প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে খেলার মাঠই থাকছে তেঁতুলতলা মাঠ: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে রাজধানীর কলাবাগান এলাকার তেঁতুলতলা মাঠে থানাভবন নির্মাণ হবে না। ফলে সেটি খেলার মাঠ হিসেবেই থাকবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
আজ সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, "মাঠে চলমান নির্মাণকাজ বন্ধ করা হবে। তবে মাঠের মালিকানায় থাকবে পুলিশ।"
এর আগে তেঁতুলতলা খেলার মাঠ ইস্যুতে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে আসেন নগরবিদ ইকবাল হাবিব ও পরিবেশবিদ সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানসহ বিশিষ্ট নাগরিকরা।
উল্লেখ্য, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ১৭ নং ওয়ার্ডের অধীন তেঁতুলতলা মাঠটি দীর্ঘদিন ধরে শিশুদের খেলার মাঠ হিসেবে এবং জানাজার মতো অন্যান্য সামাজিক কর্মকাণ্ডের জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
এরপর ২০২০ সালে একটি সাইনবোর্ড লাগিয়ে সেখানে থানার জন্য স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে উল্লেখ করে কলাবাগান পুলিশ। বাসিন্দারা অবিলম্বে সেই পদক্ষেপের প্রতিবাদ করে, সাইনবোর্ড অপসারণ করে এবং আগের মতো জায়গাটি ব্যবহার করতে থাকে।
দীর্ঘদিনের চালিয়ে আসা প্রতিবাদের অংশ হিসেবে রোববার (২৪ এপ্রিল) সকাল ১০টা ৪৬ মিনিটে ফেসবুকে এক মিনিট ৩২ সেকেন্ডের জন্য লাইভে তেঁতুলতলা মাঠের পরিস্থিতি সম্প্রচার করেন এলাকার বাসিন্দা সৈয়দা রত্না। রত্না 'তেঁতুলতলা মাঠ রক্ষা'র অন্যতম আন্দোলনকারী।
একপর্যায়ে সৈয়দা রত্না ও তার ছেলে, ১৭ বছর বয়সী মোহাম্মদ ঈসা আবদুল্লাহকে আটক করে পুলিশ। মা-ছেলেকে দীর্ঘ ১০ ঘণ্টার ওপর জেলহাজতে আটকে রাখার পর মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেয় পুলিশ।
এরপর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে, বিশেষত ফেসবুকে এ দুজনের আটকের ঘটনা নিয়ে প্রচুর লেখালেখি হচ্ছে। অপ্রাপ্তবয়স্ক আব্দুল্লাহকে প্রাপ্তবয়স্কদের হাজতে আটক রাখা নিয়ে সর্বত্র ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় ওঠে।
ব্যাপক প্রতিবাদের মুখে কলাবাগান থানা ভবনের জন্য তেঁতুলতলা মাঠের পরিবর্তে বিকল্প জায়গা খোঁজার নির্দেশনা দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। যদিও তখনো মাঠটিতে নির্মাণকাজ অব্যাহত রাখে পুলিশ।
এদিকে থানা ভবনের নির্মাণের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে কলাবাগান তেঁতুলতলা মাঠ স্থানীয় ও শিশু-কিশোরদের ফিরিয়ে দেওয়া না হলে বুধবার কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন মানবাধিকার কর্মী, পরিবেশকর্মী, সাংস্কৃতিক কর্মী ও স্থানীয়রা।
তেঁতুলতলাকে খেলার মাঠ হিসেবে ব্যবহারের নিশ্চয়তা না পাওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা। এরপর মাঠের সীমানা ঘেঁষে ১৪টি দেশীয় গাছ রোপণ করা হয়।