রায়া অ্যান্ড দ্য লাস্ট ড্রাগন: ডিজনির নতুন নায়িকা ৬৭ কোটি মানুষের প্রতিনিধি?
সদ্য মুক্তি পাওয়া অ্যানিমেশন ফিল্ম 'রায়া অ্যান্ড দ্য লাস্ট ড্রাগন'-এর কেন্দ্রীয় চরিত্র রায়া সব মানুষকে এক সুতোয় বাঁধার জন্য ঘুরে বেড়ায় এবং এই পৃথিবীকে রক্ষার জন্য চালায় প্রচেষ্টা।
মানবসভ্যতার ভার নিজের কাঁধে তুলে নেওয়ার পাশাপাশি সে আরও একটি বোঝা বয়ে বেড়ায়; তা হলো, একটি সুবিশাল ও বৈচিত্র্যময় অঞ্চলের পরিচয় ধারণ করা।
১১টি দেশ ও ৬৭ কোটি ৩০ লাখ মানুষের আবাসস্থল দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া। এখানে শত শত না হলেও ডজন ডজন ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতির উপস্থিতি রয়েছে, যেগুলো একটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ান পরিচয় বহন করে। এবার প্রশ্ন হলো, ডিজনির এই সাম্প্রতিকতম নায়িকা কি আসলেই এই পরিচয় ধারণ ও বহন করতে সক্ষম?
সিনেমাটির প্রেক্ষাপট কুমন্দ্র নামে একটি কাল্পনিক ভূখণ্ড, যেখানে পাঁচটি আদিবাসী জাতিসত্তার বাস। প্রতিটি জাতসত্তারই রয়েছে নিজস্ব সংস্কৃতি- যেগুলো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন জায়গা থেকে অনুপ্রাণিত।
বিবিসিকে পরিচাল ডন হল জানিয়েছেন, ওই অঞ্চল থেকে অনুপ্রেরণা নিয়েই চলচ্চিত্রটি বানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এটির প্রেক্ষাপট বর্তমানের নয়, বরং হাজারও বছর আগের। তবু এ অঞ্চলের আবহমণ্ডল এই চলচ্চিত্রে নানাভাবেই ফুটে উঠেছে।
এরমধ্যে রয়েছে রায়ার মাথার হ্যাট, যেটি দেখতে অনেকটাই ফিলিপাইনসের একটি ঐতিহ্যগত হেডগিয়ারের মতো।
তার চিরচেনা সাইডকিক এবং 'টুক টুক' নামের পরিবহনটিও এ অঞ্চলের জনপ্রিয় বাহন- রিকশার কথা মনে করিয়ে দেয়।
অন্যদিকে, তার ফাইটিং টেকনিকে রয়েছে মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় চিরপরিচিত ও ঐতিহ্যবাহী মার্শাল আর্ট সিল্যাটের প্রভাব।
এদিকে, অনলাইনে কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন, একটি চলচ্চিত্রের মধ্যে এ অঞ্চলের বিভিন্ন সংস্কৃতির বিভিন্ন অংশ জুড়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা চালিয়েছে 'রায়া অ্যান্ড দ্য লাস্ট ড্রাগন' টিম, যা শেষ পর্যন্ত গোলমেলে হয়ে উঠেছে। অবশ্য চলচ্চিত্রটির যুগ্ম-চিত্রনাট্যকার মালয়েশিয়ান বংশোদ্ভূত অ্যাডেল লিমের দাবি, এ কাজ এখানে বরং একটি 'গভীরতর' রূপ পেয়েছে।
"আমরা যখন সাংস্কৃতিক অনুপ্রেরণার কথা বলি, তার মানে এই নয়, 'এটা'কে 'ওটা'র মতো হতে হবে। বরং কাজটি এই চলচ্চিত্রে আরও গভীর রেখাপাত করেছে," বলেন তিনি।
উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, "যে দৃশ্যে রায়ার জন্য তার বাবা স্যুপ বানায়, সেটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ান হিসেবে আমাদের মন ছুঁয়ে গেছে; কেননা, এই খাবার আমাদের খুবই চেনা।"
এদিকে, জনৈক ইন্দোনেশিয়ান টুইটার ব্যবহারকারী বিবিসিকে বলেছেন, একটি চলচ্চিত্রে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবকিছুর প্রতিনিধিত্ব করা একেবারেই 'অসম্ভব' ছিল; বরং এই চলচ্চিত্রে স্রেফ 'একটি নির্দিষ্ট সংস্কৃতির ওপর ফোকাস' করা হয়েছে।
তবে এটির নির্মাতাদের দাবি, তারা মোটেও কোনো একটি নির্দিষ্ট সংস্কৃতি কিংবা দেশের ওপর ফোকাস করেননি; বরং স্রেফ এ অঞ্চলের কাছ থেকে 'অনুপ্রেরণা' নিয়েছেন।
- সূত্র: বিবিসি