আদানি গ্রুপের শেয়ারের বিপরীতে মার্জিন ঋণ দেওয়া বন্ধ করলো সিটিগ্রুপ
পুঁজিবাজারে সময়টা ভালো যাচ্ছে না ভারতের বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী আদানি গ্রুপের। আজ বৃহস্পতিবারের (১ ফেব্রুয়ারি) লেনদেনে গ্রুপের অধীন কোম্পানিগুলোর বাজারমূল্য কমেছে ১০০ বিলিয়ন ডলারের সুবিশাল অঙ্কে। শর্ট সেলার মার্কিন সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের প্রতিবেদনের পর বৈদেশিক ঋণ দাতারাও নিচ্ছে বিরুদ্ধ অবস্থান। খবর রয়টার্সের
এরমধ্যেই বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক বহুজাতিক বিনিয়োগ ব্যাংক সিটিগ্রুপের সম্পদ ব্যবস্থাপক ইউনিট আদানি গ্রুপের শেয়ারের বিপরীতে মার্জিন ঋণপ্রদান বন্ধ ঘোষণা করেছে।
সাধারণত ব্রোকারেজ সংস্থার কাছে থেকে, কোনো কোম্পানির শেয়ার কেনার সময় মার্জিন ঋণ পান বিনিয়োগকারীরা। ব্রোকারেজ সংস্থা, ওই বিনিয়োগকারীর নিজস্ব তহবিলের পাশাপাশি শেয়ার ক্রয়ে যে অনুপাতে বাড়তি অর্থ দেয় সেটাই মার্জিন লোন। এই অনুপাত ব্রোকারেজ সংস্থা নির্ধারণ করে থাকে। আদানির ক্ষেত্রে এটা পুরোপুরি দেওয়া বন্ধ করলো সিটিগ্রুপ।
বুধবার আদানি গ্রুপের মূল প্রতিষ্ঠান আদানি এন্টারপ্রাইজ প্রায় আড়াই বিলিয়ন ডলারের ফলো-অন পাবলিক অফার (এফপিও) বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়।
আদানি এন্টারপ্রাইজের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এফপিওতে বিনিয়োগকারীদের পুরো টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হবে। তারা আরো জানিয়েছে, আদানি এন্টারপ্রাইজের 'অবস্থা' ভালো আছে।
এফপিও হলো এমন এক প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে তালিকাভুক্ত একটি কোম্পানি বাজারে অতিরিক্ত শেয়ার ছেড়ে অর্থ তোলে। ।
আর্থিকখাতের গবেষণা সংস্থা ভ্যারিটিডেটার গবেষণা পরিচালক বেন সিলভারম্যান বলেন, 'এভাবে সেকেন্ডারি অফার বাতিল হওয়াটা ব্যতিক্রম ঘটনা। শেষ মুহূর্তে শেয়ার অফার তুলে নেওয়ার ঘটনায় বিনিয়োগকারীরা আরো আস্থা হারাবেন'।
এই প্রেক্ষাপটে সিটি গ্রুপের সম্পদ ব্যবস্থাপনা ইউনিট, আদানি সিকিউরিটিজের বিপক্ষে শেয়ারমূল্য বনাম ঋণমানের অনুপাত শূন্যে নামিয়ে এনেছে। অর্থাৎ, তারা মনে করছে, এই মুহূর্তে আদানির শেয়ার কেনায় ঋণ দিলে তার কোনো মুনাফা পাওয়া যাবে না।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স অভ্যন্তরীণ এক সূত্রের বরাতে একথা জানায়।
বিষয়টি 'স্পর্শকাতর' উল্লেখ করে সিটিগ্রুপের ওই কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, সাধারণত আমরা অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারমূল্য বনাম ঋণমান ৬৫ থেকে ৮০ শতাংশ নির্ধারণ করি। তবে আদানি গ্রুপের ক্ষেত্রে এই সীমা কতো সেটা নির্দিষ্ট করে বলতে চাননি তিনি।
তিনি বলেন, 'সাম্প্রতিক সময়ে আমরা আদানি সিকিউরিটিজের দামে নাটকীয় পতন লক্ষ করছি'। সিটি গ্রুপের অভ্যন্তরীণ এক মেমোর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'গ্রুপের আর্থিক স্বাস্থ্য নিয়ে নেতিবাচক খবর প্রকাশের পর থেকেই এ পতন শুরু হয়'।
মেমোতে সিটি ব্যাংক বলেছে, আদানি গ্রুপের সকল সিকিউরিটিজের বিপরীতে তারা ঋণমান উঠিয়ে নিচ্ছে, যা অবিলম্বে কার্যকর হবে।
রয়টার্স নথিটি হাতে পায়নি। তবে এ বিষয়ে তারা জানতে চাইলে, কোনো মন্তব্য করেনি সিটিগ্রুপ।