পাবনায় ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পরাজয়
আলোচিত পাবনা সদর উপজেলার ভাঁড়ারা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী মো. আবু সাঈদ খানকে ৫ হাজার ৬০০ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. সুলতান মাহমুদ। এতে দীর্ঘ ২৫ বছর পর চেয়ারম্যান পদ হারালেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ খান।
বুধবার (১৫ জুন) রাত ১১টার দিকে বেসরকারিভাবে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেন সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা কায়ছার মোহাম্মদ।
বেসরকারি ফলাফলে মোট ১৬টি কেন্দ্রের মধ্যে নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আবু সাঈদ খান পেয়েছেন ১১ হাজার ৩৩৭ ভোট। বিজয়ী প্রার্থী মো. সুলতান মাহমুদ ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ১৬ হাজার ৯৩৭ ভোট। ভোট পড়েছে ২৯ হাজার ৪৬টি। বাতিল হয়েছে ৭৭২টি ভোট। বৈধ ভোটের সংখ্যা ২৮ হাজার ২৭৪টি। প্রাপ্ত ভোটের হার ৭৫ দশমিক ৯২।
বুধবার (১৫ জুন) সকাল ৯টা থেকে শুরু হয় বহুল প্রতীক্ষিত ভাঁড়ারা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। বিরতিহীনভাবে চলে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। সকাল থেকেই কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন ছিল। নানা শঙ্কার মধ্যেও পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে তারা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
পাবনা নির্বাচন দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৭ সালের ৪ ডিসেম্বর 'আতঙ্কের জনপদ' খ্যাত ভাঁড়ারা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে গোলাম মোস্তফা কফিলকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন আবু সাঈদ খান। এরপর তিনি একাধারে চারবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। সর্বশেষ ২০১৬ সালে তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে সুলতান মাহমুদকে পরাজিত করেন।
পাবনা সদর উপজেলার নির্বাচন অফিসার ও নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা কায়ছার আহমেদ বলেন, 'নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু হয়েছে। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এর আগে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের জন্য এতো নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বলতে গেলে ৩-৪টি ইউনিয়ন পরিষদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাজানো হয়েছিল শুধু এই ইউনিয়নকে ঘিরে। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে ভোটকেন্দ্রে পাঁচ শতাধিক পুলিশ ও আনসার মোতায়েনের পাশাপাশি বিজিবি, র্যাব, পুলিশের মোবাইল টিম, স্ট্রাইকিং, স্ট্যান্ডবাই ফোর্স মোতায়েন করা ছিল। নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করায় সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১১ ডিসেম্বর নির্বাচনী প্রচারণার সময় পাবনা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী আবু সাঈদ খানের লোকজনের সঙ্গে সংঘর্ষে আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থী ইয়াসিন আলম (৩৫) নিহত হন। এ ঘটনায় ওই বছরের ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য ভাঁড়ারা ইউনিয়ন পরিষদের সব পদের (চেয়ারম্যান, সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য, সাধারণ ওয়ার্ড সদস্য) নির্বাচন স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। পরে গত ২৮ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন থেকে ১৫ জুন ভোটগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করে তফসিল ঘোষণা করা হয়।