বলিউডের খ্যাতি ছেড়ে আমিরের ভাই দিয়েছেন পনিরের ফার্ম; নিজের হিট ছবিকে বলেন ‘ননসেন্স’
সিনেমা নির্মাতা মনসুর খান সম্পর্কে আমির খানের কাজিন। পরিচালক হিসেবে ক্যারিয়ারে বড় বড় তারকাদের সাথে কাজ করেছেন। তবে একপর্যায়ে তিনি সিনেমা জগতকে পুরোপুরি বিদায় জানিয়েছেন।
মনসুর খান 'কিয়ামাত সে কিয়ামাত তক', 'জো জিতা ওহি সিকান্দার'-এর মতো দর্শকপ্রিয় সিনেমা তৈরি করেছেন। দুটিতেই অভিনেতা হিসেবে ছিলেন আমির খান। কিন্তু বর্তমানে সবকিছুকে বিদায় জানিয়ে মনসুর থিতু হয়েছেন দক্ষিণের রাজ্য তামিলনাড়ুর কুনুর শহরে। সেখানে দিয়েছেন পনিরের খামার।
এক সাক্ষাৎকারে মনসুর খান নিজের সিনেমা নিজেই 'ননসেন্স' হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। বরং তাকে যেসব বিষয় অনুপ্রাণিত করে সেসব নিয়ে কথা বলতে তিনি স্বাচ্ছন্দ্যের কথা জানিয়েছেন। এখন নিজেকে কখনো সিনেমাপ্রেমী কিংবা সিনেমা নির্মাতা হিসেবে মনে করেননা তিনি।
মনসুর খান বলেন, "বেশিরভাগ মানুষ আমাকে বুঝতে না পেরে একজন সফল চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসাবে জানে। তাই আমি সমস্ত খ্যাতি ও অর্থ পেছনে ফেলে চলে এসেছি। তবে প্রকৃতপক্ষে ১৯৭৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে থাকাকালীনই আমি জানতাম যে, আমি মুম্বাইতে থাকতে চাই না।"
মনসুর আরও বলেন, "বিষয়টি এমন না যে আমার হঠাৎ উপলব্ধি হয়েছে। বরং এটা ছিল পূর্বপরিকল্পনা। এক্ষেত্রে একমাত্র সিদ্ধান্ত ছিল, কখন আমি সবকিছু ছেড়ে চলে যেতে পারবো। আমি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি। কারণ অনেক যুবক আমার খামারে এসে অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করে, আমি মেডিকেল সুবিধা ছাড়াই এমন জায়গায় কীভাবে থাকছি। আমি তাদের বলি যে, এজন্য তাদের কন্নড় আসবে হবে না। আমি শুধু শহরে থাকতে চাইনি। এটি একটি স্বর্গ। তবে একটি খোলা মাঠও আমার জন্য যথেষ্ট।"
মনসুর জানান, বলিউড ইন্ডাস্ট্রি ছেড়ে আসা তার কাছে বড় কোনো সিদ্ধান্ত মনে হয়নি। কেননা তিনি আর সিনেমা নির্মাণ করতে চাননি। কিন্তু তার স্ত্রী টিনার জন্য বিষয়টি একটু চ্যালেঞ্জের ছিল। কেননা তিনি নিজেকে মুম্বাইয়ে সবেমাত্র একজন বেকার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিল।
মনসুর বলেন, "আমি অনেক ভালোভাবে বোঝানোর সক্ষমতা রাখি। আমিরের প্রথম স্ত্রী রিনার সাথে টিনার মুম্বাইয়ে কেকের ব্যবসা ছিল।"
মনসুরের ভারত থেকে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্তে টিনা বলেন, "তুমি আমাকে মুম্বাই থেকে নিয়ে যাচ্ছ। অথচ এখানে আমি নিজের পেশা ঠিক করেছি। ঐখানে (কনর) গিয়ে আমি কী করবো?"
জবাবে মনসুর বলেন, "দেখ, তুমি খুব ভালো কেক তৈরি কর। কিন্তু সকলেই তো কেক বানায়। তাই তোমাকে আলাদা কিছু বানাতে হবে।"
পরবর্তীতে মনসুর-টিনা দম্পতি পনির চাষের উদ্যোগ নেন। এটি তার স্ত্রীও মন থেকে উপভোগ করেন। তবে টিনা এটি করতে না চাইলে তিনি জোর করতেন না বলেও জানান মনসুর।
মনসুর বলেন, "আমি আমার সিনেমা নিয়ে কথা বলতে চাই। এটা কি কোন পরিবর্তন এনেছে? আমি এমন সিনেমা বানিয়েছি যা দেখে হয়তো মানুষ হেসেছে কিংবা কেঁদেছে। কিন্তু অন্যদিকে পাখি থেকে শুরু করে নদীগুলো মারা যাচ্ছে। সাহিত্য, শিল্প ও সিনেমাকে এমন গুরুত্ব দেওয়াটা একটা শাসনতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি।"
অনুবাদ: মোঃ রাফিজ খান