'টুঙ্গীপাড়ার মিয়া ভাই' চলচ্চিত্রে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চরিত্রে দীঘি
সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে বেড়ে উঠেছেন প্রার্থনা ফারদিন দীঘি। মা দোয়েল ছিলেন চলচ্চিত্রের নায়িকা। বাবা সুব্রতও অভিনেতা। মেয়ে এই জগতেই ব্যস্ত থাকবেন, এটা তার ছোট বেলাতেই অনুমান করেছিল সবাই।
সেই অনুমান আরও শক্ত হয়েছে ছোট্ট দীঘির একটি বিজ্ঞাপনে অংশ নেওয়ায়। 'ভাইরাল' শব্দ পৃথিবীতে আসার আগেই দীঘি অভিনীত গ্রামীণফোনের 'বাবা জানো, আমাদের একটা ময়নাপাখি আছে না' শিরোনামের বিজ্ঞাপনটি ভাইরাল হয়ে যায়।
এবার সেই দীঘি আসছেন নায়িকা হয়ে। হ্যাঁ, বাংলা চলচ্চিত্রের নায়িকা। অবশ্য নায়িকা হওয়ার আগেই তিনি শিশুশিল্পী হিসেবে দেখা দিয়েছেন ৩০টির বেশি চলচ্চিত্রে। এরমধ্যে 'কাবুলিওয়ালা', 'এক টাকার বৌ' ও 'চাচ্চু আমার চাচ্চু' তাকে এনে দিয়েছে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।
এবার পূর্ণ নায়িকা হয়ে কেমন লাগছে দীঘির?
বললেন, 'এটা আসলে সবার চাওয়া আর আমার ইচ্ছা থেকেই হয়েছে। এই অনুভূতি অবশ্যই ভালো। আট বছর বিরতি দিয়ে আবার ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালাম। এটা আমার জন্য অবশ্যই আনন্দের।'
গত বৃহস্পতিবার এফডিসিতে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের ফটোশুটের ফাঁকে আলাপ হয় তার সঙ্গে। দীঘি জানান, এরইমধ্যে শাপলা মিডিয়া প্রযোজিত পাঁচটি ছবিতে তিনি চুক্তিবন্ধ হয়েছেন। একটির শুটিং শেষও করে ফেলেছেন। শামীম আহমেদ পরিচালিত ওই চলচ্চিত্রের নাম, 'টুঙ্গিপাড়ার মিয়া ভাই'। ছবিটি বঙ্গবন্ধুর কিশোরজীবন ঘিরে। দীঘিকে এখানে দেখা যাবে বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ভূমিকায়। ছবিতে তার বিপরীতে অভিনয় করেছেন নবাগত নায়ক শান্ত খান।
আরও চারটির শুটিং শুরু হবে এ মাসেই। এ ছাড়া চিত্রনাট্য নিয়ে কথা হচ্ছে আরও দুটি চলচ্চিত্রের।
জানতে চাই, মাত্র এইচএসসিতে পড়ছেন। খুব তাড়াতাড়ি কি নায়িকা হয়ে গেলেন?
দীঘি বলেন, 'ক্লাস নাইনে পড়ার সময় থেকেই আমাকে নায়িকা হওয়ার চাপ দিয়ে আসছেন সবাই। কিন্তু আমি সময় নিয়েছি। চেয়েছি, আমার শুরুটা ভালোমতো হোক। আমার চেয়ে আরও কম বয়সে কিন্তু অনেকেই শুরু করেছেন।'
শিশুশিল্পী থেকে নায়িকা, কেমন হবে আগামীর যুদ্ধ?
প্রশ্ন শুনে হাসেন দীঘি। বলেন, "আমি শুনেছি শিশুশিল্পী থেকে নায়িকা হলে অনেকেই পছন্দ করেন না। দর্শকও নাকি ভালোমতো নেয় না। কিন্তু যেখানেই যাচ্ছি, যত মানুষের সঙ্গে কথা বলছি, সবাই খুব ভালোভাবে গ্রহণ করছেন আমাকে। আগে সবাই আমাকে দেখলেই বলত, 'তুমি কবে আসবে? কবে নায়িকা হবে?' তখন মনে হতো, সবাই আমাকে পর্দায় দেখতে চায়।"
শিশুশিল্পী হিসেবে বেশিরভাগ নায়কের সহশিল্পী হয়েছেন দীঘি। এদের কারও সঙ্গে কি নায়িকা হিসেবে অভিনয়ের স্বপ্ন দেখেন?
দীঘি বলেন, 'দেশের কোনো নায়ককে ঘিরে আমার ওরকম কোনো স্বপ্ন নেই। যার সঙ্গে সুযোগ হবে, কাজ করব। তবে আমার স্বপ্নের নায়ক বলিউডের রণবীর কাপুর। স্বপ্নের নায়কের সঙ্গে কে না অভিনয় করতে চায়, বলুন!'
তবে নায়িকা হওয়ার চেয়ে একজন অভিনেত্রী হওয়া দিকেই বেশি নজর দীঘির। বলেন, 'আমি যে ছবিতেই অভিনয় করব, সেটাতে আমার চরিত্র ও অভিনয়ের জায়গা থাকতে হবে। আমি আমার সেরাটা দিয়েই অভিনয় করতে চাই। যে ছবিতে আমার অভিনয় করার জায়গা থাকবে না, সেখানে অভিনয় করতে চাই না। আমি একজন নায়িকা হওয়ার চেয়ে অভিনেত্রী হতে বেশি আগ্রহী।'
তবে নতুন পরিচালকের ছবিতে অভিনয় করতে বেশি আগ্রহী তিনি। তারা এই সময়ের এই প্রজন্মের অনুভূতিটা বুঝবেন বলে দীঘি মনে করেন। অবসর সময়ে সিনেমা দেখেন, সিরিজ দেখেন, বই পড়েন।
'আমি হুমায়ূন আহমেদের মিসির আলীর দারুণ ভক্ত। এ কারণেই সম্ভবত থ্রিলার গল্প আমাকে বেশি টানে। সামনে এ রকম গল্প পেলে খুব আগ্রহ নিয়ে কাজ করব।'
সেই আগ্রহ কতদূর কী হবে, সেটা এখনো জানেন না দীঘি। না জানলেও এরইমধ্যে আরও দুটি ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন- 'একাত্তরের ইতিহাস' ও 'যোগ্য সন্তান'। তা ছাড়া মালেক আফসারীর 'ধামাকা' ও কাজী হায়াতের 'যোগ্য সন্তান' সিনেমার শুটিং এ মাসেই।
সব মিলিয়ে আটঘাট বেঁধেই মাঠে নেমেছেন দীঘি।