১৬ বিলিয়ন রুপি পাচারের মামলায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ ও তার ছেলে হামজাকে তলব আদালতের
১৬ বিলিয়ন রুপির পাচারের মামলায় অভিযোগ গঠনের জন্য পাকিস্তানের একটি বিশেষ আদালত প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও তার ছেলে হামজা শরিফকে তলব করেছেন। আগামী ৭ সেপ্টেম্বর হাজিরা দিতে বলা হয়েছে তাদের।
৭০ বছর বয়সী শাহবাজ এবং তার দুই ছেলে হামজা (৪৭) ও সুলেমানের (৪০) বিরুদ্ধে ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এফআইএ) ২০২০ সালের নভেম্বরে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন এবং অ্যান্টি মানি লন্ডারিং আইনের বিভিন্ন ধারায় মামলা করেছিল।
লাহোরের একটি বিশেষ আদালত মামলাটির শুনানি হচ্ছে। এ আদালত ইতিমধ্যে বাবা-ছেলেকে গ্রেপ্তারপূর্ব জামিন দিয়েছেন।
শাহবাজ ও হামজা দুজনই শুনানির সময় অনুপস্থিত ছিলেন। শুনানিতে তাদের আইনজীবীরা দুজনের পক্ষে এককালীন অব্যাহতির আবেদন করেন।
শাহবাজের আইনজীবী আমজাদ পারভেজ আদালতকে জানান, প্রধানমন্ত্রী অসুস্থ থাকায় তাকে ভ্রমণ না করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। হামজার আইনজীবী রাও আওরঙ্গজেব বলেন, তার মক্কেলের প্রচণ্ড পিঠ ব্যথা ছিল এবং তার বিশ্রামের প্রয়োজন।
আদালত দুজনের অব্যাহতি মঞ্জুর করেন। এফআইএ প্রসিকিউটর ফারুক বাজওয়া এতে আপত্তি করেননি।
প্রসিকিউটর আদালতকে জানান, তারা প্রধানমন্ত্রী শাহবাজের দ্বিতীয় ছেলে সুলেমান শাহবাজের ১৯টি ব্যাংক হিসাবের রেকর্ড পেয়েছেন এবং আরও সাতটি হিসাবের রেকর্ড পায়নি।
এ মামলার আরেক কেন্দ্রীয় চরিত্র মালিক মাকসুদের—যাকে মাকসুদ 'চাপরাসি' নামেও ডাকা হয়—ডেথ সার্টিফিকেট জমা দেয় এফআইএ।
এরপর আদালত মৃতের বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম বন্ধ করে দেন।
এরপর আদালত অভিযোগ গঠনের জন্য শাহবাজ ও হামজাকে ৭ সেপ্টেম্বর তলব করেন এবং ওই তারিখ পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন।
অন্যদিকে সুলেমান শাহবাজ যুক্তরাজ্যে আছেন। তাকে পলাতক ঘোষণা করা হয়েছে।
চিনি কেলেঙ্কারির মামলায় ১৬ বিলিয়ন রুপি পাচারে জড়িত থাকার অভিযোগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে শাহবাজ ও হামজার বিরুদ্ধে একটি বিশেষ আদালতে চালান জমা দিয়েছিল এফআইএ।
আদালতে জমা দেওয়া এফআইএ প্রতিবেদন অনুসারে, তদন্ত দল শাহবাজ পরিবারের ২৮টি বেনামি অ্যাকাউন্ট শনাক্ত করেছে যার মাধ্যমে ২০০৮ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে ১৬ দশমিক ৩ বিলিয়ন রুপি পাচার করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই অর্থ 'গোপন অ্যাকাউন্টে' রাখা হয়েছে এবং এর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ শাহবাজকে দেয়া হয়েছে।
এই ১৬ বিলিয়ন রুপি সঙ্গে শাহবাজ পরিবারের চিনির ব্যবসা থেকে আসেনি বলে দাবি করা হয় ওই প্রতিবেদনে।
স্বল্প বেতনের কর্মচারীদের অ্যাকাউন্ট থেকে প্রাপ্ত অর্থ হুন্ডি/হাওয়ালা নেটওয়ার্কের মাধ্যমে পাকিস্তানের বাইরে পাচার করে শাহবাজ পরিবারের সদস্যদের ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ করে এফআইএ।
- সূত্র: ডন