেল লিমিটেড।
এর আগে প্রকাশিত প্যান্ডোরা পেপার্সের প্রথম কিস্তিতে বাংলাদেশি ব্যবসায়ী আব্দুল আওয়াল মিন্টুসহ এক নেপালি ব্যবসায়ীর নাম ছিল।
আইসিআইজে প্যান্ডোরা পেপার্সের তথ্য জনসম্মুখে প্রকাশ না করলেও সংশ্লিষ্টদের সাথে তা বিনিময় করেছে।
প্রায় এক কোটি ২০ লাখ নথি নিয়ে গঠিত প্যান্ডোরা পেপার্স। এসব নথিতে রয়েছে অর্থপাচার, করফাঁকি এবং ধনী ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক এবং প্রভাবশালীদের গোপন সম্পদের মতো তথ্য। বেশ কয়েক মাস ধরে ১১৭টি দেশের প্রায় ৬০০ সাংবাদিক এসব নথি সংগ্রহ করেছেন।