ভারতের আইআইটিতে প্রথমবারের মতো প্রদর্শিত হলো সত্যজিৎ রায়ের অদেখা স্কেচবুক
সত্যজিৎ রায়কে নিয়ে বাঙালির আবেগের শেষ নেই। কিংবদন্তি এই চলচ্চিত্র নির্মাতার সিনেমা তো বটেই, পাশাপাশি তাঁর সৃষ্ট সঙ্গীত, সাহিত্যের প্রতিও সবার আগ্রহ আকাশছোঁয়া। তবে এগুলোর বাইরেও সত্যজিৎ রায়ের আরও একটি বিশেষ দিক রয়েছে, সেটি হলো তাঁর আঁকা স্কেচ। লেখকের বইগুলোতে তার আঁকা চমৎকার স্কেচগুলো দেখে মুগ্ধ হননি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন! সম্প্রতি সত্যজিৎ রায়ের এমন একটি স্কেচবুক প্রকাশ্যে এসেছে যা আগে কখনো দেখা যায়নি।
কিছুদিন আগে ভারতের গান্ধীনগর আইআইটিতে দু'দিনের একটি কমিক কনক্লেভের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে সঙ্গীত মায়েস্ত্রো রবি শঙ্করকে নিয়ে নির্মিত একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়েছে। এ তথ্যচিত্রের সূত্রেই উঠে এসেছে সত্যজিৎ রায়ের স্কেচবুকটিও।
সত্যজিৎ রায়ের 'পথের পাঁচালী' ছবির জন্য সুর দিয়েছিলেন রবি শঙ্কর, একথা সবারই জানা। সেসময় ছবির কারণেই বেশকিছু স্কেচ আঁকেন সত্যজিৎ। যদিও এই বিশেষ স্কেচবুকটি এর আগে অধরাই ছিল, সত্যজিৎ রায়ের পরিবারের সৌজন্যে এবার সেটি প্রকাশ্যে এসেছে।
আইআইটি'র অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে বক্তব্য রাখার জন্য উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক পিনাকী দে, যিনি একই সঙ্গে একজন কমিকস বিশেষজ্ঞ। অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, "এই স্কেচবুকটি এর আগে রায় পরিবারের বাইরে কেউ দেখেননি। সম্প্রতি গবেষণার কাজের জন্য সন্দীপ রায় তাঁর বাবার এই স্কেচবুকটি ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছেন। সে কারণেই এ বিরল সৃষ্টি সকলে দেখতে পাচ্ছেন। এগুলো আলাদা করে আইআইটি'র অনুষ্ঠানের জন্য বেছে রাখা হয়েছে।"
কেন আইআইটি'র অনুষ্ঠানে এই বিশেষ স্কেচগুলো প্রদর্শিত হয়েছে? এ প্রশ্নের উত্তরে পিনাকী বলেন, বর্তমান সময়ে সমাজ, অর্থনীতি, রাজনীতি, লিঙ্গ রাজনীতি, পরিবেশ, মনস্তত্ত্বের মতো সবকিছু নিয়ে মতামত প্রকাশের বড় মাধ্যম হয়ে উঠেছে কমিকস। সে কারণেই এই মাধ্যমটি নিয়ে আলাদা করে কাজ হওয়া দরকার।
"ঠিক সেই সময়ে সত্যজিৎ রায়কে আরও বেশি করে প্রাসঙ্গিক মনে হচ্ছে। তাঁর যেকোনো কাজ ফিরে দেখলেই বোঝা যায়, প্রতিটি কাজের পেছনে কতটা ভাবনা ছিল! ওই সময়ে তিনি যা যা ভাবতে পেরেছিলেন, তা এখনও অনেক প্রাসঙ্গিক", যোগ করেন অধ্যাপক পিনাকী দে।
সত্যজিৎ রায়ের এই স্কেচগুলো শুধুমাত্র কয়েকটি সাধারণ স্কেচ নয়, বরং এগুলো ভারতীয় কমিকসের ক্ষেত্রে বড় মাইলফলক বলে মতামত ব্যক্ত করেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত অনেকেই।