পাকিস্তানে টেক্সটাইল শিল্পে ৭০ লাখ মানুষ কাজ হারিয়েছেন, দাবি অ্যাসোসিয়েশনের
রপ্তানি কমে যাওয়া ও অর্থনৈতিক সংকট কাটাতে সরকারের ব্যর্থতায় পাকিস্তানের টেক্সটাইল ও টেক্সটাইল-সংশ্লিষ্ট শিল্পে প্রায় ৭০ লাখ কর্মী ছাঁটাই হয়েছেন। গত সোমবার এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন দেশটির ভ্যালু-অ্যাডেড টেক্সটাইল অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা। খবর ডনের।
ডনের খবরে বলা হয়, সংগঠনটির প্রতিনিধিরা দাবি করেন, টেক্সটাইল উৎপাদনকারী ও রপ্তানিকারকদের নানামুখী সংকট নিরসনে বর্তমান সরকারের কোনো নীতি নেই।
তারা বলেন, ইতিমধ্যে অনেক ইউনিট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শিল্পটি বন্ধের পথে। আরও অনেকে উৎপাদন বন্ধ বা বিদেশে চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে।
পাকিস্তানের টেক্সটাইল কারখানাগুলো প্রয়োজনীয় কাঁচামাল ও আনুষঙ্গিক পণ্য পাচ্ছে না। মাত্র ৫ হাজার ডলারের ঋণপত্রও (এলসি) খুলতে রাজি হচ্ছে না ব্যাংকগুলো। এতে টেক্সটাইল খাতের উৎপাদন বিলম্বিত হচ্ছে। ফলে ব্যয় বেড়ে গেছে অনেক।
ভ্যালু-অ্যাডেড টেক্সটাইল অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা বলেন, এই সংকটময় পরিস্থিতিতেও পাকিস্তান সরকার মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের জন্য বিএমডব্লিউ-এর মতো দামি বিলাসবহুল গাড়ি আমদানি করছে। বৈদেশিক মুদ্রা আয়ে এসব আমদানি কোনো অবদান রাখতে পারবে না, কোনো কর্মসংস্থানও তৈরি করতে পারবে না।
তাদের অভিযোগ, পাকিস্তানে ডলার উপার্জনকারী রপ্তানি খাতকে অগ্রাধিকার তালিকার নিচের দিকে রাখা হয়েছে।
তারা বলেন, গত নয় মাসে সরকারের পারফরম্যান্স খারাপ। এ সময় দুজন অর্থমন্ত্রী চলমান অর্থনৈতিক সংকট নিরসনে ব্যর্থ হয়েছেন।
রাজনৈতিক সংকট ও অর্থনৈতিক সংকটে জেরবার পাকিস্তান। তার মধ্যেই বৈশ্বিক সংকটের ফলে এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে দেশটির মূল্যস্ফীতি।
এসবের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জ্বালানি সংকট ও ভয়াবহ বন্যার ধাক্কা। গত বছর ভয়াবহ বন্যায় ১ হাজার ৭০০ মানুষের প্রাণহানি হয় দেশটিতে। বাস্তুচ্যুত হয় ৮০ লাখের বেশি মানুষ। বিভিন্ন অবকাঠামোরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
গত ৬ জানুয়ারি এক প্রতিবেদনে ডন জানায়, অর্থনৈতিক সংকটে পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে ৫.৬ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।
ফলে দেশটি বিদেশি ঋণ পরিশোধ, ওষুধ, খাদ্য, জ্বালানিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দায় শোধ করতে পারবে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে দেশটির ঋণখেলাপি হয়ে পড়ার আশঙ্কাও প্রবল হয়ে উঠছে।
এ পরিস্থিতিতে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের জন্য বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার কাছে সহায়তা চায় পাকিস্তান।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুসারে, চলমান বিপর্যয় কাটানোর জন্য পাকিস্তানের ১৬.৩ বিলিয়ন ডলার। তার বিপরীতে দেশটিকে ৯ বিলিয়ন ডলারের বেশি সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিভিন্ন দাতা সংস্থা।