বাংলাদেশে ৬০ শতাংশ নারী কি আদতেই 'নিষ্ক্রিয়'? নাকি তাদের কাজ অমূল্যায়িত?
বাংলাদেশে তরুণদের মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশই আছেন নিষ্ক্রিয় অবস্থায়। তরুণদের চাইতে তিনগুণ বেশি 'নিষ্ক্রিয়' মেয়েরা। উচ্চশিক্ষাতেও ছেলেদের চেয়ে পিছিয়ে আছে নারী শিক্ষার্থীরা। এরকম একটা সময়ে এসে এই তথ্যগুলো জাতির জন্য খুবই হতাশাজনক নিঃসন্দেহে। এই নিষ্ক্রিয় ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা, কর্মসংস্থান কিংবা কোনো ধরনের প্রশিক্ষণেই জড়িত নেই। তারা এক ধরনের অলস সময় কাটাচ্ছেন।
বাংলাদেশের ছেলেদের চেয়ে এই নিষ্ক্রিয়তার হার তিনগুণেরও বেশি মেয়েদের ক্ষেত্রে। ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী মেয়েদের নিষ্ক্রিয়তার হার শতকরা ৬০ দশমিক ৮৫ শতাংশ। এর বিপরীতে, ছেলেদের এই হার ১৮ দশমিক ৩৫ শতাংশ ছেলে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস, ২০২৩ জরিপে উঠে এসেছে এসব তথ্য।
ছেলেরা নিষ্ক্রিয় কেন, সেই আলোচনায় পরে যাচ্ছি; কিন্তু মেয়েদের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে কিছু কথা না বলে পারছি না। যদিও আমি অর্থনীতিবিদ বা গবেষক নই, কিন্তু আমার পারিপার্শ্বিক অবস্থা যা তুলে ধরছে, তাতে মনে হয়েছে একজন মেয়ে পড়াশোনা, কর্মসংস্থান কিংবা কোনো ধরনের প্রশিক্ষণের সুযোগ পাচ্ছেন না বলেই যে, সে নিষ্ক্রিয় বা অলস সময় কাটাচ্ছেন– তা কিন্তু ঠিক নয়। প্রথমত, এখানে পরিসংখ্যান দৃষ্টিভঙ্গীর একটা ভূমিকা আছে এবং তা ত্রুটিপূর্ণ। আর দ্বিতীয়ত, নারীকে অমূল্যায়িত কাজ ও অনানুষ্ঠানিক কাজে এ সমাজ ঢুকতে বাধ্য করে। নারী স্বেচ্ছায় এ পথে প্রবেশ করে না।
যে বয়সটার কথা পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে, সেই বয়স বা এর আগেই মেয়েদের ঠেলেঠুলে শ্বশুরবাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। গ্রামে বা শহরে স্বামীগৃহে গিয়ে নিষ্ক্রিয় থাকার কোনো সুযোগ কি তারা পান? বরং নিজেদের জীবন গড়ার স্বপ্ন জলাঞ্জলি দিয়ে স্বামী, সন্তান ও মুরব্বীদের ভালো রাখার জন্য সকাল থেকে রাত পর্যন্ত গৃহস্থালি কাজ করে যেতে হয়।
সেদিন একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে লক্ষ্য করলাম সবাই সবার পেশা দিয়ে নিজেদের পরিচয় দিচ্ছেন। অথচ যারা সরাসরি কোনো কর্মসংস্থানের সাথে জড়িত নন, গবেষণার ভাষায় যারা 'নিষ্ক্রিয়' তারা লজ্জা পাচ্ছিলেন নিজেদের পরিচয় দিতে। বলছিলেন, 'আমিতো গৃহিনী, তেমন কিছু করি না।' এরমানে ওনারা নিজেরাও জানেন না যে সকাল থেকে রাত অব্দি যা করেন, এর আর্থিক মূল্য কী হতে পারে। অথবা তার মগজে এরকম একটা ধারণা গেঁথে দেয় সমাজ।
মা গৃহে আছেন বলেই সংসারের চাকা ঠিকমতো ঘুরছে; স্বামী, সন্তান ও বয়স্ক মানুষ যথাসময়ে যথাযথ সুবিধাটি পাচ্ছেন। একজন গৃহিনী রান্না-কাটা-বাছা, কাপড় ধোয়া, ঘর পরিস্কার রাখা, সংসারে বয়স্ক মানুষের দেখাশোনা করা, বাচ্চা পড়ানো, টিফিন তৈরি, সন্তানকে স্কুলে আনা নেওয়ার কাজ, বাজার করা, গৃহকর্মীকে চালনা করাসহ আরও সব সাংসারিক দায়িত্ব পালন করেন। তিনি প্রশিক্ষণ ও আয়মূলক কাজ করেন না ঠিকই, কিন্তু সংসারে ব্যয় হ্রাসে একটা বড় ভূমিকা রাখেন। তাহলে একজন গৃহিনী 'নিষ্ক্রিয়' বা কাজ করেন না, এ কথা কি ধোপে টেকে?
অর্থনীতিবিদরা দেখিয়েছেন, ৪৩ শতাংশের বেশি নারী পুরোপুরিভাবে গৃহস্থালি কাজের সাথে যুক্ত। পুরুষের সংখ্যা সেখানে ১ শতাংশেরও কম। নারীর এই কাজকে জিডিপিতে যোগ করা হয় না বলেই নারীর কাজ অমূল্যায়িত ও হিসাবের বাইরে থেকে যাচ্ছে। তবে নারীর এই গৃহস্থালি কাজকে জাতীয় আয় পরিমাপের পদ্ধতিতে (এসএনএ) যোগ করা গেলে জিডিপিতে নারীর অবদান দাঁড়াবে ৪৮ শতাংশ। নারীর এই অস্বীকৃত গৃহস্থালির কাজকে মূল্যায়ন করলে কোনোভাবেই নারীকে 'নিষ্ক্রিয়' বলা যাবেনা।
গ্রামীণ নারীর কাজের দিকে দৃষ্টি ফেরালে দেখবো যে সংসারের কাজ করার পাশাপাশি আবাদ পরবর্তী কাজ, গবাদিপশুর দেখাশোনা, দুধ আহরণ, ছাগলের চাষ, বাড়ির ভেতরের সবজী বাগান এবং বীজ সংরক্ষণের মতো জরুরি কাজগুলো নারীরাই করেন। আরও আছে জমি তৈরি, চারা রোপণ, সার দেওয়া, পোকা নাশকের ব্যবহার, বীজ তৈরি, চাষাবাদ, শস্য জমি থেকে বাড়িতে নেওয়া, ফসল ভাঙানো, বাছাই ও প্যাকেটজাত করা। নারীকে কাজগুলো করতে হয় মূলত 'পারিবারিক শ্রমিক' হিসেবে। ফলে এই কাজে নারীর যে শ্রম ও সময় ব্যয় হলো, তা অবমূল্যায়িতই থেকে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এবং জেন্ডার বিশেষজ্ঞ ড. ইসমত আরা বেগম বলেছেন যে দেশে মোট ৫ কোটি ৬৭ লাখ কর্মজীবী মানুষের মধ্যে শতকরা ৪৭.৬ জন কৃষিকাজের সাথে জড়িত। আবার এদের মধ্যে শতকরা ৬৪.৮ জন নারী। অথচ অধিকাংশ ক্ষেত্রে নারীরা জমি থেকে আয় ও জমির মালিক নন।
২০২২ সালে পাঁচটি বেসরকারি সংস্থার সম্মিলিত ফোরাম 'ফরমাল রিকগনিশন অফ দ্যা উম্যান'স আনকাউন্টেড ওয়ার্ক' এর উদ্যোগে একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশে কাজে নিযুক্ত মানুষের মধ্যে শতকরা ৯১.৩ জন অনানুষ্ঠানিক খাতে কাজ করেন এবং এদের শতকরা ৯৬.৭ জন নারী।
নারীর অস্বীকৃত কাজের হিসাব করতে গিয়ে পরিসংখ্যানবিদকে প্রত্যক্ষভাবে জানতে হবে যে ধান উৎপাদন, গবাদিপশু পালন, হাস-মুরগি পালন এবং মাছ চাষে নারীর কাজ কতটা? গ্রামীণ নারী তাদের কাজের কতটা উৎপাদনশীল কাজে এবং কতটা অনুৎপাদনশীল কাজে ব্যয় করেন? বিবিএস পরিসংখ্যানে নারীর গৃহস্থালি ও কৃষিকাজকে কি ঠিকমতো তুলে ধরা হয়েছে? যেহেতু আর্থিক মূল্য ছাড়া কোনো কাজই বাজার অর্থনীতির অর্ন্তভুক্ত হয়না, তাই নারীর অবৈতনিক ও অমূল্যায়িত গৃহস্থালি, সেবামূলক এবং কৃষিকাজকে মূল্যায়ন করে, জাতীয় জিডিপিতে তা অন্তর্ভুক্ত করা হয়না এবং নারীকে 'নিস্ক্রিয়' দেখানো হচ্ছে।
এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি, নারী 'নিষ্ক্রিয়' তকমাটা ঘোচানোর জন্য নারীর অ-অর্থনৈতিক কাজকে শ্রমবাজার অর্থনীতির আলোকে বিশ্লেষণ করতে হবে। নারীর অর্থনৈতিক কাজকে উৎসাহিত করা এবং এটাই বৈশ্বিক এজেন্ডা। অর্থনৈতিক দৃষ্টিতে সেবাকাজ মূল্যায়নের ভাল উদাহরণ হচ্ছে— নেপাল, মেক্সিকো, ব্রাজিল, কেনিয়া, নরওয়ে ও ফিনল্যান্ড।
অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, কোনো দেশ যদি অধিকতর বাস্তবসম্মত শ্রম এবং কর্মসংস্থান নীতি গ্রহণ করতে চায়, তাহলে অবশ্যই তাকে নারীর সব ধরনের কাজকে হিসাবের মধ্যে আনতে হবে, শুধু আনুষ্ঠানিক কাজকে নয়।
নারীর অস্বীকৃত কাজকে তুলে ধরার জন্য, তাদের কাজের শ্রমঘণ্টা বা টাইম ইউজ সার্ভের মাধ্যমে নিয়মিতভাবে তথ্য উপস্থাপনের ব্যবস্থা সরকারকে নিতে হবে। তাদের এই কাজগুলো উৎপাদনের জাতীয় হিসাবের বাইরে থাকে অথবা জাতীয় আয় পরিমাপের পদ্ধতির (এসএনএ) বাইরে থাকে। অবকাঠামোতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে, যেন গৃহস্থালি কাজে এবং সেবামূলক কাজে নারীর দায়িত্ব সহজ করা যায়। মোট কথা, অমূল্যায়িত সেবা কাজকে জেন্ডার রেসপনসিভ বাজেটিং এর সাথে একীভূত করতে হবে।
মেয়েদের ক্ষেত্রে বাল্যবিয়ে, অসময়ে গর্ভধারণ, প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ে অজ্ঞনতা, নিরাপত্তাহীনতা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ঝরে পড়ার দায় পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের। মূলত এইসব কারণেই মেয়েরা আনুষ্ঠানিক কর্মসংস্থান থেকে দূরে সরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। এদের বড় একটি অংশ জব মার্কেটে আসতে পারছেন না। তারাও যুক্ত হচ্ছেন এই 'নিষ্ক্রিয়' ক্যাটাগরিতে। বিবিএস তথ্য অনুযায়ী, দেশে ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী মানুষের সংখ্যা ৩ কোটি ১৫ লাখ— যার মধ্যে প্রায় ১ কোটি ২৮ লাখই কর্মসংস্থান, শিক্ষা বা প্রশিক্ষণের বাইরে রয়েছে। যেটিকে অর্থনীতির ভাষায় বলা হয় এনইইটি।
জরিপে এনইইটি জনগোষ্ঠী বলতে বোঝানো হয়েছে, যারা এই জরিপ অনুষ্ঠিত হওয়ার আগের ৭ দিনের মধ্যে এক ঘণ্টার জন্যেও কোনো কর্মে ছিলেন না, পড়াশোনায় ছিলেন না এবং জরিপের আগের ১২ মাসের মধ্যে কোনো বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণও পাননি। এই সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ১৯ শতাংশের বেশি। বিবিএস-এর এই জরিপ অনুযায়ী এদের বড় অংশের বসবাস গ্রামে।
ছেলেরা কেন নিষ্ক্রিয় হয়ে আছে, এর অন্যতম কারণ হচ্ছে সুযোগের অভাব। সরকার প্রয়োজন অনুযায়ী জনবল তৈরির স্কিম গ্রহণ করতে পারছে না। বেসরকারি পর্যায়েও সুযোগ খুবই সীমিত। সাধারণ চাকরির বাজার ছোট হয়ে আসছে এবং চাকরির বাজারে প্রতিযোগিতা বাড়ছে দ্রুতগতিতে। অন্যদিকে, কারিগরি শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে না বলে বাড়ছে উচ্চশিক্ষিত বেকারের সংখ্যা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন দক্ষতার অভাব, শিক্ষার মানের ঘাটতি, ভাষাগত দুর্বলতা ও মূল্যস্ফীতির কারণেই তরুণদের মধ্যে নিষ্ক্রিয়তা বাড়ছে। দারিদ্রের কারণে পড়াশোনা বা অন্য কোনো দক্ষতা বৃদ্ধিমূলক কাজে তরুণ-তরুণীরা অন্তর্ভুক্ত হতে পারছে না।
এছাড়া মাদক, অপরাধ প্রবণতা, অবৈধ পথে অর্থ আয়, পর্নোগ্রাফির বিস্তার তরুণদের মধ্যে নিষ্ক্রিয়তা বাড়াচ্ছে। দেশের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শ্রমশক্তি কাজ না পেয়ে বসে থাকতে বাধ্য হচ্ছে বলেই তাদের মধ্যে বাড়ছে হতাশা, মানসিক অস্থিরতা ও উচ্ছৃঙ্খলা। অথচ শিক্ষা ও কর্মসংস্থান তরুণ-তরুণীর অধিকার।
অন্যদিকে, শ্রমখাতে পুরুষের তুলনায় নারীর অংশগ্রহণ এখনো অনেক কম। শহরে অসমতার হার আরও বেড়েছে। কর্মদক্ষ নারীদের শ্রমশক্তিতে যতোটা থাকার কথা, ততটা নেই। শহরের অনেক নারী সামাজিক ও পারিবারিক কারণে শ্রমবাজার থেকে ঝরে পড়ছেন। অন্যদিকে, গ্রামে কৃষিতে নারীর অংশগ্রহণ বাড়লেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কাজের মজুরি থাকে না।
নারী শিক্ষায় বিনিয়োগ বাড়ানোর অন্যতম লক্ষ্যই ছিল নারীর দক্ষতা বাড়ানো ও কর্মশক্তিতে নিয়োগ। গত সাত বছরে কর্মক্ষেত্রে যে বয়সসীমার নারীদের কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের কথা ছিল, সে অনুযায়ী সংখ্যা বাড়েনি। তাদের দক্ষতা নির্মাণে সরকারি ও সামাজিক যে ব্যয় হয়েছে, তার প্রতিফলন অর্থনীতিতে পাওয়া যাচ্ছে না। প্রাতিষ্ঠানিক শ্রমে যুক্ত করে নারীর জন্য কর্মসহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করা প্রয়োজন। নিষ্ক্রিয়তা কমাতে তরুণ-তরুণীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে কারিগরি, কম্পিউটার, শিল্প ও সেবা খাতে।
স্বীকার করতে হবে, পরীক্ষায় এগিয়ে থাকা মেয়েরা কর্মজীবনে প্রবেশের সুযোগ পাচ্ছেন না ও খুব ভালো করছেন না। অনেকে চার দেয়ালের মধ্যে বন্দী থাকছেন বা থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। সরকারি হিসাবে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ছেলে শিক্ষার্থীর চেয়ে মেয়ে শিক্ষার্থী বেশি। এরপরের ধাপ থেকেই মেয়েদের সংখ্যা কমতে থাকে। কিন্তু কেন এই ধারা? কারণ মেয়েদের ক্ষেত্রে পারিবারিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় বাঁধা বড় হয়ে দাঁড়ায়। আমাদের সমাজে মেয়েদের চলার পথে এত বাঁধা যে, শিক্ষার হার বাড়লেও কর্মক্ষেত্রে তারা পিছিয়ে আছে। মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিক স্তরে যেসব ছেলে বা মেয়ে ভালো ফল করে, তাদের সবার পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া সম্ভব না-ও হতে পারে। ছেলেদের না পারার পেছনে ইচ্ছা ও আর্থিক অসচ্ছলতা মূল কারণ।
এসএসসি ও এইচএসসিতে মেয়েদের এগিয়ে থাকার খবরটি যেমন আমাদের আনন্দিত করে, তেমনি পরবর্তী সময়ে কর্মজীবনে তাদের বেশির ভাগের অনুপস্থিতি খুব কষ্ট দেয়। নারীকে 'পারিবারিক শ্রমিক' হিসেবে দেখতেই পছন্দ করেন অনেক পুরুষ। তারা মনে করেন নারীর আর বাইরের কাজ করা ও প্রশিক্ষণের প্রয়োজন নেই। কেউ কেউ মনে করেন, স্বামী বা বাবার টাকা পয়সার কোনো অভাব নেই, তাহলে মেয়েদের কেন চাকরি করতে হবে? হয়তো এ কারণেই অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে থেকেও ঢাকা এবং চট্টগ্রাম বিভাগের নারীরা শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণের সুযোগ থেকে সবচেয়ে বেশি বঞ্চিত রয়েছেন। বিবিএসের জরিপ অনুযায়ী, নারীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি এনইইটি জনগোষ্ঠী রয়েছে ঢাকায়, ৩০.০৩ শতাংশ। এরপরে রয়েছে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে, এখানে এই হার ২৮.১০ শতাংশ।
অর্থনীতিবিদ বিনায়ক সেন বলেছেন, "১৫ থেকে ২৪ বছর হলো প্রাইম এইজ। এই বয়সের ৪০ শতাংশ তরুণ-তরুণী কিছু করছে না, এটা বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়।"
তিনি প্রশ্ন রাখেন, এই বয়সে যদি তারা পড়াশুনা বা কর্মসংস্থানে না থাকে তাহলে তারা করছে কী? পরিসংখ্যানে এর উত্তর খোঁজার জন্যই আমাদের হিসাব-নিকাশ এর ধরন বদলাতে হবে।
- লেখক: যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও কলামিস্ট
(বিশেষ দ্রষ্টব্য: নিবন্ধের বিশ্লেষণটি লেখকের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি ও পর্যবেক্ষণের প্রতিফল। অবধারিতভাবে তা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের অবস্থান বা সম্পাদকীয় নীতির প্রতিফলন নয়।)