পদ্মা সেতু উদ্বোধন: দক্ষিণাঞ্চলে চলছে উৎসব কর্মসূচী
স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে দেশব্যাপী আয়োজনের অংশ হিসেবে ফরিদপুর, খুলনা, সাতক্ষীরা ও বরিশালের বেশ কয়েকটি এলাকায় প্রজেক্টরে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখানো হয়েছে। সকাল থেকেই প্রজেক্টর ভেন্যুতে ভিড় জমান সর্বস্তরের মানুষ।
ফরিদপুর
ফরিদপুর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী কর্মসূচি শুরু হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে আজ (২৫ জুন) সকাল ৯টায় একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয় শহরে।
ফরিদপুর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে র্যালিটি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ঘুরে শেখ জামাল ষ্টেডিয়ামে গিয়ে শেষ হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার, পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান (অতিরিক্ত ডিআইজি পদোন্নতি প্রাপ্ত)সহ বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারবৃন্দ। এছাড়া, বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরাও র্যালিতে অংশ নেয়।
এর আগে জেলা পুলিশ এর তরফ থেকে একটি বর্নাঢ্য র্যালির আয়োজন করা হয়য়। পুলিশ লাইনস থেকে শুরু হয়ে শহর প্রদক্ষিণ করে সেই র্যালি।
এদিকে শহরের শেখ জামাল ষ্টেডিয়ামে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে। শহরজুড়ে এক উৎসবমূখর পরিবেশ বিরাজ করছে।
ফরিদপুর জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, আজ ও আগামীকাল নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
আজ বিকেলে দেশবরেণ্য শিল্পীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। আগামীকাল পদ্মা সেতু নিয়ে কবিতা, গল্প ও ছবি আঁকা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। এদিন বিকেলেও থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
বরিশাল
অন্যদিকে, বরিশালেও উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে।
বরিশালের আমতলা এলাকার বাসিন্দা মশিউর বলেন, "আমার বাড়িতে টেলিভিশন থাকলেও আমি এখানে সবার সাথে অনুষ্ঠান উপভোগ করতে এসেছি। এটা আমাদের জন্য একটি আনন্দ উদযাপন।"
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে; বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলের শহরগুলোতে।
এছাড়া, দক্ষিণাঞ্চলের অনেক শহরই এখন বেশ ফাঁকা। পদ্মা সেতুর উদ্বোধন দেখতে অনুষ্ঠানে উপস্থিত আছেন অনেকেই।
সাতক্ষীরা
পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে ঘিরে সাতক্ষীরার চায়ের দোকানে উন্মাদনা। এলাকার যুবক-তরুণরা মোবাইলে লাইভ দেখলেন পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান।
আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকেই মোবাইল হাতে বসে পড়েন তারা। জেলার তালা সদরের মাঝিয়াড়া বাজারে একটি চায়ের দোকানে দেখা যায় এমন চিত্র।
সেখানে মোবাইল ফোনে ভিডিওর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখছিলেন তারা। এদের মধ্যে একজন মতিয়ার রহমান সরদার। তিনি বলেন, "এখন থেকে আমাদের অঞ্চলের মানুষের অর্থনৈতিকভাবে উন্নতি হবে। আগে ঢাকায় যেতে ফেরীঘাটে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হতো। এখন আর তার প্রয়োজন হবে না।"
অন্যদিকে, শহরের আব্দুর রাজ্জাক পার্কে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি বড় পর্দার মাধ্যমে দেখিয়েছে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন।
শনিবার সকাল ৯টা থেকেই জেলা প্রশাসনের আয়োজনে শুরু হয় র্যালি। বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা র্যালি শেষে যোগ দেন শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে। সেখানেই সরাসরি দেখানো হয় পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সকল আয়োজন।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানসহ জেলার শীর্ষ পর্যায়ের সকল সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারি, বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ যোগ দিয়েছেন এ আয়োজনে। এছাড়া সন্ধ্যায় আয়োজন করা হয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের।
মোংলা
পদ্মা সেতুর উদ্বোধন ও খুলে দেওয়া উপলক্ষ্যে মোংলা উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে আনন্দ মিছিল ও র্যালি বের করা হয়েছে।
বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীসহ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কর্মচারীদের অংশগ্রহণে বর্নাঢ্য এ আনন্দ র্যালি ও পথসভা অনুষ্ঠিত হয়।
উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে বড় পর্দায় সরাসরি সম্প্রচারিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠান উপভোগ করেন শিক্ষক শিক্ষার্থীসহ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও জনসভায় যেতে না পারা অনেকে।
এদিকে সড়ক ও নৌ-পথে কাঁঠালবাড়ি জনসভা স্থলে যোগ দেন মোংলার লক্ষাধিক মানুষ। বাস, মটরসাইকেল, মাইক্রোবাস, লঞ্চ, ইঞ্জিনচালিত শতাধিক ট্রলারযোগে ভোর থেকেই সভায় যোগ দেন এই এলাকার লোকেরা।