বিচিত্র জীবন ছিল ভদ্রলোকের!
ট্রেনে চড়ে ঘুরতে যাচ্ছেন, গোটা ট্রেন ডিরেইল্ড হয়ে সোজা নদীতে। একমাত্র তাঁর কোচ ছাড়া। ভদ্রলোক নিজের জীবন বাজি রেখে উদ্ধার করলেন অনেককে। তারপরেই খেয়াল করলেন, আরেহ, নতুন যে উপন্যাসের পাণ্ডুলিপিটা লিখে নিজের কামরায় ফেলে এসেছেন সেটা নিয়ে আসতে হবে তো!
সেই কামরাও জলে ডুবুডুবু। তিপ্পান্ন বছরের প্রৌঢ় সাহিত্যিক আবার জান হাতে নিয়ে কামরায় ঢুকে সেই পাণ্ডুলিপি উদ্ধার করে আনলেন। সবাই তাঁকে ঘিরে ধরল আনন্দে। ধন্য ধন্য করতে লাগল। তিনি একটাই অনুরোধ করলেন "এই কথা আর কাউকে জানাবেন না প্লিজ। চাপে পড়ে যাব।"
আসলে হয়েছিল কী, তাঁর সঙ্গে সেই ট্রেন যাত্রায় স্ত্রী না, সঙ্গী ছিলেন তাঁর রক্ষিতা। আর একবার বৌ জানতে পারলে... বহুদিন এই খবর চাপা থেকে থেকে শেষে জানাজানি হয়ে গেল।
১৮৪৯ সালের ঘটনা। আইল অব ওয়াইটের ছোট্ট শহর বনচার্চে ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের জন্য এক চ্যারিটি অনুষ্ঠান হচ্ছে। একেবারে শেষের চমক 'ম্যাজিক'। সারা গায়ে হাতে পায়ে কালো কুচকুচে রঙ মেখে, মাথায় ঝলমলে পাগড়ি আর চকচকে জোব্বা পরে মঞ্চে এলেন জাদুকর রিয়া রামা-রুজ।
তিনি নাকি বহুকাল হিমালয়ে থেকে জাদুবিদ্যা শিক্ষা করেছেন, যদিও তাঁর দেখানো জাদুর সব কটাই ছিল একশো শতাংশ পশ্চিমি। নিজের অজান্তেই এই জাদুকর ভদ্রলোক এক 'কাল্ট' তৈরি করলেন।
ভারতীয় জাদুও যে মঞ্চে ভারতীয় সেজে দেখানো যায়, তা প্রথম হাতেকলমে দেখালেন তিনি। পরের সব জাদুকর, ফকির অব আভা, কালনাগ মায় পি সি সরকার— সবাই জেনে না জেনে তাঁর পথেই চলেছেন। ওই ভদ্রলোক কিন্তু জীবনে সেই একটি বারই মঞ্চে ম্যাজিক দেখান।
ডিকেন্স শব্দটা আগে ইংরাজি ভাষায় ছিল না। The Merry Wives of Windsor নাটকে শেক্ষপীর সাহেব প্রথম "What the devil?" অর্থে "What the dickens?" ব্যবহার করেন। সোজা কথা এই পদবীর মানে শয়তান।
শয়তানই বটে, তা না হলে জীবনের শেষ উপন্যাস The Mystery of Edwin Drood, এ যেখানে রোজা বাডকে ভালবেসে এডউইন আচমকা একদিন নিরুদ্দেশ হয়ে গেলেন, ঠিক সেইখানে আপামর পাঠককে একেবারে ক্লিফহ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে তিনি চিরনিদ্রায় চলে যেতে পারলেন কী করে!
শুভ জন্মদিন চার্লস ডিকেন্স...
[২১১ বছর আগে আজকের এই দিনে জন্মগ্রহণ করেন ইংরেজ লেখক ও সমালোচক চার্লস জন হাফাম ডিকেন্স (১৮১২- ১৮৭০)। অনেকেই তাকে ভিক্টোরিয়ান যুগের শ্রেষ্ঠ ঔপন্যাসিক হিসেবে বিবেচনা করেন]