শাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পরিচ্ছন্নতা অভিযান, প্রতিবাদী গান
গানে গানে উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমদের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শনিবার সন্ধ্যায় ক্যাম্পাসে প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এর আগে বিকেলে ক্যাম্পাসে পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালান আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
গত শুক্রবার বিকেলেই আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দেন, উপাচার্য পদত্যাগ করার আগ পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে। তবে এবার আর অবস্থান বা অনশনের মতো কর্মসূচীতে যাবেন না তারা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, রোড পেইন্টিং, মুক্ত আলোচনার মাধ্যমে প্রতিবাদ চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
ঘোষণা অনুযায়ী, শনিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যান্ড দল নোঙর সঙ্গীত পরিবেশন করে। গানে গানে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি জানান তারা।
এর আগে বিকেলে ক্যাম্পাস পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালান তারা। আন্দোলনের অংশ হিসেবে ক্যাম্পাসের গোলচত্বর থেকে পরিচ্ছন্নতা অভিযানে নামেন শিক্ষার্থীরা।
এসময় পুরো ক্যাম্পাসের ময়লা পরিষ্কার করেন শিক্ষার্থীরা। এ অভিযানে ২০ জনের অধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন। শিক্ষার্থীরা জানান, ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে ৫টি চাষাভুষার টং চালু করা হবে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র মোহাইমিনুল বাশার রাজ বলেন, শাবি ক্যাম্পাসে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, রোড পেইন্টিং বন্ধ করে দিয়েছিলেন উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। এর প্রতিবাদে তার পদত্যাগের পূর্ব পর্যন্ত আমরা প্রতিদিন প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করব। এছাড়া ক্যাম্পাসে রোড পেইন্টিং করা হবে।
তিনি বলেন, "ক্যাম্পাসের প্রতিটি টংয়ের দোকান উপাচার্য বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এর প্রতিবাদে 'চাষাভুষার টং' নামে আমরা একটি টং দোকান চালু করেছি। আরও ৫টি টং খোলা হবে।
"উপাচার্য বিরোধী দীর্ঘ আন্দোলন চলাকালে ক্যাম্পাসে অনেক ময়লা হয়ে গিয়েছিল। আজ আমরা নিজেরাই এই ময়লাগুলো পরিষ্কার করেছি।"
গত ১৩ জানুয়ারি থেকে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রভোস্ট কমিটির পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা।
এরপর ১৬ জানুয়ারি বিকেলে তিন দফা দাবি আদায়ে উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটি ভবনে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে পুলিশ উপাচার্যকে উদ্ধার করতে গেলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সেদিন থেকেই উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে নামেন তারা। এই দাবিতে ১৯ জানুয়ারি থেকে আমরণ অনশন শুরু করেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। তাদের টানা ১৬৩ ঘণ্টার অনশন গত বুধবার ভাঙান এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও অধ্যাপক ইয়াসমিন হক।