হিন্দি সিনেমায় অশ্লীল গান ও দৃশ্য থাকে: ‘পাঠান’-এর বিরোধিতায় ডিপজল
চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি ভারতজুড়ে মুক্তি পেয়েছে শাহরুখ খান অভিনীত সিনেমা 'পাঠান'। মুক্তির পর থেকেই বাংলাদেশে থাকা বলিউড বাদশাহর অগণিত ভক্ত দেশের প্রেক্ষাগৃহে সিনেমাটি মুক্তির জোর দাবি জানিয়ে আসছেন। এরই মাঝে হিন্দি সিনেমা নিয়ে বিতর্কিত এক মন্তব্য করেছেন ঢালিউডের খল অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজল। হিন্দি সিনেমার গান ও দৃশ্যকে অশ্লীল আখ্যায়িত করে দেশে 'পাঠান' মুক্তির বিরোধিতা করেছেন তিনি। খবর টাইমস অফ ইন্ডিয়ার।
খল নায়ক হিসেবে তুমুল জনপ্রিয় ডিপজলের এ মন্তব্য দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে ভারতের বিনোদন জগতেও আলোচিত হচ্ছে। একইসাথে এ মন্তব্যের জেরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ডিপজলকে নিয়ে বলিউড ভক্তরা পাল্টা উপহাস করছেন।
বহু জল্পনা কল্পনার পর বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে দীর্ঘ আট বছর পর প্রথম বলিউড সিনেমা হিসেবে 'পাঠান' মুক্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের তথ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
একইসাথে বাংলাদেশের সিনেমা সম্পর্কিত ১৯টি সংগঠন বছরে ১০টি করে বলিউড সিনেমা দেশের প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শনের ব্যাপারে একমত হয়েছে। গতকাল (শুক্রবার) 'পাঠান' সিনেমাটি বাংলাদেশে মুক্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তবে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় থেকে ফের জানানো হয়েছে, সাফটা চুক্তির নীতিমালার প্রক্রিয়া মেনে সিনেমাটি আমদানিতে আরও সময় লাগবে।
অন্যদিকে বাংলাদেশের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির অনেকেই পূর্বের ন্যায় হিন্দি সিনেমা প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শনের বিরোধিতা করেছেন। এদের সাথে সুর মিলিয়েই ডিপজল হিন্দি সিনেমা প্রদর্শনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। যদিও সোশ্যাল মিডিয়ায় বহু নেটিজেন অশ্লীল ও বিতর্কিত বাংলা সিনেমায় অভিনয় করার ইতিহাস স্মরণ করিয়ে দিয়ে ডিপজলের পাল্টা সমালোচনা করেছেন।
বর্তমানে ডিপজলের অভিনীত পাঁচটি সিনেমা মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে। 'পাঠান' সিনেমার মুক্তির বিষয়ে গণমাধ্যমে কথা বলতে যেয়ে ডিপজল বলেন, "বাংলাদেশের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি মানসম্মত সিনেমা তৈরির চেষ্টা করে সর্বস্তরের দর্শকদের চাহিদা পূরণের চেষ্টা করে যাচ্ছে। এমতবস্থায় যদি দেশে হিন্দি সিনেমা আমদানি করা হয়, তবে দেশীয় সিনেমা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে।"
ডিপজলের দাবি, বর্তমানে দেশীয় সিনেমার প্রতি দর্শকদের মাঝে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি সৃষ্টি হচ্ছে। এটি দেশের সিনেমা হল বৃদ্ধিতেও সহায়ক হিসেবে কাজ করছে। বাংলদেশের দর্শকরা পরিবারের সাথে দেশীয় সংস্কৃতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ সিনেমা দেখতে চান।
ডিপজল মনে করেন যে, আদর্শগত দিক থেকে বাংলাদেশের সিনেমার সাথে হিন্দি সিনেমার তফাৎ রয়েছে। ঢালিউডের এ খলনায়ক বলেন, "হিন্দি সিনেমায় বহু অশ্লীল গান ও দৃশ্য থাকে। বাংলাদেশের সংস্কৃতির সাথে তাই হিন্দি সিনেমা যায় না।" একইসাথে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি পারিবারিক ঘরানার সিনেমা তৈরি করে বিনোদনের মাধ্যমে দর্শকদের নৈতিকতার শিক্ষা দেয় বলেও দাবি করেন তিনি।
২০১৫ সালে সাময়িকভাবে হিন্দি সিনেমা প্রদর্শনের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। এরপর বাংলাদেশে প্রথম হিন্দি সিনেমা হিসেবে সালমান খানের 'ওয়ান্টেড' মুক্তি পেয়েছিল। তবে তখন শাকিব খানের নেতৃত্বে হিন্দি সিনেমা প্রদর্শনের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন শুরু হয়।
এক পর্যায়ে দেশের বিনোদন জগতের একটা বিশাল অংশের বাঁধার মুখে হিন্দি সিনেমার ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনরায় বহাল করা হয়। যদিও বর্তমানে হিন্দি সিনেমার পাইরেটেড কপি খুব সহজেই বাংলাদেশে পাওয়া যাচ্ছে এবং দেশের দর্শকেরা বলিউডের প্রায় সকল জনপ্রিয় সিনেমা দেখছেন।