ফুরাচ্ছে অবশিষ্ট জ্বালানি, দেওয়ালে পিঠ ঠেকায় এবার রাস্তায় নামলেন শ্রীলঙ্কার ডাক্তার-ব্যাংকার ও পেশাজীবীরা
হয় জ্বালানি সংকট দূর করো নয়তো পদত্যাগ করো- সরকারের কাছে এমনই দাবি নিয়ে আন্দোলন শুরু করেছে কয়েক দশকের তীব্র অর্থনৈতিক সংকটে বিপর্যস্ত দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার মানুষ।
বুধবার ডাক্তার, শিক্ষক ও ব্যাংকারদের মতো পেশাজীবীসহ শত শত শ্রীলঙ্কান ক্ষোভ প্রকাশ করে রাস্তায় নামেন।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ঘাটতি, খাদ্য ও ওষুধের সংকটের মতো মারাত্মক দুর্ভোগের মধ্যে শ্রীলঙ্কায় গত কয়েক মাস ধরেই চলছে বিক্ষোভ। এসব আন্দোলনে অন্তত ৯ জন নিহত ও ৩০০ জন আহত হওয়ার পর গতমাসে সরকার ব্যবস্থায় পরিবর্তন আসে। কিন্তু তারপরও শ্রীলঙ্কানদের ভোগান্তি কমছে না।
শ্রীলঙ্কায় এই মুহূর্তে মাত্র এক সপ্তাহ চলার মতো পর্যাপ্ত জ্বালানি রয়েছে। অন্যদিকে জ্বালানির নতুন চালান আসতে এখনও দুই সপ্তাহ বাকি। এমন অবস্থায় সরকার গত মঙ্গলবার স্বাস্থ্যখাতের মতো জরুরি পরিষেবায় নিয়োজিত গাড়িগুলোর জন্য জ্বালানির ব্যবহার সীমিত রাখার ঘোষণা দেয়। এছাড়া বেসরকারি কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছে সরকার।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া চিকিত্সক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা বলছেন, "জরুরি সেবাদানে নিয়োজিত হওয়া সত্ত্বেও, তারা কাজে পৌঁছাতে পর্যাপ্ত জ্বালানি সুবিধা পাচ্ছেন না।"
শ্রীলঙ্কার বৃহত্তম নার্সিং ইউনিয়ন অল আইল্যান্ড নার্সেসের সেক্রেটারি এইচএম মেডিওয়াত্তা সাংবাদিকদের বলেন, "দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সরকারকে এর সমাধান দিতে হবে।"
ব্যাংকার, শিক্ষক ও উদ্যোক্তাদের একটি ইউনিয়ন গতকাল রাষ্ট্রপতির বাসভবনের উদ্দেশ্যে মিছিল নিয়ে যাওয়া শুরু করলে পুলিশ ব্যারিকেড বসিয়ে তাদের বাধা দেয়।
শিক্ষক ইউনিয়নের একজন মুখপাত্র বলেন, "সাধারণ মানুষের পক্ষে এসব বহন করা আর সম্ভব না। এই সরকার পদত্যাগ করুক এটাই চাই"।
এছাড়া গতকাল কলম্বোর সরকারি হাসপাতালের ১০০-র বেশি স্বাস্থ্যকর্মী পর্যাপ্ত জ্বালানি ও ওষুধের দাবি জানাতে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। পুলিশের বাধার মুখে পড়ে তারাও।
আজ বৃহস্পতিবারও জনস্বাস্থ্য পরিদর্শক ও অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা কর্মীরা বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে।
এদিকে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানানো হয়, সরকারের আমদানিকৃত পেট্রলের একটি চালান আগামী ২২ জুলাই দেশে এসে পৌঁছাবে। অন্যদিকে ভারতীয় তেল কর্পোরেশনের একটি ইউনিট লঙ্কা আইওসি ১৩ জুলাই পেট্রোল ও ডিজেলের আরেকটি চালান পাওয়ার আশা করছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, "সরকার দ্রুততম সময়ে পর্যাপ্ত জ্বালানি চালান পাওয়ার চেষ্টা করছে। তবে সেগুলো যতক্ষণ পর্যন্ত নিশ্চিত না হয়, বিস্তারিত প্রকাশ করা হবে না।"
- সূত্র: সিএনএন